বিজ্ঞাপন

বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকাল বন্ধ সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ

April 10, 2018 | 6:40 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সরকারের পক্ষ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে আবারও সমন্বিত আন্দোলনে নামলো কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলায় ঢাবিতে অবাঞ্ছিত কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি শিক্ষার্থীদের
অর্থমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান শিক্ষার্থীদের
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি তিনটি দাবি তুলে ধরেন- আটক শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা এবং কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা।

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বুধবার থেকে সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

রাশেদ বলেন, গতকাল যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমরা সচিবালয়ে বৈঠক করছিলাম তখন তাদের অনুরোধে ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সংসদ অধিবেশনে দাঁড়িয়ে বলেছেন আন্দোলনকারীদের ৮০ শতাংশ ‘রাজাকারের বাচ্চা’। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সরকারের একজন মন্ত্রী, সংসদের দাঁড়িয়ে কীভাবে এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন, প্রশ্ন রাখেন তিনি। আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে তিনি ক্ষমা না চাইলে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমরা ঢাবি শিক্ষার্থীরা তাকে অবঞ্ছিত ঘোষণা করছি।

বিজ্ঞাপন

সংসদে কৃষিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সুযোগ পাবে না, রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে? তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত হবে?’ তিনি বলেন, ‘রাজধানীকেন্দ্রিক একটি এলিট শ্রেণি তৈরির চক্রান্ত চলছে। তারই মহড়া গতকাল (রোববার) আমরা দেখলাম। পরিষ্কার বলতে চাই। মুক্তিযুদ্ধ চলছে, চলবে। রাজাকারের বাচ্চাদের আমরা দেখে নেব। তবে ছাত্রদের প্রতি আমাদের কোনো রাগ নেই। মতলববাজ, জামায়াত-শিবির, তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে সামান্য শৈথিল্য দেখানো হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব এদের ক্ষমা নেই, ক্ষমা করা যাবে না। হয় তারা থাকবে, নতুবা আমরা থাকব।

ঢাবি উপাচার্যের বাসায় হামলার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটা শিক্ষার্থীদের জন্য একটা কলঙ্কজনক ইতিহাস। মুখোশ কেন পরতে হবে? মুখোশ কারা পরে? যারা ভণ্ড, প্রতারক—তারাই মুখোশ পরে। ইতর হওয়ার একটা সীমা আছে।

সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বাজেটের পরে কোটা সংস্কার করা হবে। তার এই দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। আজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে এসেছে এবং সবার ভেতরে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘কোটা এখন যা আছে, তা বোধহয় অনেক বেশি হয়ে গেছে। এটা সংস্কার করা উচিত। তবে কোটা থাকতেই হবে। সমাজে যারা পশ্চাৎপদ, তাদের জন্য কোটা থাকা উচিত। প্রশ্ন হচ্ছে কত শতাংশ থাকবে? আগামী বাজেটের পরে কোটা সংস্কারে হাত দেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

রাশেদ বলেন, বৈঠকের পর আন্দোলনকারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। আজ আমরা সবাই একত্রিত, শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্দোলন চলবে।

সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করা হবে। যাদের আটক করা হয়েছে- তাদের মুক্তি দেওয়া হবে, যারা আহত হয়েছে- তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। অথচ আমরা আশানুরূপ সাড়া পাইনি। এসব বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট বক্তব্য চাই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই, আপনার সন্তানদের বিপদের সম্মুখীন করবেন না। রাস্তায় ঠেলে দেবেন না।

প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট বক্তব্য ছাড়া আমরা রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরব না বলেও মন্তব্য করেন রাশেদ।

সংবাদ সম্মেলনের পর মিছিল করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ঢাবি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্য, শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের পাশ দিয়ে ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

সারাবাংলা/জেএ/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন