বিজ্ঞাপন

ভোটের মাঠে দেড়শ কোটি টাকা, হাওয়া ভবনের সাবেক কর্মীসহ আটক ৩

December 25, 2018 | 5:41 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি দলের পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করতে গত দুই মাসে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এ কাজের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে এখন পর্যন্ত তিন জনকে আটক করেছে র‌্যাব, জব্দ করা হয়েছে নগদ আট কোটি টাকা ও ১০ কোটি টাকার চেক। আটক তিন জনের মধ্যে একজন হাওয়া ভবনের সাবেক কর্মকর্তা।

আজ (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলের সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। তিনি জানান, একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভোট কেনার জন্য দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসব টাকা পাঠানো হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গতকাল সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ অভিযান চালিয়ে প্রায় আট কোটি টাকা ও ১০ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করে। এ সময় একটি আমদানি-রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হায়দার (২৪), গুলশানের আমেনা এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক (জিএম, প্রশাসন) জয়নাল আবেদিন (৪৫) ও অফিস সহকারী আলমগীর হোসেনকে আাটক করা হয়। র‌্যাবের মহাপরিচালক জানান, আটক তিন জনের মধ্যে একজন হাওয়া ভবনের সাবেক কর্মকর্তা।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জব্দ করা টাকার সঙ্গে বিভিন্ন কাগজপত্র ও শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী নুরু উদ্দিন অপুর পোস্টার পাওয়া গেছে এবং একটি আসনের ভোটারদের নাম মোবাইল নম্বর এবং ঠিকানাসহ একটি বইও পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভোট কেনার জন্যই এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।

র‌্যাব ডিজি বলেন, আটকৃ ব্যক্তিরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় টাকা ছড়াত। সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় যেখানে অভিযান চালানো হয়েছে, সেখানে ইউনাইটেড করপোরেশন ও ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ নামের দুইটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই মাস আগে অফিসটি ভাড়া নেওয়া হয়। এরপর গত দুই মাসে ওই অফিস থেকেই দেড়শ কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বেনজীর আহমেদ বলেন, ইউনাইটেড করপোরেশনের কথিত মালিকের গত একমাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখা যায়, তিনি ৭৩ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন এবং গত দুই মাসে এক কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং পেশীশক্তির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতেই টাকাগুলো এখান থেকে পাঠানো হচ্ছে। এখানে একজন প্রার্থীর কাগজপত্র দেখতে পেয়েছি, যাকে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। তিনি শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী নুরু উদ্দিন অপু। তার এলাকায় টাকা যাওয়ার পর নির্বাচনি সহিংসতা হয়েছে। আমরা দেখেছি, দেশের যেসব স্থানে টাকাগুলো গেছে, সেখানেই সহিংসতা হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, এই অফিস থেকে কোনো দিন ১১ কোটি টাকা, কোনো দিন ২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। টাকাগুলো অধিকাংশ দুবাই থেকে হুন্ডি ও ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। দুই মাসে আমরা ১৫০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছি। তবে এ অফিসের লোকজন টাকার রেকর্ড বেশি দিন রাখে না। তাই আমরা সব তথ্য পাইনি। জব্দ করা যন্ত্রাংশগুলোর ফরেনসিক টেস্টের পর লেনদেনের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, যেসব এলাকায় এই টাকা পাঠানো হবে বলে তালিকা পাওয়া গেছে, তালিকা ধরে সেসব স্থানে অভিযান চালানো হবে। নির্বাচনে এই টাকা যেন কোনো প্রভাব না ফেলতে পারে, সেজন্য সচেষ্টা থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন