বিজ্ঞাপন

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৮ জেলায় ৯ জনের মৃত্যু

May 25, 2018 | 1:13 pm

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

সারাদেশে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে ঢাকা, নেত্রকোণা, কক্সবাজার, কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, ঝিনাইদহ ও ময়মনসিংহে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯ জন মারা গেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, বন্দুকযুদ্ধে নিহতেরা মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য। বিভিন্ন জেলা থেকে সারাবাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য:

ঢাকা: রাজধানীর শিল্পাঞ্চল হাই স্কুল মাঠে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে  কামরুল ইসলাম (৪০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে বন্দুকযুদ্ধ ঘটলে গুলিবিদ্ধ হন কামরুল। তাকে ঘটনাস্থল থেকে মুমুর্ষ অবস্থায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

কামরুল মহাখালী দক্ষিণপাড়া এলাকায় থাকতেন। বাবা নাম মৃত মানিক মিয়া।

নেত্রকোণা: মাদকবিরোধী অভিযানে নেত্রকোণায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় দুই তরুণ নিহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করেছে, তারা মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনার সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে দুইটি পাইপ গান, তিন হাজারের বেশি ইয়াবা  ও ৭০৭ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে পুলিশ।

নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন খান জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মনাং গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

ওসি জানান, মনাং গ্রামে কিছু মাদক ব্যবসায়ী জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে দু’জন আহত হন। তাদের নেত্রকোণা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের লাশ  হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের মেরিনড্রাইভ সড়কের পাশ থেকে আখতার কামাল (৪১) নামের একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আকতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ‘ইয়াবা গডফাদার’দের একজন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৫ মে) ভোরে মেরিনড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগর ২ নাম্বার ব্রিজ এলাকা থেকে এই লাশটি উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোরে দরিয়ানগর ব্রিজ এলাকায় গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ টহলে যায়। পরে ওই এলাকার সড়কের পাশে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পায়। ওই লাশের পাশে এক হাজার পিস ইয়াবা, ১টি এলজি ও ৪ রাউন্ড গুলি পড়ে ছিল। আখতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা গডফাদারদের একজন বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এই পুলিশ কর্মকর্তার ধারণা, প্রতিপক্ষের মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে আখতার কামালের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা ইয়াবা, বন্দুক ও গুলিগুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কুমিল্লা: কুমিল্লার বুড়িচংয়ে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে কামাল ওরফে ফেন্সি কামাল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। এসময় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের ৩ সদস্য।

ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি ও ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২ টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কামাল আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে। আহত গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এসআই সাহাবুল ইসলাম ও কনস্টেবল মো. সুমন মিয়া।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোজ কুমার দে জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের একটি দল বুড়িচং উপজেলার মহিষমাড়ায় এলাকায় যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়ে। উভয়পক্ষের গোলাগুলিতে মাদক ব্যসায়ী কামাল গুরুতর আহত।  গ্রেফতার হয় তার দুই সহযোগী হানিফ ও ইলিয়াছ। গুরুতর আহত কামালকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় মাদক ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ইউনুস আলী দালাল (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, ২ রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ২টায় উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইউনুস আলী দালাল উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি পাকা রাস্তার পাশে সীমান্ত এলাকায় দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে তারা খবর পান। তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে ৫ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পরে বিলের মধ্যে তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ ইউনুসকে পাওয়া যায়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করে। তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুস আলী দালাল একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে জুয়েল নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে  একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ফুলছড়ি উপজেলায়  বালাসীঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ী জুয়েল শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ ও বিক্রি করতো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ জুয়েলকে গ্রেফতার করে। রাতে জুয়েলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ তাকে সাথে নিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে গেলে তার লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়ে। পরে সেখান থেকে মাদক ব্যবসায়ী জুয়েলকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত জুয়েলের বিরুদ্ধে অন্তত এক ডজন মামলা রয়েছে।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আড়পাড়া নামক স্থানে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শামীম সরদার (৪৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম আড়পাড়া এলাকার মমিন সরদারের ছেলে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, রাতে মাদক উদ্ধারে উপজেলার পৌর এলাকার আড়পাড়া নামক স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে পুলিশ  ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শামীম সরদার নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে।  তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করে। নিহত শামীমের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ৯টি মাদক মামলা রয়েছে। সে উপজেলার অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বলেও জানান তিনি।

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ শহরের পুরোহিত পাড়ায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে রাজন নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো:আশিকুর রহমান ও কনস্টেবল কাওসার। তাদের জেলা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৪ মে রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, রাজন মাদক বিক্রেতা। তার বিরুদ্ধে  ৯টি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, চারশ পিস ইয়াবা ও গুলির খোসা উদ্ধার করে পুলিশ।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আশিকুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মাদক বেচা-কেনার খবর পেয়ে শহরের পুরোহিত পাড়া এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে মাদক বিক্রেতারা। পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এ সময় রাজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সারাবাংলা/টিএম

আরও পড়ুন

পাঁচ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৮ মাদক ব্যবসায়ী নিহত
পাঁচ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৬
সাত জেলায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৯
টাঙ্গাইলে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী নিহত
মাদকবিরোধী অভিযানে ৫ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৫ জনের মৃত্যু
ময়মনসিংহে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী নিহত
যশোরে র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন