August 18, 2018 | 6:10 pm
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা ফারুক। গ্রামীণ পটভূমির ছবিতে নায়ক হিসেবে সর্বাধিক সমাদৃত। রুপালী পর্দার অনবদ্য অভিনয় তাকে অধিষ্ঠিত করছে কিংবদন্তির আসনে। আজ এই কিংবদন্তির ৭০তম জন্মদিন। যদিও জন্মদিন তার কাছে অন্যসব দিনের মতো সাধারণ। একটা সময় জন্মদিন পাল করলেও বিশেষ একটি কারণে এখন আর জন্মদিন পালন করেননা।
নিজের জন্মদিন পালন না করা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে। সেই সাথে কথার সূত্র ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি।
জীবন তো শিক্ষার জায়গা। অনেক কিছু শিখেছি। মানুষের জীবনে তিনটি স্তর হয়। এর ভেতর তিনটি স্তর পার করে ফেলেছি। আর একটি স্তর বাকি। নিজের অজান্তেই একদিন তৃতীয় স্তরে পৌছে যাবো। এক জীবনে অনেক দায়িত্ব থাকে, কাজ থাকে। অনেকে সেই কাজ করে যেতে পারেনা। আমি এখনও সব কাজ করতে পারিনি। মৃত্যুর আগে সব কাজ শেষ করে যেতে চাই। জানিনা সম্ভব হবে কিনা!
কে জন্মদিন পালন করলো, কে করলো না-এসব নিয়ে আমার ভাবার সময় নেই। তাছাড়া আমি কিছু মনে করিনা। যদিও আমি জন্মদিন পালনে আগ্রহী নই। আগে জন্মদিন পালন করতাম। ’৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর থেকে জন্মদিন পালন করিনা। এই আগস্টেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি জন্মদিন পালন থেকে বিরত থাকি।
এমন বহু চরিত্র আছে। বলে শেষ করা যাবেনা। সমাজ, দেশ, মানুষের কথাসহ দেশকে এগিয়ে নিতে যেসব সচেতনতামূলক ছবি হওয়া উচিত ছিলো সেসব ছবি নির্মিত হয়নি। এমন ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করা হয়নি। আমি সবসময় চেয়েছি আমার ছবিতে দেশ প্রাধান্য পাক। কেনো জানিনা আমি আমার অভিনয় জীবনে এরকম ছবি পাইনি।
বিজ্ঞাপন
আমি অভিনয় ছাড়িনি। তবে অভিনয় করছিনা। পছন্দমতো কোন চরিত্র পাচ্ছিনা। কোনো চরিত্র যদি আমার ভালো লাগে তাহলে আবার অভিনয় করবো।
অবশ্যই আফসোস হয়। খুব কষ্ট হয়! চলচ্চিত্রে এখন ছেলেখেলা হচ্ছে । যে যখন আসে এখানে সে তখন রাজা হয়ে যান। বুক ফুলিয়ে বলেন, আমিই সব। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, জনগণ তাকে চেনেও না। এটা ভাবলে বড্ড হাসি পায়।
বিজ্ঞাপন
সবার ভেতর আলো থাকে। কেউ কেউ আলো জ্বালাতে পারে, কেউ পারেনা। নতুনদের কাছে আমার প্রত্যাশা অনেক। আমি তাদের কাছে আরও ভালো কিছু চাই। আর কে কতোটুকু ভালো করলো সেটা সময় বলে দেবে।
(কষ্টের হাসি) চলচ্চিত্রে প্রতিটি মূহুর্ত কষ্টে গেছে। কাজের কষ্ট। শারীরিক কষ্ট। শিল্পীদের নানান ধরণের কষ্টে থাকতে হয়। তা না হলে সৃষ্টি হয়না। কষ্ট হলেও চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। চলচ্চিত্র জীবন থেকে আমার ব্যক্তিগত জীবনে অনেক কষ্টের ছিলো। মাত্র আট বছর বয়সে মাকে হারিয়েছি। তারপর যেভাবে বেড়ে উঠেছি সেটা বড় করুণ। এখন সেসময়ের কথা মনে পড়লে খুব কষ্ট হয়। ভাবি কি জীবনই না পার করে এসেছি!
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম