বিজ্ঞাপন

‘আমরা কাজের লোককেও উনার মতো বাজে কথায় গালি দেই নাই’

December 26, 2018 | 10:00 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতিবাচক মন্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তিনি যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন আমরা আমাদের বাড়ির কাজের লোককেও এই ধরনের বাজে কথা বলে গালি দেই নাই, তিনি যেভাবে গালি দিয়েছেন।’

বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি একথা বলেন।

আজ কুষ্টিয়া, নওগা ও চাঁদপুর জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি জেলার নেতারাও শেখ হাসিনাকে এই তিন জেলার সকল আসনে মহাজোটের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার অঙ্গীকার করেন।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা গতকাল ইসি বৈঠকে গিয়ে পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতিবাচক মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঐক্যফ্রন্টের যিনি নেতা ড. কামাল হোসেন সাহেব, তার যে কথাবার্তা তা শুনে অবাক হতে হয়। কিছুদিন আগে সাংবাদিকদের তিনি ধমক দিলেন এবং ‘খামোশ’ বলে দেখে নেবেন বলে হুমকি দিলেন এবং সাংবাদিকদের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আবার গতকালকে তারা নির্বাচন কমিশনে যেয়ে নির্বাচন কমিশনকে কি বলেছে, তার চেয়েও বড় কথা হলো, পুলিশ বাহিনী; যে পুলিশ বাহিনী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে।’

‘বিএনপি-জামায়াত জোটের হাতে ২৬ জন পুলিশের সদস্য নিহত হয়েছে। আজকে সেই পুলিশকে বাজে কথা বলে গালাগালি করেছেন। এইভাবে পুলিশ বাহিনীকে গালাগালি করাটা কখনো আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য না। কারণ তারা কষ্ট করে দিনরাত। আজকে তাদের পরিশ্রমের ফলে আমরা দেশের শান্তি রক্ষা করতে পাচ্ছি, জঙ্গিবাদ দমন করতে পাচ্ছি। তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর সেইখানে তাদেরকে এরকমভাবে গালিগালাজ করাটা, এটা আমার কাছে খুব অবাক লাগে, আমরা আমাদের বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গেও এই ধরনের দুর্ব্যবহার করি না বা এই ধরনের বাজে কথা বলে গালি দেই নাই, তিনি (সে) যেভাবে গালি দিয়েছে।’

ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের নিন্দা জানান এবং এটা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলেও দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কাজেই এই ধরনের কথাবার্তাও জন্যই মানুষ তাদেরকে ভোটও দেবে না। মানুষ তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইনশাল্লাহ, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো।’

এরপর একে চাঁদপুরে নৌকার ৫ জন প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রার্থীরা হলেন চাঁদপুর-১ ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, চাঁদপুর-২ মো. নুরুল আমিন রুহুল, চাঁদপুর-৩ ডা. দীপু মনি, চাঁদপুর-৪ মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, চাঁদপুর-৫ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।

তার আগে কুষ্টিয়া ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাথে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার সময় ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।

তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,  ‘এই নির্বাচন জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার সুযোগ। কাজেই আপনারা যারা ভোটার আপনারা সকলেই ভোট দেবেন এবং ভোট দিয়ে মনমতো প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবেন।’

বিজ্ঞাপন

‘আমরা দেখেছি , ঐক্যফ্র্ট করা হয়েছে কিন্তু তাদের যে আচার-আচরণ সেই আচরণে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। এমনকি নির্বাচন কমিশন, সেখানেও ঝগড়াঝাটি করে এসেছেই। আবার সেখানে পুলিশ বাহিনীকে গালিগালাজ করেছেন অকথ্য ভাষায়। ঐক্যফ্রন্টের একজন নেতা আছেন তিনি নাকি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কিন্তু তার মুখ এধরনের নোংরা গালি নিশ্চয়ই কেউ আশা করে না।’

ড. কামাল হোসেন এরকমই দাবি করে তার কারণ তুলে ধরে আরও বলেন, ‘তিনি কোর্টে বসেও এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেলকে জঘন্য ভাষায় গালি দিয়েছিলেন। আর এখন গোটা পুলিশ বাহিনীকেই গালি দিয়ে বসে আছেন।’

এ সময় চলতি মাসে সাংবাদিকদের ‘খামোশ’ বলে গালি দেওয়ার বিষয়টি তুলে কামাল হোসেনের সমালোচনা করেন তিনি আরও বলেন, ‘কাজেই এই ধরনের আচরণ থেকেই বুঝা যায়, ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের আচরণটা কতটা জঘন্য টাইপের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তারা যে পারদর্শী এটা প্রমাণিত হয়।’

‘আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ একটা পরিবেশ থাকুক। আর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনটা সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হোক। ভোটের মালিক জনগণ, দেশের মালিকও জনগণ। জনগণ বেছে নেবে তারা কীভাবে সরকার চায় কাকে চায়। কাজেই সেটাই আমরা আশা করি, এই ধরনের আচরণ তারা বন্ধ করবে।’

ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমি জানি, তাদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আছেন যারা বিএনপির জন্য এ দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল।’

কুষ্টিয়া চারটি আসনে মহাজোটের প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আসন্ন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ আসনে আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-২ আসনে হাসানুল হক ইনু, কুষ্টিয়া-৩ আসনে মাহবুব-উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ আসনে সেলিম আলতাফ জর্জ। এ ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখেন।

এরপর নওগাঁতে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে মহাজোটের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও আগামীতে সরকার গঠন করলে নওগাঁবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন।

সুধাসদনপ্রান্তে ভিডিও কনফারেন্সিং পরিচালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, উপদফতর ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন