বিজ্ঞাপন

‘অন্যায় আর নির্যাতনে সমাজে তুষের আগুন জ্বলছে’

August 17, 2018 | 9:35 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাধিক অন্যায় আর নির্যাতনের ফলে সমাজে এখন তুষের আগুন জ্বলছে। যে কোনো সময় তা বিস্ফোরিত হতে পারে। সরকারের উচিত এখনই সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া এবং কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক এই দুইটি আন্দোলনে গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়া।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংহতি সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। নিরাপদ সড়ক ও কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এই সভার আয়োজন করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

বিজ্ঞাপন

গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ আজ ভয়ানক অসুস্থ। এই অসুস্থতা বাড়ছে। এতোই অসুস্থ যে অসুস্থতা বোঝাও যাচ্ছে না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য একজন সাবেক বিচারপতিকে চড় মারতে চান। কতোটুকু অসুস্থ হলে সমাজে এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা সহজেই টের পাওয়া যায়। দেশের রাষ্ট্রপতি অসুস্থ, তিনি ২-৩ মাস পরপরই চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান। প্রধানমন্ত্রী যেসব কথা বলছেন, তাতে মনে হচ্ছে, তিনিও এখন নিয়মিত ওষুধ খান না। বিচারকরা অসুস্থ।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, ‘কোটা নিয়ে ছাত্র আন্দোলন মরে যায়নি, বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। ঈদের আগে গ্রেফতার হওয়া সব শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যারা সমালোচনা করতো আজ তারা মন্ত্রিসভায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বামীকে নিয়ে ভারত গিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছেন। অনেকে তাকে তেল কন্যাও বলেন। আগে দেশ চালাতো ডিসি-এসপি আর এখন দেশ চালায় কনস্টেবলরা। একাত্তরে যাদের জন্ম এখন তারা মক্তিযুদ্ধের সনদ দিচ্ছে। এটি মক্তিযুদ্ধের সনদ নয়। চুক্তিযুদ্ধের সনদ।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমাকে মেরে ফেল কিন্তু আমার সন্তানকে মের না। আমাকে জেলে ঢুকাও কিন্তু আমার সন্তানকে জেলে নিও না।’

বিজ্ঞাপন

সাবেক ছাত্রনেতা, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এবং চিকিৎসক লতিফ মল্লিক বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া নয়, আমাদের লক্ষ্য ন্যায় প্রতিষ্ঠা।’

গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ম শফিকুল্লাহ বলেন, ‘অন্যায় আর অনাচারের কারণে মানুষ ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে গেছে। ভিকারুন নিসার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় খাতায় কোনো প্রশ্নের জবাব লিখেনি। ওরা লিখেছে যে উই ওয়ান্ট জাস্টিস। শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিলো যে কিভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়। ওরা আমাদের শিক্ষা দিলো যে কিভাবে ন্যায়ের পক্ষে আন্দোলন করতে হয়। সমাজে সকলের মধ্যে তুষের আগুন জ্বলছে। এখনই সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

আইনজীবী অ্যাডভোকেট শুব্রত চৌধুরী বলেন, কিশোররাও বিদ্রোহ করতে পারে। ওরা বলল যে বাংলাদেশ মেরামতের কাজ করছি। এরপরও যদি আমরা শিক্ষা না নেই, তবে এর চেয়ে লজ্জার আর কী আছে।’

বক্তারা আরো বলেন, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়ক এই দুইটি আন্দোলন যৌক্তিক আন্দোলন। মেধা ভিক্তিক সমাজ গঠনের জন্য কোটার সংস্কার করা জরুরি। এই দুইটি আন্দোলনে সকলের সংহতি এবং সমর্থন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, এই নিরাপদ সড়ক আন্দোলন যৌক্তিক দাবি। প্রধানমন্ত্রী একদিকে সমর্থন জানিয়ে অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের ওপর যে নির্যাতন চালাচ্ছেন তা মেনে নেওয়া যায় না।

বিজ্ঞাপন

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়াউর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে। তার বরখাস্তের কারণ হচ্ছে যে তিনি কোটা আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে লিখেছিলেন। একজন নাগরিক কি তার মত প্রকাশ করবে না? মত প্রকাশের জন্য কি তিনি চাকরিচ্যুত হবেন? আমরা কোন দেশে বাস করছি!

সারাবাংলা/জেআইএল/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন