বিজ্ঞাপন

আগামী বাজেট হবে বিনিয়োগ বান্ধব: এনবিআর চেয়ারম্যান

April 21, 2018 | 5:25 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আগামী বাজেট হবে বড় আকারের, গণমুখী ও অংশগ্রহণমূলক। ব্যবসাবান্ধব এই বাজেটের লক্ষ্য থাকবে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো। তবে সরকারের এই মেয়াদের শেষ  বাজেটে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেবে না অর্থ মন্ত্রণালয়।

শনিবার (২১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে প্রাক বাজেট মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য দিয়েছেন  জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, বিনিয়োগ যাতে বাড়ে সেদিকে খেয়াল রেখেই অর্থমন্ত্রনালয়ের  এবারের বাজেটের আকার বড় হচ্ছে। কারণ বাজেট যদি বড় হয়, সেখানে বিনিয়োগও বড় হতে হবে। বিনিয়োগ মানে শুধু সরকারি বিনিয়োগ নয়। প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সরকারী বিনিয়োগের বেশিরভাগ যায় অবকাঠামো উন্নয়নে। কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগ ফেরত আসে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়ে। এর বহুমুখী প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ে। তাই বেসরকারী বিনিয়োগটাকে উৎসাহিত করা হবে।

রাজস্ব আয় ঠিক রাখা এবং ক্ষেত্র বিশেষে বাড়ানো বাজেটের আরেকটা লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও মতবিনিময় সভায় জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, গণমুখী বাজেট হবে। তবে রাজস্ব আয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না। কোন কোন ক্ষেত্রে যদি রাজস্ব কমিয়ে আনা হয়, অন্যক্ষেত্রে সেটা বাড়িয়ে দেয়া হবে। রাজস্ব আয়টা ঠিক থাকতে হবে।একটি অংশগ্রহণমূলক বাজেট প্রণয়ন হচ্ছে উল্লেখ করে সেক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যবসায়ীদের নিয়ে অংশগ্রহণমূলক ভূমিকা পালন করতে চায়।

বিজ্ঞাপন

কর নিয়ে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথাও বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

তিনি বলেন‘, জিডিপি বাড়ছে কিন্তু আমাদের ট্যাক্স বাড়ছে না। আমরা এইট টু টেন পার্সেন্ট মাত্র ট্যাক্সের আওতায় আছি। বড় বড় ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের কাছে থেকে ট্যাক্স নিচ্ছেন। সাধারণ মানুষ তো ট্যাক্স দিচ্ছে না। আসলে কথা সত্য। আমাদের জাতীয় আয় বৃদ্ধির সাথে ট্যাক্স বাড়ছে না।

তিনি বলেন, জাতীয় আয় বৃদ্ধির সাথে ট্যাক্স যদি না বাড়ে সরকার কাজ করবে কিভাবে ? তবে বৈষম্য যাতে কমে সেটা দেখা হবে। নজর রাখা হবে  ডাবল ট্যাক্সেশান যাতে না হয় ।

এসময় চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে কাঁচামাল ও মেশিনারি পার্টস আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়। তবে  এনবিআর চেয়ারম্যান এ বিষয়ে ইতিবাচক কোন আশ্বাস দেননি।

বিজ্ঞাপন

তিনি  বলেন, বড় বাজেটে রেভিনিউ টার্গেট বেশি হয়। তবে  ব্যবসায়ীদের সুবিধাসহ বাজেটে ব্যবসাবান্ধব বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।বাজেটে তৈরি পোশাকের বাইরেও কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বণ্ড (তৈরি পণ্য রফতানির শর্তে শুল্কমুক্ত সুবিধা ও পোল্ট্রি শিল্পের মতো প্রান্তিক শিল্পকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার  চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ও পণ্যজট নিয়ে ব্যবসায়ীদের অসন্তোষ প্রকাশ করে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন,কাস্টমস অফিসাররা যেমন দেরি করেন তেমনি অনেক আমদানিকারকও দেরি করেন। বন্দরের পোর্ট ডেমারেজ অনেক। বন্দর জানিয়েছে, ডেমারেজ তাদের লক্ষ্য নয়। আমরা নিলাম প্রক্রিয়া দ্রুত করব। তবে ব্যবসায়ীরা সচেতন হবে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি শুল্ক সংক্রান্ত ১৪৮টি, ভ্যাট সংক্রান্ত ৩০টি ও আয়কর সংক্রান্ত ৪৮টি মিলে ২২৬টি প্রস্তাব এনবিআর চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন।

চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্যে রাখেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী ও প্রকৌশলী আলী আহমদ, বিজিএমই’র প্রথম সহসভাপতি মঈনুদ্দিন আহমদ মিন্টু, জিপিএইচ ইস্পাতের উপদেষ্টা ওসমান গণি চৌধুরী, রিহ্যাব সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এবং উইম্যান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত প্রাক বাজেট মতবিনিময় সভাতেও যোগ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

সারাবাংলা/আরডি/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন