বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির পর নির্বাচন

September 10, 2018 | 11:53 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বিএনপি আয়োজিত সমাবেশ থেকে দলটির নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত  মুক্তির পর দেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে খালেদা জিয়াকে। তাকে মুক্তি দিলেই কেবল বোঝা যাবে সরকার নির্বাচন চায়।

সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বিএনপির শীর্ষ নেতারা এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এ  মানববন্ধন করে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দীন আলম, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতন্ত্রের মাতা, বাংলাদেশের মানুষের নয়নের মণি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে—এটা তার প্রাপ্য। এই সরকার গত দশ বছরে বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। আমাদের সব অর্জন তারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তারা পার্লামেন্টকে প্রহসনে পরিণত করেছে।’

সরকার প্রশাসনকে করায়ত্ব করে রেখেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাবগকে তারা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। সাংবাদিকরা ঠিক মতো লিখতে পারছে না, তাদেরকে লিখতে দিচ্ছে না। বিরোধী দলকে ধ্বংস করার জন্য একের পর এক প্লট তৈরি করছে। সারা বাংলাদেশে ভৌতিক মামলা দায়ের করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১ লাখ মানুষকে তারা আসামি করেছে। ১২ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, নির্যাতন করে, গুম করে হত্যা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এই ভয়াবহ দানব সরকারের হাত থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। এই যে দানব সরকার আমাদের বুকে চেপে বসে আছে তাদেরকে সরাতে হবে। আর এ জন্য পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি. আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অচলায়তন ভাঙি।

‘আমরা পষ্কিার করে বলছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে, নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়ন করতে হবে’— বলেন ফখরুল।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন,  ‘এই দেশে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে যদি দেশনেত্রীকে মুক্তি দেওয়া না হয়। যদি দেশনেত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে বোঝা যাবে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।

বিজ্ঞাপন

‘সরকার সন্ত্রাসী সরকারের পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘ তারা সন্ত্রাস করছে। একদিকে হুমকি দিচ্ছে, অন্যদিকে বিনা কারণে গ্রেফতার করে জাতিকে আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই সরকারকে চলে যেতে হবে। তাদের দিন শেষ হয়ে গেছে, জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এখন দরকার আমাদের ঐক্য, ইস্পাত কঠিন ঐক্য।’

সকাল ১১টায় এ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নেতাকর্মীরা সকাল ১০টা থেকেই কর্মসূচিস্থলে আসতে শুরু করেন। নেতাকর্মীদের ভিড় ছড়িয়ে পড়ে প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক থেকে কদম ফোয়ারা মোড় পর্যন্ত। এতে পল্টনের একপাশে যান চলাচল বন্ধ যায়। বেলা ১১ টা ৫০ মিনিটে যখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তৃতা শুরু করেন তখন বিকল্প সড়কের দিকে চলতে থাকা বাসগুলো মূল সড়কের দিকে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় সচিবালয় কর্নার থেকে ৪/৫ জন কর্মীকে আটক করে তারা।

সমাবেশ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্নার থেকেও ৫/৬ জনকে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। ফলে হঠাৎ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা যে যার মতো দ্রুত গন্তব্যের দিকে ছুটতে থাকেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারাও প্রেস ক্লাবের ভেতর থেকে গাড়িতে যে যার মতো গন্তব্যে চলে যান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ায় এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। তার দাবিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি।

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর (বুধবার) মহানগর নাট্যমঞ্চ/ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে প্রতীকী অনশন করবে বিএনপি। সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হবে।

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন