বিজ্ঞাপন

অস্ত্রহাতে ক্লাসে ঢুকবেন শিক্ষকরা

February 16, 2018 | 10:46 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

ধরুন কোনও শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ঢুকলেন, তার হাতে কোনও কলম কিংবা শিক্ষা উপকরণ নয় একটি স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র। কেমন লাগবে? ভীতিকর মনে হবে না? কিন্তু পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন কথা উঠেছে শিক্ষকের হাতেই তুলে দেওয়া হোক অস্ত্র। তারা সার্বক্ষণিক হাতে অস্ত্র রাখবেন, সেটা নিয়েই ঢুকবেন শ্রেণিকক্ষে। আর যদি ঢুকে পড়ে কোনও বন্দুকধারী তবে তাকে কব্জা করবেন, কিংবা গুলি করে মারবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল শুটিং এতটাই বেড়েছে যে একেই এখন সমাধান হিসেবে দেখছেন অনেকে।

দেশটির ফ্লোরিডা রাজ্যের পার্কল্যান্ডে একটি মাধ্যমিক স্কুলে ওই স্কুলেরই বহিস্কৃত এক ১৯ বছরের ছাত্র ঢুকে পড়ে অন্তত ১৭ জনকে হত্যা করার পর এই কথাগুলো আবারও সামনে এসেছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহতম স্কুল হত্যাকাণ্ডটি ঘটে ২০১২ সালে কানেটিকাটের স্যান্ডিহুকে। সেবার নিহত হয় ২৬ জন। তখনই এই আলোচনা জোরদারভাবে শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে গত মঙ্গলবার কেন্টাকির বেনটনে সহপাঠীর গুলিতে নিহত হয় দুই স্কুলশিশু। আহত হয় আরও ১৪ জন। এখানে নিহত দুই জনেরই বয়স ছিল ১৫ আর হত্যাকারিও ছিল একই বয়সের। এটি ছিল ৪৮ ঘণ্টায় তৃতীয় স্কুল শুটিং, আর তিন সপ্তাহে ১১তম।

স্কুলগুলোতে ভবিষ্যতের রক্তপাত এড়াতে কি করা যায় সে নিয়েই এখন চিন্তিত অনেকে। কারণ স্কুল শুটিংই এখন হয়ে উঠেছে মধ্য দুপুরের প্রধান খবর।

‘আমেরিকানরাতো এই ঘটনাকে অনেকটা নিজেদের জীবন অংশ হিসেবেই মেনে নিয়েছে,’ এমন একটি মন্তব্য এসেছে নিউইয়র্ক টাইমসের ওয়েবসাইটে।

বিজ্ঞাপন

অস্ত্র আইনই যুক্তরাষ্ট্রকে আজ এই দুর্বিপাকে ফেলেছে। আর দেশটির রাজনীতিবিদদের মধ্যে অস্ত্র বন্ধ নয়, তা বাড়ানোরই ইচ্ছাটি প্রকট। সে কারণেই সমাধান খোঁজা হচ্ছে এই ভাবে যে, স্কুল ভবনগুলোকেই করে তোলা হোক সশস্ত্র। স্কুলের শিক্ষক ও স্টাফদের হাতেই তুলে দেওয়া হোক অস্ত্র।

কেন্টাকির স্কুল শুটিংয়ের পর রাজ্যের রিপাবলিকান সেনেটর স্টিভ ওয়েস্ট রীতিমতো ছুটে গিয়ে একটি বিল ফাইল করলেন। যাতে বলা হয়েছে, কেনটাকির স্কুল গুলোতে সশস্ত্র স্কুল মার্শালরা নিয়মিত টহল দেবে। এই বিলে কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে বিদ্যমান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণকে আরও শিথিল করার কথাও বলা হয়েছে।

স্টিভ ওয়েস্টের বিলে সমর্থন মিলেছে ডেমোক্র্যাট সেনেটর রে জোনসেরও। তিনি বলেছেন, কেনটাকির প্রতিটি স্কুলে আমাদের সশস্ত্র জওয়ানদের রাখতে হবে। শিশুদের জীবন বাঁচাতে হলে এটাই হবে উত্তম পথ।’

এই রাজ্যের আইন আগে থেকেই স্কুলগুলোতে অস্ত্র বাড়ানোর পক্ষে ছিল। নতুন বিল তাতে পালক সংযুক্ত করলো।

বিজ্ঞাপন

গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি সিনেট একটি বিল পাশ করে তাতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের একটি খাপে ঢাকা হ্যান্ডগান নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।

এবছর একই ধরনের বিল উত্থাপন করা হয়েছে ফ্লোরিডা, ইন্ডিয়ানা, পেনসিলভানিয়া, মিসিসিপি, সাউথ ক্যারোলিনা ও ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায়। সফল হলে এই রাজ্যগুলোতেও শিক্ষকরা ক্লাসরুমে অস্ত্র নিয়ে ঢুকতে পারবেন।

স্কুল শুটিংয়ের একেকটি ঘটনার পর, এই প্রশ্ন ও বিতর্কটিই বড় হয়ে সামনে আসে, পরিস্থিতি সামলাতে দেশটির আসলে কি করা উচিত- অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নাকি অস্ত্রের ব্যবহার আরও বাড়িয়ে দেওয়া!

শিক্ষকের হাতে অস্ত্র দেওয়ার কথাটি প্রথম ওঠে ২০১২ সালে স্যান্ডিহুক স্কুল শুটিংয়ের পর। কানেটিকাটের ওই ঘটনায় ২০টি স্কুল শিশু ও ৬ জন শিক্ষক নিহত হন।

বলা হচ্ছিল- বদ লোকগুলোকে রুখতে একটি ভালো মানুষের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়াই ভালো সমাধান হতে পারে। সেই সুত্র ধরে ২০১৩ সালেই অন্তত সাতটি রাজ্যে শিক্ষকের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সারাবাংলা/এমএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন