বিজ্ঞাপন

‘ঈদে বন্ধুদের সঙ্গে কীভাবে কোলাকুলি করবো’

June 10, 2018 | 10:21 pm

।। সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে ভালো লাগছে। কিন্তু হাতের দিকে তাকালে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। খুব খারাপ লাগবে যখন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে। তারা আমাকে কীভাবে নেবে সেটাই ভাবছি। ঈদের দিন কীভাবে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কোলাকুলি করবো?

শুকনো মুখে কথাগুলো বলছিলেন দুই মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় হাত হারানো হৃদয়। দীর্ঘ দুমাস ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে রোববার (১০ জুন) বাড়ি যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র পেয়েছে ডাক্তারদের কাছ থেকে। সোমবার ভোরে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করবেন হৃদয়। তার আগে বার্ন ইউনিটের ছয় তলায় ৬০৩ নম্বর কেবিনে কথা হয় হৃদয়ের সঙ্গে।

কেবিনে হৃদয়ের সঙ্গে ছিল তার বাবা রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, অনেক কষ্টের পর আল্লাহ ইচ্ছায় সোমবার বাড়ি যাবো। কিন্তু ছেলেটার জন্য খারাপ লাগছে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৭ই এপ্রিল গোপালগঞ্জ বেতগ্রাম এলাকায় সকালের দিকে দুই বাসের চাপায় ডান হারায় হৃদয়। ওইদিন বিকেলে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। এরপর গত ৮ মে হৃদয়ের হাতের অস্ত্রপচারের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শনিবার (২ জুন) তার হাতে সফলভাবে অস্ত্রপচার করা হয়।

ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম সারাবাংলাকে বলেন, হৃদয়ের কাটা হাতের একটা অস্ত্রপচার হয়েছে। আংশিক চামড়া লাগানো হয়েছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

হৃদয় টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস নামের একটি পরিবহনের হেলপারের কাজ করতো। হৃদয়ের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাড়ারগাতী গ্রামে। বাবার নাম রবিউল ইসলাম। তিনিও একই বাসের সুপারভাইজারের কাজ করেন। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে হৃদয় সবার ছোট।

বিজ্ঞাপন

টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শী ইডেন কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী রাহিমা মনি জানান, ‘তিনিও একই বাসের যাত্রী ছিলেন। বাসের পেছন থেকে দুই সিট আগে বসেছিল হৃদয় তার পাশের ছিটে ছিল আরও এক হেলপাড় স্বপন। সে সময় বাসের জানালা দিয়ে এক হাত বাইরে বের করে রেখেছিলো হৃদয়ের। বাসটি বেতগ্রাম পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় বাস ও ট্রাকটির পেছনের অংশে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই হৃদয়ের ডান হাতটি বিচ্ছিন্ন হয়ে নীচে পড়ে যায়। এ ছাড়াও জানালার গ্লাসে তার মুখ ও নাক কেটে যায়।’

পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

আহত হৃদয়ের বাবা রবিউল ইসলাম জানান, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস বাসের হেলপারের কাজ শুরু করে।

সারাবাংলা/এসএসআর/এমআই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন