বিজ্ঞাপন

কিম-ট্রাম্প বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা

May 16, 2018 | 6:20 pm

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে উত্তর কোরিয়ার প্রধান নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে কেবল উত্তর কোরিয়ার ওপরই চাপ প্রয়োগ করা হলে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করবে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের অনিয়ন্ত্রিত বক্তব্য ও নাক গলানোর স্বভাবেরও সমালোচনা করা হয়েছে এই বিবৃতিতে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাইয়ে-জিওয়ান বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতয়ি নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ জানান। তিনি বলেন, ‘তার (জন বোল্টন) প্রতি আমাদের ঘৃণাবোধকে আমরা কিছুতেই চেপে রাখতে পারছি না।’

বিজ্ঞাপন

আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরে দুই দেশের প্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কোরিয়া উপদ্বীপকে সম্পূর্ণ রূপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে উৎসাহিত করা এই বৈঠকের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বলে গুঞ্জন চলে আসছিল।

এর মধ্যে, কয়েকদিন আগে পারমাণবিক পরীক্ষার অঞ্চল পাংগেরি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করা হবে— এমন ঘোষণা দেয় উত্তর কোরিয়া। ওই স্থান সফরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণও জানায় দেশটি। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় এখন তাদের আগের সেই ঘোষণা ও আমন্ত্রণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এক প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক বোমা ত্যাগ করার জন্য লিবিয়া মডেল’ অনুসরণের করার আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোলটন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটি পিয়ংইয়াংকে চিন্তিত করে তুলেছে। কারণ কয়েক বছর আগে তারা পশ্চিমার সহায়তায় বিদ্রোহীদের হাতে লিবিয়ার কর্নেল গাদ্দাফির অসহায় মৃত্যু দেখেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ধরনের বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন কােইয়ে-জিওয়ান। উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে তারা কখনো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার চিন্তা করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সহায়তা আমরা চাই না। ভবিষ্যতে আমরা এই ইস্যুতে কোন ছাড় দেবো না।’

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যদি তারা (যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন) সত্যি সত্যিই পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে আগ্রহী হয়, তাহলে তারা তেমন সাড়া পাবে। কিন্তু তারা যদি কেবল পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে চাপ দিয়ে আমাদেরকে কোণঠাসা করে দিতে চায়, তাহলে আমরা অনুষ্ঠেয় বৈঠক নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবব।’

১৯৫৩ সালের কোরিয়া যুদ্ধের ৬৫ বছর পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে বৈঠক করে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল ইতিহাস সৃষ্টি করেন কিম। সেখানে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে একমত হন তারা। এরপর দক্ষিণের সঙ্গে ঘড়ির কাঁটা আধা ঘণ্টা এগিয়ে নিয়ে আসে উত্তর কোরিয়া।

বিজ্ঞাপন

দুই কোরিয়ার মধ্যে হঠাৎ তৈরি হওয়া এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশকে কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির সম্ভাবনা বলে ধারণা করছিলেন বিশ্লেষকরা। এর মধ্যে আলোচনায় উঠে আসে ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জংয়ের বৈঠক। এসব ঘটনা সবসময় পারমাণবিক অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আসা উত্তর কোরিয়াকে ঠাণ্ডা রাখবে বলেও মনে করছিলেন তারা। তবে শেষ মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি ট্রাম্প-কিম বৈঠককে অনিশ্চয়তায় ফেলেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তা সার্বিকভাবে কোরিয়া অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্যই হুমকির সামিল।

সারাবাংলা/এমআইএস/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন