বিজ্ঞাপন

এমপি হতে চান সিলেটের নারী নেত্রীরা

October 15, 2018 | 10:48 am

বিলকিছ সুমি, সিলেট

বিজ্ঞাপন

আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নারী নেত্রীরা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অনেক নারী নেত্রী এমপি প্রার্থী হতে আগ্রহী। দেশের বড় দুইটি দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কমিটির শীর্ষ পদে আছেন, এমন অনেক নারী নেত্রীই এবার দলীয় মনোনয়ন চাইছেন। তাই নারী নেত্রীদের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম জোট- মহাজোটের রাজনীতি।

তাছাড়া চলতি সংসদের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অথবা সাবেক নারী এমপিদের অনেকেও সরাসরি নির্বাচন করার প্রত্যাশা থেকে গণসংযোগও করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এ তালিকায় আরও রয়েছেন সমমনা বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ পদধারী এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী নারী ব্যক্তিত্ব।

সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ-২ আসনের প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের স্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য ড. জয়া সেন গুপ্তা, মৌলভীবাজার-৩ আসনের প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর স্ত্রী বর্তমান এমপি সৈয়দা সায়রা মহসিন ছাড়াও সরাসরি নির্বাচন করতে মাঠে কাজ করছেন হবিগঞ্জ-১ আসনে সংরক্ষিত আসনের এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী শামীমা শাহরিয়ারও সরাসরি নির্বাচন করতে কাজ করছেন নিজ এলাকায়।

বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনে বর্তমান এমপি সৈয়দা সায়রা মহসিন বলেন, এমপি হিসেবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করছি। এ বিবেচনায় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে নেত্রী (শেখ হাসিনা) এবার তাকে নিরাশ করবেন না বলেই তার দৃঢ় বিশ্বাস।

মনোনয়ন প্রত্যাশী সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেন গুপ্তা বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের কল্যাণ ও সমাজসেবার সুযোগ হয়েছে। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ, দেশ পরিচালনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণের প্রত্যাশা থেকেই দলের মনোনয়ন চাইব।

হবিগঞ্জ-১ আসনের মহিলা সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন, এলাকার অসংখ্য নেতাকর্মী ও মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনি। দল ক্ষমতায় ও নিজে সংরক্ষিত নারী এমপি থাকলেও কোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হননি। দলীয় মনোনয়ন পেলে সবার সুসংগঠিত প্রচেষ্ঠায় জয়ী হতে পারবেন বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।

বিজ্ঞাপন

সুনামগঞ্জ-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী শামীমা শাহরিয়ার জানান, এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় এবার সরাসরি আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আশাবাদী তিনি।

এদিকে, সংরক্ষিত কোটায় নয়, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে অংশ নিয়ে জনপ্রতিনিধি হতে চান বিএনপির একাধিক নারী নেত্রী। দলের হাইকমান্ডও এ বিষয়টিকে দেখছে ইতিবাচকভাবে। তাই তৃণমূল পর্যায়ে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন দলটির নারী নেত্রীরা। জনসংযোগ, উঠান বৈঠক, কর্মীসভাসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছেন দলটির সাবেক সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে সাবেক ছাত্রনেত্রীরা। নারী নেত্রীরা জানাচ্ছেন, সাধারণ আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়াও দলের যে কোনো দুঃসময়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মামলা-হামলায় জর্জরিত নেতারা আত্মগোপনে চলে গেলে তাদের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে আরও সক্রিয় হতে হয়। রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামেও সবার আগে থাকতে হয়। বিশেষত ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খালেদা জিয়া তার বাসভবন ও কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকার সময় নারী নেত্রীরা তার পাশে থেকে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। সে সময় নারী নেত্রীদের সার্বিক কার্যক্রমের মূল্যায়ন করে তরুণদের পাশাপাশি শিক্ষিত ও মার্জিত নারী নেত্রীদেরও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পরপরই দলের নির্বাহী কমিটিতে দুজন নেত্রীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। আশান্বিত নারী নেত্রীদের প্রত্যাশা, নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রেও তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যার ফলে ইতিপূর্বে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। এখনও স্বামীর ফিরে আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তিনি। ইলিয়াসের অবর্তমানে সাংগঠনিক ও সাংসারিক সব ধরনের কাজই অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

স্বামীর অবর্তমানে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে আসীন এই নেত্রীই দলের মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। তবে স্থানীয় পর্যায়ে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই আসনে স্থানীয় জনসাধারণ ও নেতাকর্মীরা ইলিয়াসপত্নীর বিকল্প চিন্তা করছেন না। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দলও এরইমধ্যে লুনাকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য জানিয়ে দিয়েছেন।

হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনে আগ্রহী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ও ঢাবি রোকেয়া হল শাখার ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শাম্মী আক্তার। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া তিনি নির্বাচনের কথা চিন্তাও করেন না। তবে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে জনগণের সেবায় সরাসরি নির্বাচিত এমপি হতে চান। কারণ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে একজন এমপির কাজ করার ক্ষেত্র খুবই সীমিত।

বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে সাবেক মহিলা এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদা রব্বানীও সরাসরি নির্বাচন করতে চান। তিনি জানান জাতীয় নির্বাচনের জন্য বিএনপির দেওয়া দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে না তার দল। আর দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবেন বলে জানান এই নেত্রী।

সারাবাংলা/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন