বিজ্ঞাপন

‘আমি তোর বাপ’ ঢাবি অধ্যাপককে ফোনে হুমকি

July 17, 2018 | 6:37 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাককে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে তিনি ০১ জুলাই শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জিডির বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’

তবে সারাবাংলার প্রতিবেদক জিডি  অনুলিপি দেখালে তিনি বলেন, ‘জিডি হয়েছে দেখতে পাচ্ছি। এখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক জিডিতে উল্লেখ করেন গত ২৮ জুন +৩৩১২৩৪৫৬৭৮ নম্বর থেকে ফোন করে তাকে প্রাণনাশর হুমকি দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাকে একাধিকবার কল দেওয়া হয়েছে।’

অজ্ঞাত পরিচয় নম্বর থেকে ফোন আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেদিনের ঘটনার পর আমাকে দুইবার ফোন দিয়েছিল। অপরিচিত নাম্বার তাই আমি রিসিভ করে জিজ্ঞাসা করলাম ‘কে আপনি?’ জবাবে আমাকে বলে, ‘আমি তোর বাপ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কেন গিয়েছিলি? আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা জীবনে ছাত্রলীগের এমন নজির কখনো দেখিনি।’

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক রাজ্জাকের ধারণা যারা হুমকি দিয়েছে তারা ছাত্রলীগের নেতা।

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেছি। এর কিছুক্ষণ পর দেশি-বিদেশি দুটো নাম্বার থেকে আমাকে অশ্লীল ভাষায় হুমকি দেওয়া হয়।’

আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘যেভাবে আমাকে তুই-তুকারি করে ব্যবহার দিচ্ছিল আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, হয়ত আমার বন্ধু হবে। কিন্তু যখন জিজ্ঞেস করলাম ‘আপনি কে?’ তখন আমাকে বলে, ‘আমি তোর বাপ, হারামজাদা!’ এরপর বাজে মন্তব্য এবং অশ্লীল ভাষায় জানতে চায় আমি কেন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছি?’

‘তারা এর আগে আমাকে গত আট তারিখেও ফোন করেছিল। বিভিন্ন সময় তারা আমাকে হুমকি দিয়েছে। আমি তাদের নাম্বারগুলো নিয়ে শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’

বিজ্ঞাপন

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সাংবাদিকতা বিভাগের এ অধ্যাপক বলেন, ‘তারা যা করছে এগুলো প্রশাসনের প্রশ্রয়ে হচ্ছে। যেভাবে শিক্ষক-ছাত্ররা লাঞ্ছিত হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

আব্দুর রাজ্জজাক বলেন, ‘ছাত্রলীগ সিম্পলি একটা গুণ্ডা বাহিনী। তারা তাদের ঐতিহ্য জানে না। তোফায়েল কিংবা আব্দুর রাজ্জাক সাহেবরা যে ছাত্রলীগ করত, সেটা আর এটা অনেক ব্যবধান। এখন তো তারা গুণ্ডামি ছাড়া কিছু বোঝে না। আমার শিক্ষকতা জীবনের ত্রিশ বছরে ছাত্রলীগের এমন গুণ্ডামি আমি কখনও দেখিনি। তাদের কাছে কেউ নিরাপদ নয়।’

নিরাপত্তা শঙ্কার কথা উল্লেখ করে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যারা নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি তারা বিভিন্নভাবে আমাদের হেনস্থা করতে চায়। সেদিন (১৫ জুলাই) তারা তানজিমের (আইআর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান) বাসা পর্যন্ত অনুসরণ করেছে। যাওয়ার সময় তাঁকে বাজে মন্তব্য করতে করতে গিয়েছে, তার ছবি তুলেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি দেখিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী কেউ নিরাপদ নয়। তারা প্রশাসনের প্রশ্রয়ে যা খুশি তাই করে বেড়াচ্ছে।’

শিক্ষকদের নিরাপত্তার জন্য গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান ও আব্দুল মান্নান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুশাদ ফরীদী এবং তিনিসহ পাঁচ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপচার্যের কাছে দিয়েছেন বলে জানান অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক।

সারাবাংলা/ এসএইচ/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন