বিজ্ঞাপন

উন্নয়নশীলের স্বীকৃতি উদযাপন: পথে পথে ভোগান্তি

March 22, 2018 | 6:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রোগী নিয়ে মিরপুর যাবেন মাসুদ হোসেন। কিন্তু প্রায় পৌনে এক ঘন্টা অপেক্ষা করেও কোনও বাসে উঠতে পারেন নি। নেই কোনও সিএনজি এমনকী কোনও উবারও কল করতে পারেননি। মাসুদ হোসেন বলেন, কয়েক দিন পর পর এভাবে যদি রাজনীতিবিদরা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয় তাহলে দেশের সাধারণ মানুষ কই যাবে? বৃহস্পতিবার দুপুরে এভাবেই ক্ষোভ জানান মাসুদ হোসেন।

স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আর এ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সরকার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকার বেশকিছু সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এতে করে ভোগান্তিতে পড়ে মাসুদের মতো অনেকেই। বিশেষ করে রোগী,শিশু এবং বৃদ্ধরা পড়েন সীমাহীন ভোগান্তিতে।

বিজ্ঞাপন

বেলা যত বাড়ে ভোগান্তিও বাড়ে পাল্লা দিয়ে। রাস্তায় দূরপাল্লার কোনও বাস না থাকায় পথে বের হওয়া অনেকেই দেখা যায় দাঁড়িয়ে থাকতে। রাজপথে অটোরিকশার সংখ্যাও চোখে পড়ে কম। কিছু রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় মানুষ নিজের গাড়ি নিয়েও বের হতে পারেননি।

রিকশাচালকরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া চেয়ে বসে আছেন। মানুষ অগত্যা সেই ভাড়াতেই যাতায়াত করছে।

বিজ্ঞাপন

সেগুনবাগিচার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ ছিলো সফিউদ্দিন আহমেদের। দুপুর দুইটার দিকে যানজটের কারণে তাকে হেটে আসতে হয়েছে শাহবাগ থেকে।  তিনি বলেন, তীব্র রোদে এমনিতেই অনেক কষ্ট হচ্ছে। তারওপর এভাবে এতোটা পথ হেঁটে আসতে গিয়ে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। সবকিছুতে এমন বাড়াবাড়িকে সাধারণ ভালোভাবে নেয় না বলে মন্তব্য তার।

শাহবাগ থেকে ক্যান্টনমেন্টে যাবেন ফিরোজা বেগম। তিনিও একই কথা বলেন। নেই বাস-নেই সিএনজি-নেই উবার। কীভাবে কখন বাসায় যাব-জানিনা-মন্তব্য তার।

দুপুরের দিকে, রাস্তা একেবারেই ফাঁকা হয়ে যায়, যানবাহন ছিল একেবারেই কম।

বিজ্ঞাপন

কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবন হয়ে স্টেডিয়াম, শাহবাগ থেকে মৎস ভবন হয়ে স্টেডিয়াম, শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসক্লাব থেকে বায়তুল মোকাররম, দোয়েল চত্ত্বর থেকে সচিবালয় হয়ে স্টেডিয়াম-এই সড়ক গুলো বন্ধ রয়েছে। কেননা এ পথেই শোভাযাত্রাগুলো যাবে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পল্টনের কালভার্ট রোডে আসবেন জিয়াউল হাসান। কিন্তু শাহবাগ থেকে পল্টনে আসার সরাসরি কোনও বাস না পেয়ে রমনা পার্কের ভেতর দিয়ে হাটা শুরু করেন। এ সময় তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, জোর করে কখনও এসব কাজ হয় না, বরং মানুষ শ্রদ্ধা হারায়।

তিনি বলেন, তীব্র রোদের ভেতর মানুষ হেটে যাচ্ছে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ আর রোগীদের যে অবণর্নীয় দুর্ভোগ-তাতে করে কেবল বিতশ্রদ্ধ হই রাজনীতির ওপর- বলেন তিনি।

পল্টনে অফিস সুমিত্র নাথের। প্রতিদিন বাসে সায়েন্স ল্যাব হয়ে শাহবাগ দিয়ে পল্টন আসেন। আজ সায়েন্স ল্যাব থেকে নিউমার্কেট হয়ে টিএসসি দিয়ে আবার শাহবাগ হয়ে বাংলামোটর দিয়ে মগবাজার হয়ে কাকরাইল এসেছে বাস। সেখানে থেকে হেটে অফিস এসেছেন সুমিত্র।

সুমিত্র বলেন, জানযট-দুর্ভোগের নগরী আজ ঢাকা, এছাড়া আর কিছু বলার নেই।

এর আগে গতকাল রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকার ১১টি অঞ্চলে যানবাহন চলাচল সীমিত থাকবে। এসব সড়ক এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং কড়া তল্লাশি থাকবে বলেও জানানো হয়। এছাড়াও, হাতব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, ব্যাক-প্যাক, সিগারেট লাইটার কিছু কিছু জায়গায় বহন করা নিষিদ্ধ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং এর চারপাশের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলে সমস্যা হবে। তাই ওই সম‌য়ে শাহবাগ, কাকরাইল মসজিদ, নাইটেংগেল, ফকিরাপুল, শাপলা চত্ত্বর, গুলিস্থান, ফুলবাড়ীয়া,চানখারপুল, বকশিবাজার, পলাশী, নীলক্ষেত এলাকায় গাড়ি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাইভারশনের প্রয়োজন পড়বে।

সারাবাংলা/জেএ/এমএস

আরও পড়ুন

বেহাল স্টেডিয়ামে বর্নিল আয়োজন
সচিবালয়ে ছিল ছুটির আমেজ

 

 

 

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন