বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার মামলার শুনানি: আজও কারাগার ঘিরে নিরাপত্তা

September 12, 2018 | 10:06 am

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বিশেষ জজ আদালত-৫-এ বিচারাধীন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানিকে ঘিরে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই কারাগারেই দুর্নীতির আরেক মামলায় সাজা ভোগ করছেন এই মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

গত ৫ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় প্রথমবারের মতো কারাগারের অস্থায়ী আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এই মামলায়। ওই দিন আদালতে খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকলেও তার আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন না। সেদিন খালেদা জিয়ার বক্তব্য শোনার পর আদালত আজ বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) শুনানির নতুন দিন ঠিক করে দেন।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুনানিকে সামনে রেখে গোটা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরাতন এই কারাগারটির দুই দিকের সড়কেই যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে আশপাশের সব দোকান। এছাড়া যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য। সামনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও।

এর মধ্যে সকাল ১০টার দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া প্রবেশ করেন কেন্দ্রীয় কারাগারে। পরে সকাল পৌনে ১১টার দিকে সেখানে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ কর্মকর্তা রাজীব সারাবাংলাকে জানান, আদালতের কার্যক্রমকে কেন্দ্র করেই এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে যাওয়া প্রত্যেক পথচারীর শরীরই তল্লাশি করা হচ্ছে। এছাড়া কোনো রিকশাও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কারাগারে পাশের রাস্তায়।

এর আগে, গত বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো নাজিমউদ্দিন রোডের এই পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে বলেন, অসুস্থতার কারণে তিনি আর আদালতে হাজির হতে পারবেন না। আদালত তাকে যা খুশি সাজা দিতে পারেন। তার আইনজীবীরাও সেদিন উপস্থিত হননি আদালতে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, রাষ্ট্রপক্ষ কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে এই মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যাওয়ার আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়া এই মামলায় বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে শুনানির জন্য হাজির হতে পারছেন না  এ পরিস্থিতিতে বিচার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা আদালতকে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ সেপ্টেম্বর এই কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। যদিও এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ বকশী বাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে পরিচালিত হচ্ছে। মামলা চলাকালীন ওই এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে এই আদালত স্থানান্তর করা হচ্ছে। এখন থেকে এই মামলার বিচার কার্যক্রম পুরাতন কারাগারে ঘোষিত অস্থায়ী আদালতে চলবে।

যদিও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা দাবি করেন, তারা আদালত স্থানান্তরের কোনো নোটিশ পাননি। সে কারণে ৫ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে তারা কারাগারের আদালতে উপস্থিত হননি। পরে আদালত আজ ১২ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির জন্য নতুন দিন ঠিক করে দেন।

দুর্নীতির এই মামলায় মোট আসামি চার জন। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অন্য তিন আসামি হলেন— খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।

আরও পড়ুন-

কারাগারেই বসছে খালেদা জিয়ার বিচারের আদালত

বসছে আদালত, পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার ঘিরে কড়া নিরাপত্তা

সারাবাংলা/এজেডকে/এমএইচ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন