বিজ্ঞাপন

‘আমি কি সে পর্যন্ত টিকব?’

July 21, 2018 | 3:35 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: অনেক টাকার দরকার ছিল লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য। টাকা সংগ্রহের জন্য বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীরা এগিয়ে এসেছিলেন। শেষ পর্যন্ত টাকা জোগাড়ও হয়েছিল। নিজ হাতে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য টাকা জমা দিয়েও রাজীব সময় দিলেন না, অস্ত্রোপচারের আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাজীব নিজের সর্ম্পকে আহমদ ছফা’র ‘একটি প্রবীণ বৃক্ষের কাছে প্রার্থনা’ থেকে উদ্ধৃত করে লিখেছিলেন, পিতামহ বনস্পতি: বিনীত সন্তানে তুমি দাও এই বর, সুক্ষ শরীর ধরে এই মাঠে যেন আমি বেঁচে থাকি অনেক বছর।

অনেক বছর আর বেঁচে থাকলেন না রাজীব মীর, মাত্র ৪২ বছর বয়সে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২০ জুলাই) দিবাগত রাত ১টা ৩৭ মিনিটে ভারতের চেন্নাইয়ে গ্লিনিগলস গ্লোবাল সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথবিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাজীব মীর।

রাজীব মীরের বোন সৈয়দা ফারজানা ইয়াসমীন সারাবাংলাকে বলেন, রাজীবের সঙ্গে ভারতে বাবা-মা, বোন–ভগ্নিপতিসহ সবাই রয়েছে। আর কয়েকদিন আগে ফারজানা, রাজীবের স্ত্রী সুমনা খান ও মেয়ে বিভোর ঢাকায় আসেন।

ফারজানা বলেন, তিন ভাইবোনের মধ্যে রাজীব ছিলেন সবার বড়। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ডোনারসহ টাকা-পয়সা সব জমা দেওয়া ছিল। রাজীব নিজের হাতেই টাকা জমা দিয়েছিলেন জানিয়ে ফারজানা বলেন, গত শনিবার অস্ত্রোপচারের তারিখ ছিল। কিন্তু তার আগেই বুধবার তার হার্ট অ্যাটাক হয়, এরপর থেকেই তিনি লাইফ সার্পোটে ছিলেন। হার্ট অ্যাটাকের কারণেই লিভার প্রতিস্থাপনজনতি অস্ত্রোপচার বিলম্বিত করতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

বিজ্ঞাপন

গত এক থেকে দেড় মাস আগে রাজীব মীর জন্ডিসে আক্রান্ত হন। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর তার লিভার সিরোসিস হয়েছে জানিয়ে লিভার প্রতিস্থাপনের কথা বলেন চিকিৎসকরা।

ফারজানা বলেন, গত কয়েকদিন আগেও ওর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়। প্রথমে চিকিৎসকরা একবার বলেছিলেন বুধবার অস্ত্রোপচার হবে। পরে যখন আবার শনিবার নির্ধারণ করা হয় তখন রাজীব একটু মুষড়ে পড়েছিল, মন খারাপ করেছিল। নিজেই বলেছিল, আমি কি সে পর্যন্ত বাঁচব, টিকে থাকব তো আমি?

ফারজানা বলেন, শেষ পর্যন্ত আমার ভাইয়ের সে কথাটাই সত্যি হলো। ভাই টিকল না, চলেই গেল। নিজ হাতে টাকা জমা দিলো, কিন্তু অপারেশন করার আগেই চলে গেল।

কাগজপত্র সব ঠিক হলে আজকেই রাজীবকে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে, বলেন ফারজানা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএ/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন