বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার মঈনুলকে শুধু ক্ষমা চাইলেই হবে না, শাস্তিও পেতে হবে

October 18, 2018 | 8:10 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভির টকশো’তে নারী সাংবাদিককে ‘চরিত্রহীন’ বলায়  ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন নারী সাংবাদিকরা। শুধু তাই নয়, এই আচরণের জন্য তাকে শাস্তিও পেতে হবে বলে জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এ দাবি করেছেন নারী সাংবাদিকরা।

বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টকশোতে দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। এতে তিনি শুধু মাসুদা ভাট্টিকে আক্রমণ করেননি, তিনি সমগ্র নারী, তথা সাংবাদিক সমাজকে আক্রমণ করেছেন।

তিনি বলেন, তার চেয়ে বড় কথা হলো— তিনি কোনোভাবে একজন সাধারণ মানুষকেও এভাবে চরিত্রহীন বলে আক্রমণ করতে পারেন না। এ অবস্থায় ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে তার অপরাধ স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ভবিষ্যতেও তিনি এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে বিরত থাকবেন।

নাসিমুন আরা হক মিনু আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি এই দাবি না মেনে নিলে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদ সভায় সারাবাংলা ডটনেট, দৈনিক সারাবাংলা ও জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল কেবল একজন নারীকেই অপমান করেনি, তিনি সমস্ত মানুষকে অপমান করেছেন। এজন্য তাকে শুধুমাত্র ক্ষমা চাইলেই হবে না, এর বাইরে তাকে আরও শাস্তি পেতে হবে। ব্যারিস্টার মঈনুলকে ‘গণশত্রু’ উল্লেখ করে সব ধরনের টকশোতে তাকে আমন্ত্রণ না জানানোর আহ্বান জানান তিনি।

এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নী সাহা বলেন, রাজনৈতিকভাবে যারা কলঙ্কিত, তারাই চরিত্রহীন। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের উদ্দেশে তিনি বলেন, এসব রাজনৈতিক কলঙ্কিত ব্যাক্তিরা সাবধান থাকবেন। আজকের প্রতিবাদ আমাদের সবার প্রতিবাদ। বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ— এটাই আমাদের একক মাপকাঠি। আগামীতে যারা রাজনীতি করবেন, আজকের প্রতিবাদটিকে গুরুত্বের সাথে নেবেন বলে আশা করি।

বিজ্ঞাপন

ওই দিনের ঘটনাকে নারীর জন্য এক ধরনের নির্যাতন উল্লেখ করে ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল ‘চরিত্রহীন’ বলে এক ধরনের নির্যাতন করেছেন। এজন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে।

ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, এ ক্ষত শুধু নারীর নয়, দেশের সব মানুষের। এ ধরনের মানসিকতা রুখতে আগামী নির্বাচনে আচরণ বিধিমালায় নারী নির্যাতনকারী, যৌতুক লোভী— এ ধরনের মানুষেরা যেন যোগ্য না হয়, সেটি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মনোবিজ্ঞানী আনোয়ারা সৈয়দ হক, নাছিমা খান মন্টিসহ অন্যরা। এসময় বিপুলসংখ্যক নারী সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন একাত্তর জার্নালে রাজনৈতিক সংবাদের বিশ্লেষণ চলছিল। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন মিথিলা ফারজানা। এতে অতিথি ছিলেন মাসুদা ভাট্টি ও সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত। আলোচনায় স্টুডিওর বাইরে থেকে যুক্ত হন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।

আলোচনার ফাঁকে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল— সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে যে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর জবাবে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই।’

মঈনুল হোসেনের এ মন্তব্য প্রসঙ্গে নারী সাংবাদিকরা বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, তার এই বক্তব্য নারীর জন্য অবমাননাকর, আপত্তিকর, চরম অসহনশীলতার পরিচায়ক। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মতো যারা রাজনৈতিক সহনশীলতার কথা বলেন, তাদের কাছ থেকে এ ধরনের শব্দচয়ন উদ্বেগজনক বলে আমরা মনে করি এবং আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন