বিজ্ঞাপন

অন্য দেশ যদি পারে, তবে আমরা কেন পারব না: প্রধানমন্ত্রী

March 18, 2018 | 3:44 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: মানুষের দোরগোড়ায় আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন, অন্য দেশ যদি পারে, তবে আমরা কেন পারব না? কারণ, আমাদের মেধা বা জ্ঞান কোনোটিরই অভাব নেই। তবে সুযোগের অভাব ছিল। যেটি আমরা এখন করে দিচ্ছি।’

রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে রোববার (১৮ মার্চ) সকালে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের (বিএসসিসিএম) তৃতীয় ও বাংলাদেশ ক্রিটিক্যাল কেয়ার নার্সিংয়ের প্রথম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

চিকিৎসা-শিক্ষার মানের প্রতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেডিকেল সাইন্স এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। নামী-দামি বই আসছে। কিন্তু এসব বই এত দামি সবার পক্ষে তো কেনা সম্ভব নয়! কাজেই আমার মনে হয় আপনাদের বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন আছে এবং মন্ত্রণালয় থেকেও এটার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আর প্রত্যেকটি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লাইব্রেরিটা একান্তভাবে প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন নিমতলীতে আগুন লাগল, তখন ডা. সামন্ত লাল সেন এসে বলল আমি এখন কী করব? আইসিইউ তো এখনও চালু হয়নি। অথচ মেশিনপত্র আমি কিনে দিয়েছি। সাত বছর ধরে এগুলো পড়ে আছে। কোনোটিই তা কাজে লাগানো যায়নি। আর আগের সরকার তো লুটপাট ও জ্বালাও-পোড়াওয়ে ব্যস্ত ছিল। তারাও তো করতে পারত কিন্তু তারাও করেনি। আমরা বোধ হয় সাত দিনও লাগেনি, সেটি চালু করতে।’

বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। ওই সময় তাদের ছিল খুবই অগ্রহণযোগ্য যুক্তি। সেই যুক্তিটা হচ্ছে, এই কমিউনিটি ক্লিনিকে যারা চিকিৎসা নেবে তারা কখনই বিএনপিকে ভোট দিবে না। তারা নৌকায় ভোট দিবে। আর সেই ভয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভিজিটর তো যেতেই হবে। আত্মীয়-স্বজন তো যাবে, যাবে তার সঙ্গে রাজনীতিবিদরাও যাবে। তারা না গেলে নাকি রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের মানসম্মান থাকে না, এ রকমের একটা সমস্যা আছে। নেতারাও মনে করেন, তারা হয়তো না গেলে দায়িত্ব পালনে অবহেলা হল।’

চিকিৎসকদের পরামর্শ দিয়ে শেখ  হাসিনা বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনাদের একটু কড়াকড়ি করতে হবে। পরিষ্কার কথা এটি। ঠিক আছে, যারা আসবে তারা অবশ্যই আসবে। তাহলে একটা ভিজিটর কর্নার করে দিবেন, যেখানে ভিজিটররা বসবেন, খাতা থাকবে। এর এখন তো আমাদের ডিজিটাল সিস্টেমই আছে। দরকার হয় ডিজিটাল সিস্টেমে রোগী দেখে আসবে। ওখানে মনিটর লাগানো থাকবে, ভিজিটররা বাইরে দাঁড়িয়ে রোগী দেখবেন। অথবা গ্লাস দেওয়া থাকবে, গ্লাসের বাইরে থেকে রোগী দেখবে।’

একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করবে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

চিকিৎসার জন্য দেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডাক্তারদের কথা-বার্তা এবং পরিচর্যায়ও অর্ধেক রোগ ভালো হয়ে যেত পারে। সেদিকেও আমাদের চিকিৎসকদের একটু বিশেষ যত্নবান হতে হবে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী নতুন নতুন রোগের পাশাপাশি নিত্যনতুন যে প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য চিকিৎসক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। এবং পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বই লেখার প্রতিও মনোনিবেশ করার প্রতিও আহ্বান জানান ।

বিএসসিসিএম-এর সভাপতি অধ্যাপক ইউএইচ সাহেরা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব ডা. সিরাজুল হক খান ও বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ক্রিটিকন বাংলাদেশ-২০১৮’র কংগ্রেস সভাপতি ডা. মীর্জা নাজিম উদ্দিন। এবং শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন বিএসসিসিএম’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এএসএম আরিফ আহসান।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রীপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা,সংসদ সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধি এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন