বিজ্ঞাপন

‘আলতাফ গান গাইতে গাইতে নিজেই শহীদের কাতারে চলে গেছে’

February 21, 2018 | 9:52 am

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ মাহমুদের কোনো মৃত্যুদিন জানা নেই তাঁর স্বজনদের।

বিজ্ঞাপন

একাত্তরের ৩০ আগস্ট পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকার আউটার সার্কুলার রোডের বাসা থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ধরে নিয়ে যায় আলতাফ মাহমুদকে। এরপর তাঁর আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ভাষা সৈনিক রাজনীতি সচেতন একজন সংস্কৃতিকর্মী, একজন চিত্রকর, একজন সুরকার। ওস্তাদ আব্দুল কাদের খাঁ’র কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিষয়ক তালিম নিয়েছিলেন। ১৯টি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেয়া, ক্যায়সে কাহু, কার বউ, তানহা, বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, দুই ভাই, সংসার, আঁকাবাঁকা, আদর্শ ছাপাখানা, নয়নতারা, শপথ নিলাম, প্রতিশোধ, কখগঘঙ, কুচবরণ কন্যা, সুয়োরাণী দুয়োরাণী, আপন দুলাল, সপ্তডিঙ্গা প্রভৃতি। তিনি রাজনীতি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৫০ সালের দিকে তিনি ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় গণসঙ্গীত গাইতেন। বায়ান্নোর ২৩শে ফেব্রুয়ারি আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো শিরোনামের আলোড়ন সৃষ্টিকারী গানটিতে সুর সংযোজন করে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যান আলতাফ মাহমুদ। ১৯৬৯ সালে জহির রায়হান তাঁর চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেয়া-তে গানটি ব্যবহার করেন।

১৯৭১ সালে আলতাফ মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তাঁর বাসায় গোপন ক্যাম্প স্থাপন করেন। কিন্তু ক্যাম্পের কথা ফাঁস হয়ে গেলে একাত্তরের ৩০ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে আটক করে। তাঁর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। তাঁর বাসা থেকে আরো অনেক গেরিলা যোদ্ধা আটক হয়। এদের অনেকের সাথে তিনিও চিরতরে হারিয়ে গেছেন। পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর সুর করা দেশাত্মবোধক গান প্রচারিত হতে থাকে যা অগণিত মুক্তিযোদ্ধাকে অনুপ্রাণিত করেছিল।

বিজ্ঞাপন

১৯৬৬ এর ১৬ অক্টোবর সারা আরা মাহমুদকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন আলতাফ মাহমুদ। তাদের একমাত্র সন্তান শাওন শাহমুদের জন্ম হয় ১৯৬৮ সালে।

এবারের মাতৃভাষা দিবসে সারাবাংলা মুখোমুখি হয়েছিল শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহধর্মিনী সারা আরা মাহমুদের। এক ঘরোয়া আড্ডায় আলতাফ মাহমুদের সঙ্গীত জীবন, তাঁর রাজনীতি, ব্যক্তিগত, পারিবারিক নানা বিষয়ে স্মৃতিচারণ আর উপলব্ধির কথা জানান সারা আরা মাহমুদ। সাথে ছিলেন কন্যা শাওন মাহমুদ।
একুশের দিনে এই সাক্ষাৎকারটি শহীদ আলতাফ মাহমুদের প্রতি সারা বাংলার সশ্রদ্ধ নিবেদন। সেই সঙ্গে প্রতিটি শহীদ পরিবারের প্রতি ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা দেশের জন্য তাদের আত্মনিবেদনের জন্য।
সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শারমিন শামস্।

 

বিজ্ঞাপন

 

শারমিন শামস্: আলতাফ মাহমুদের সাথে আপনার যৌথ জীবন খুব বেশিদিনের ছিল না। সেই সংক্ষিপ্ত সময়ের সংসারের স্মৃতিটা কেমন?

সারা আরা মাহমুদ
: আমাদের সময়টা অনেক সুন্দর ছিল। বয়সের ডিফারেন্স ছিল অনেক। কবি বেগম সুফিয়া কামাল, আপন খালার মত ছিলেন, আমাদের বিয়েটা তিনিই অ্যারেঞ্জ করেন। সংসার শুরু হল। খুব বেশিদিন সংসার করার হয়নি। শাওনের জন্ম ১৯৬৮ তে। ১৯৭১ এ যুদ্ধ শুরু হল। একাত্তরের আগষ্টে তাকে ধরে নিয়ে গেল বাসা থেকে।

শারমিন শামস্: ওই সংসার জীবনের কথা আরো একটু জানতে চাই…

বিজ্ঞাপন

শাওন মাহমুদ: বাবার লাইফস্টাইলটা একটু বল মা

সারা আরা মাহমুদ: ছবির জগতে খুব পপুলার ছিল। জহির রায়হানসহ যারা ছিলেন তাদের সাথে বন্ধুত্ব ছিল। মাছ খেতে খুব পছন্দ করতেন। জেলেদের নাম ছিল মুখস্ত। আগের দিন বলে দিতেন কী মাছ চাই তার। রান্নাও জানতেন। বাজার করে এনে আমার মাকে দেখিয়ে বলতেন, ‘মা এটা দিয়ে ওটা রান্না করেন’।
বাজার নিয়ে আসার পথে প্রতিবেশিদের দাওয়াত করে আসতেন। বাজার করে আনলে সবাই ভিড় করত যে আলতাফ বাজার করে এনেছে। একগাদা বাজার করত। মাঝে মাঝে পান্তা ভাতের দাওয়াত দিত। সকালবেলা দশ বারো চৌদ্দজন চলে আসত পান্তা খেতে। মাটিতে মাদুর বিছিয়ে পান্তা খাওয়া হত। ইলিশ মাছ ভাজা আর গরুর মাংস দিয়ে। বরিশালের মানুষ ছিলেন, কিন্তু শুটকি পছন্দ করতেন না।

আরেকটা ঘটনা বলি। শাওন তখন খুব ছোট। পাশের বাসায় গিয়ে প্রথম জাম দেখেছে। তো মেয়ে বাসায় এসে কান্না যে জাম খাবে। আলতাফ এটা দেখে সোজা বাজারে গেল আর দেখি গাড়ির পেছনে রাখা জাম- এক মন জাম কিনে এনেছে। মেয়ে কাঁদছে এটা তার ভাল লাগত না। আমি বললাম, তাই বলে এত জাম কিনবে? এখন তো এই জাম সব নষ্ট হবে। বললেন, ‘মেয়ের কান্না আমার ভালো লাগে না’। আর বলত, ‘মেয়েকে মিথ্যে বলা শেখাবে না’। ফলে আমরা কেউ মিথ্যা বলি না সহসা।

শারমিন শামস্: আলতাফ মাহমুদ রাজনীতি সচেতন একজন শিল্পী ছিলেন। আপনার জীবনে আলতাফ মাহমুদের রাজনৈতিক দর্শণ কীভাবে প্রভাব ফেলেছে?

সারা আরা মাহমুদ: আমার সঙ্গে যখন বিয়ে হয়েছে, তার আগে থেকেই রাজনীতিতে জড়িত। ওই সময়ের কথা আমি বই পড়ে বা বন্ধুদের কাছ থেকে জেনেছি। গানপাগল লোক ছিল। গান গাইতে চলে যেত সব জায়গায়। কোন বাধা মানত না। আমি যতটা দেখেছি।

শারমিন শামস্: তখন একটা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন আসছিল। একটা দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ হচ্ছিল- রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন উনি…

সারা আরা মাহমুদ: আমি জানতাম না অতকিছু। কিছুটা বুঝতাম। অতটা সচেতন ছিলাম না। অসহযোগ আন্দোলন শুরু হল। সব বাড়িতে কালো ফ্ল্যাগ। ফেব্রুয়ারিতে একটা প্রোগ্রাম করতে গেল শহীদ মিনারে। করতে পারেনি। একরোখা ছিল খুব। সব আন্দোলন সংগ্রামে এগিয়ে যেত। ওই সময় করেছেন- হাজার তারের বীনা, রাজপথ জনপথ- দুইটাই নৃত্যনাট্য।

শারমিন শামস্: সংগীতে কতটা সময় দিতেন?

সারা আরা মাহমুদ: ম্যাক্সিমাম টাইম দিত। বাসার কাজের জন্যও খুব সময় দিত। খুব সৌখিন ছিল। ফার্নিচার বানাত। ধর একটা রেডিওগ্রাম কিনলো। তার জন্য বক্স বানাতো নিজে ডিজাইন এঁকে। খুব ভাল আঁকত। শাওনের জামায় এঁকে দিত হাঁস পাখি ফুল। আমরা সেগুলো সেলাই করতাম। আর্টের প্রতি দুর্বলতা ছিল।

শারমিন শামস্: সংগীত চর্চার সময়টা কেমন ছিল?

সারা আরা মাহমুদ: কোন একটা চলচ্চিত্রের সুর করছে, আমাদের ডেকে শোনাত। জিজ্ঞেস করত কোন সুরটা রাখব , কোনটা রাখব না।

শারমিন শামস্: আপনার কেমন লাগত তার গান?

সারা আরা মাহমুদ: গান ভাল লাগত। যখন আলাপ হল তখন তো আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি হয়েই আছে। আরো গান ছিল- ঘুমের দেশে ঘুম ভাঙাতে। খুব ভাল লাগতো এই গানটা। এটাও প্রভাতফেরির গান। তখন মানুষ স্যান্ডেল পরে শহীদ মিনারে যেত না। বাসা থেকেই খালি পায়ে যেত। প্রভাতফেরিতে যেতাম। ওরে বাঙালি- এটাও প্রিয় গান ছিল ওনার। তবে ঘুমের দেশে ঘুম ভাঙ্গাতে তার প্রিয় গান ছিল।

শারমিন শামস্: একেকটা দিবস আসে- স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মাতৃভাষা দিবস। আপনার কি মনে হয় এই দিবসগুলোর সঠিক মূল্যায়ন কি আমরা করতে পারি?

সারা আরা মাহমুদ: যখনই মনে হয়, দেশ তো স্বাধীন হল, আর আমরা কী পেলাম? তখন আর স্বাধীনতার সেই স্বাদটা পাইনা। আমরা অনেক কষ্ট করেছি যুদ্ধের পর, নিজেদের গুছিয়ে আনতে, আমাদের তো কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। তখন আমাদের যে সংগ্রাম, অনেক কষ্টের সময় ছিল- হয়তো একান্নবর্তী পরিবারে ছিলাম বলেই সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠে এ পর্যন্ত এসেছি। সেই সময়টা অনেক কষ্টের ছিল, পথ মসৃন ছিল না।

শারমিন শামস্: এই যে সারা দেশে এত শহীদ পরিবার। আপনার কি মনে হয়, তাদের সঠিক মর্যাদা কি আমরা দিতে পেরেছি?

সারা আরা মাহমুদ: সারা দেশেই তো শহীদ আছে। ১৬ ডিসেম্বর, ১৪ ডিসেম্বর- সারাদেশের সব শহীদ পরিবারকে কি এই দিনগুলোতে মনে করা হয়? স্বাধীনতা পাওয়ার পর আমাদের কী হল, এটা ভাবলেই নিজেদের খুব অসহায় মনে হয়। বিজয় দিবস কাদের জন্য?

শাওন মাহমুদ: চার পাঁচ বছর আগে আমাদের কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেছিল, আমাদের কন্ট্রিবিউশন কী দেশের জন্য? এটাও আমাদের জিজ্ঞেস করেছে কেউ কেউ। আমরা জানি শারমিন, আমরা কীভাবে বড় হইছি, আমরা তো বলি না কাউকে। একটা দুইটা বলি, তাই হাহাকার ওঠে। এখন তো আমরা ভাল আছি। কিন্তু সেই সময়টা তো এমন ছিল না।

সারা আরা মাহমুদ: যখন আলতাফকে ধরে নিয়ে গেল, ওই বাসাটা বদলে আরেক জায়গায় চলে এসেছিলাম। আমাদের মেজবোন আর মেজভাই চলে গিয়েছিল আগরতলা। মেজবোন গিয়েছিল মেলাঘরে নার্সিং করতে আর মেজভাই মুক্তিযুদ্ধে। তো ওই সময় তো অনেকের কাছে আমাদের মিথ্যে কথা বলতে হয়েছে যে আমার খালার বাড়ি গেছে দিনাজপুর। কারন পরিবারের অন্যদের নিরাপত্তা। মুক্তিযোদ্ধারা আসত দেখা করতে- হয়তো কলার ঝুড়ি মাথায় নিয়ে- তাতে হয়তো মিনুর চিঠি থাকত। শাওনের সেসব মনে থাকার কথা না। শাওন তখন অনেক ছোট। আর আমার তো আজকাল অনেক কিছু মনে থাকে না। অনেক জরুরি কথা ভুলে যাচ্ছি।
একটা কথা বলি। সেদিন এক জরুরি কাজে ব্যাংকে গিয়েছি। এক ক্লাসফ্রেন্ডের সাথে দেখা। বলল, ‘কী করতে আসছো’? আমি বললাম, একটা চিকিৎসা ভাতা পাই, সেটা নিতে আসছি। সে বলল, ‘আমি তো মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিতে আসছি। জানো এবার কত পাচ্ছি? বায়ান্ন হাজার টাকা’। আমি অবাক হয়ে বললাম, তুমি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়েছো? সে বলল, ‘কেন তুমি পাওনা’? আমি বললাম, না তো। পরে জিজ্ঞেস করলাম তাকে, তুমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলে? কত নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলে?

সে আমার এই প্রশ্নের কোন জবাব দিল না। কোন কথা না বলে উঠে চলে গেল।
তাহলে আামি কী বুঝবো?

যে রিয়েল শহীদ পরিবারের সদস্য সে তো কোন ভাতা পাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত। অথচ এসব ঘটছে।

শারমিন শামস্: তরুণ আলতাফ মাহমুদকে আপনি দেখেছেন। এখনকার তরুদের মধ্যে কি আলতাফ মাহমুদের মত দেশপ্রেমিক, প্রতিবাদী তরুণদের দেখতে পান?

সারা আরা মাহমুদ: কিছু কিছু যে নেই, তা না। আছে। সবার মধ্যে না হোক, কিছু তরুণকে পাই। কেউ কেউ কিন্তু আছে। তারা জানতে চায় সেই সময়ের কথা। কেউ কেউ পড়তে পছন্দ করে, দেশের প্রতি ভালবাসাও দেখি। একদম যে নেই, একথা বললে মিথ্যে বলা হবে।

শারমিন শামস্: রাজনীতি সচেতন একজন শিল্পী তিনি- রাজনীতির সাথে শিল্পকেও বহন করেছিলেন আত্মায়। এখনকার শিল্পীদের মধ্যে এইটা দেখেন?

সারা আরা মাহমুদ: না , একদমই দেখি না। সেই সময় যে কষ্ট করেছে! ওরা দেশের জন্য নিজেকে উজার করে দিতে রেডি ছিল, এখনকার শিল্পীদের অধিকাংশের মধ্যে তো এমন দেখি না। দেশের প্রতি সেই কমিটমেন্টের জায়গাটা নাই।

শারমিন শামস্: আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি – এই গানটা শুনলে আপনার কেমন লাগে?

সারা আরা মাহমুদ: গানটা যখন শুনি, মনে হয়, যে এর সুর করেছে, সেই আলতাফ মাহমুদ গান গাইতে গাইতে নিজেই শহীদের কাতারে চলে গেছে। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে এই গানটা দিয়েই প্রভাতফেরির সূচনা হয় মধ্যরাত থেকে, প্রতিটা অনুষ্ঠানে বাজে গানটা, তখন অসম্ভব ভাল লাগে। সারা মাস জুড়ে বাজানো হয়।

শারমিন শামস্: একুশ হল ভাষার জন্য লড়াই, এইটা একটা অভাবনীয় ব্যাপার ছিল। সারা পৃথিবীতে আর কোন জাতি ভাষার জন্য এভাবে প্রাণ দেয়নি। সেই বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতিকে আমরা কি এখন যথাযথ মর্যাদা দিতে পারছি?

সারা আরা মাহমুদ: হয়তো পারছি না। এখনকার প্রজন্ম কেউ কেউ বাংলাকে ভীষণ অবহেলা করে। বাংলা বই পড়ে না। এর মধ্যেও কিছু কিছু ছেলেমেয়ে আছে, যারা বই পড়ে, চর্চা করে। এদের সাথে ওদের মিলানো যাবে না। আবার এখন তো শুধু হিজাব দেখি। আমাদের সময় মাথায় ঘোমটা দেখেছি। মুরব্বিরা, যেমন বেগম সুফিয়া কামাল মাথায় কাপড় দিতেন…

শাওন মাহমুদ: জাহানারা নানু (জাহানারা ইমাম)

সারা আরা মাহমুদ: হুম,তাদের মাথায় কাপড় দিতে দেখেছি। কিন্তু তখন এত হিজাব দেখিনি। এরকম ঢালাওভাবে।.

শারমিন শামস্: দেশকে নিয়ে কেমন স্বপ্ন দেখেন?

সারা আরা মাহমুদ: ঝকঝকে একটা বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। খুব সুন্দর একটা দেশ হবে। প্রতিদিন পেপারে পড়ি অমুককে মেরে ফেলেছে, তমুককে মেরেছে। এমনটা দেখতে চাইনা। অ্যাক্সিডেন্ট অনেক বেড়েছে। আগে এত হত না। কারন বেপরোয়া হয়ে গেছে। হিংসা, সহিংসতা, হত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা থাকবে না- এমন একটা দেশের স্বপ্ন দেখি।

শারমিন শামস্: এতদিনের একটা সংগ্রাম- এক রকম ভাবে জীবন শুরু করেছিলেন- অনেক কষ্ট যুদ্ধ গেল। এখন কেমন আছেন?

সারা আরা মাহমুদ: এখন খুব ভাল আছি। মেয়েকে নিয়ে। ওর বর টিপুকে নিয়ে, ওর মা ছোটবেলায় মারা গিয়েছিল তো, তাই আমার জন্য ওর এত টান। আমার এখনকার সময় অনেক ভাল। হয়তো আল্লাহ আমার কষ্টের কোটাটা শেষ করে এনেছেন।

শারমিন শামস্: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেবার জন্য। অনেক ভালো থাকবেন সবসময়।

সারা আরা মাহমুদ: তুমিও ভালো থেকো।

ছবি- নূর

সারাবাংলা/এসএস/আরএফ

 

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন