বিজ্ঞাপন

শেষ হচ্ছে ডাকসুর প্রচারণা, ছাত্রলীগ ছাড়া খুশি নয় কেউ

March 9, 2019 | 8:23 pm

।। কবির কানন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ (শনিবার, ৯ মার্চ) রাত বারোটায়। গত এক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা এ প্রচারণায় শুধুমাত্র ছাত্রলীগই খুশি। ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্র জোট, কোটাসহ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্যরা প্রশাসনের পক্ষপাতসহ নানা কারণ দেখিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।

ডাকসুর আচরণবিধি অনুসারে, ভোটার তালিকা চূড়ান্তের দিন থেকে ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন। প্রচারণার সময় ছিল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত বারোটা। গত ৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া প্রচারণা তাই আজ রাত বারোটায় শেষ হচ্ছে। সে হিসেবে প্রার্থীরা সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৭ দিন।

বিজ্ঞাপন

ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখা গেছে, প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থিত হয়ে ভোট চেয়েছেন। এছাড়াও ব্যানার আর পোস্টারের মাধ্যমেও চালানো হয়েছে প্রচারণা। ডাকসুর ভিপি, জিএস, এজিএসসহ মোট ২৫টি পদে ২২৯ জন প্রার্থী এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ক্যাম্পাসের সব জায়গা প্রার্থীদের ব্যানার ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

পাঁচটি ছাত্রী হলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৮টি হল রয়েছে। প্রার্থীরা ছেলে হলগুলোতে রুমে রুমে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। আর মেয়েদের হলগুলোতে কেউ প্রজেকশন মিটিং, কেউ পরিচয় সভা করে প্রচারণা চালিয়েছেন। এছাড়া হলগুলোর প্রবেশ মুখে এবং ভেতরে প্রার্থীদের ব্যানার পোস্টার দেখা গেছে।

ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে ক্ষমতাসীন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ব্যানার ও পোস্টার। এছাড়া সংখ্যায় কম হলেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যানারের পোস্টারও লক্ষ্য করা গেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রচারণার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রচারণায় সন্তুষ্ট। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারে-দ্বারে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আমরা মনে করি শিক্ষার্থীরা শোভন-রাব্বানী-সাদ্দাম পরিষদের ওপর আস্থা রেখে ১১ তারিখে ভোট দিবে।’

তবে নিজেদের প্রচারণায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি ছাত্রদল। এক সপ্তাহে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোকে তারা অসম্ভব বলে উল্লেখ করেছে। এই প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়ছেন আনিসুর রহমান অনিক। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসনকে আমরা বারবার অনুরোধ করেছিলাম সময় বাড়ানোর, তারা তা শোনেনি। এখন তারা বিভিন্ন অপচেষ্টা করছে। সাংবাদিকদের প্রবেশে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করছে। যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের ইচ্ছা থাকত তাহলে তারা এমন করত না।’

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ও প্রচারণা নিয়ে অখুশি। তারা বলছে, এক সপ্তাহ সময় খুবই কম এবং ক্লাসে প্রচারণা না করতে পারার কারণে সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো যায়নি। এই প্যানেল থেকে ভিপি পদপ্রার্থী নুরুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘সময়টা খুব কম দিয়েছে। আর ক্লাস ক্যাম্পেইন না রাখায় আমরা সবার কাছে পৌঁছাতে পারিনি।’

বিজ্ঞাপন

একই কথা বললেন ‘স্বতন্ত্র জোট’ এর ভিপি প্রার্থী অরণী সেমন্তি খান। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসন নানাভাবে হাত-পা বেঁধে রেখেছে। আমরা নিজেরাই নিজেদের শক্তি। জোর করে কাউকে প্রচারণায় ধরে আনিনি; এমনটা চাইও না। তবে ক্লাস ক্যাম্পেইন হলে ভালো হতো।’

প্রচারণার বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ‘প্রচারণায় এগিয়ে ছিল ছাত্রলীগ। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে তারা ক্ষমতায়। এ কারণে তাদের সক্ষমতা বেশি। আর্থিকভাবেও তারা শক্তিশালী।’

আবু সাঈদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘যদিও আমরা দেখছি নির্বাচনের আমেজ ক্যাম্পাসে, কিন্তু সেটা পক্ষপাতমূলক। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন তাদের ইচ্ছামত প্রচার করেছে। অন্যান্য ছাত্র সংগঠন প্রচারণায় অংশ নিলেও ভালোভাবে প্রচার করতে পারেনি।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি কয়েকটি স্পট থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ব্যানার উধাও হয়ে যাবার কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে ডাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট চলবে বেলা ২টা পর্যন্ত। এরপর গণনা শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা করবেন।

সারাবাংলা/কেকে/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন