বিজ্ঞাপন

‘এলিজাবেথের সঙ্গে করমর্দনের রেজাল্ট কোথায়’ প্রশ্ন বিএনপির

April 21, 2018 | 7:20 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রোহিঙ্গা সমস্যার দৃশ্যমান সমাধান না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য সফর ও রানী এলিজাবেথের সঙ্গে বৈঠকের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য দিচ্ছিলেন। জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ৩৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় যুব সংহতি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

রাষ্ট্রীয় সফরে এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বৃটেনের রানীর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেই সাক্ষাতের একটি হাস্যোজ্জ্বল ছবি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয় শনিবার (২১ এপ্রিল)।

বিজ্ঞাপন

হাস্যোজ্জ্বল ওই ছবির বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে পত্রিকায় দেখলাম ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ, যিনি কমনওয়েলথেরও প্রধান, তার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করমর্দন করছেন। কিন্তু রেজাল্ট কী দেখতে পাচ্ছি? রেজাল্ট দেখতে পাচ্ছি, বার্মা থেকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে এখন পর্যন্ত তাদের একজনকেও আপনারা ফেরত পাঠাতে পারেন নি।’

সরকারের পররাষ্ট্রনীতিকে ‘চরম ব্যর্থ পররাষ্ট্রনীতি’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত এতো বন্ধু, সম্পর্কের সর্বোচ্চ স্তরে তারা অবস্থান করছে, সেই ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানির এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহ হয়নি। এখনো বর্ডারে আমাদের লোকদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে— তার কোনো সুরাহা এ সরকার করতে পারেনি।’

বিজ্ঞাপন

‘তারা সুরাহা করতে পারবে না, পারবে না এ জন্য যে, জনগণের কোনো সমর্থন এদের নেই। বার বার আমরা একটা কথা বলেছি, এরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের মতো এতো দীর্ঘ দিনের পুরোনো রাজনৈতিক দল, যাদের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের। তাদেরকে আজ বন্দুক-পিস্তলের ওপর নির্ভর করতে হয়। জনগণের ওপর তারা নির্ভর করতে পারে না। জনগণ সম্পূর্ন তাদের বিরুদ্ধে চলে গেছে’— বলেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রীকে আটকে রেখে তারা মনে করছে এখানে একটা নির্বাচন হবে। কোন নির্বাচন? যে দেশে একটি রাজনৈতিক দল তার স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারে না, জনসভা করতে পারে না, জনগণের কাছে যেতে পারে না, কোথাও গিয়ে মিটিং করলে বলে নাশকতার মিটিং করছে!’
‘যে দেশে একটা পোস্টার লাগানো যায় না, লিফলেট বিতরণ করা যায় না, এই অবস্থায় নির্বাচনের কথা বলতে তো লজ্জা করা উচিত’— বলেন বিএনপির মহাসচিব।

এসময় সরকারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘তার চেয়ে ঘোষণা করে দিন, অমরা থাকব চিরকাল। যতদিন বন্দুক পিস্তল আছে ততো দিন থাকব। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা সম্ভব হবে না। কোনো দিন হয়নি। আয়ূব খান ছিলেন ১২ বছর—করুণভাবে বিদায় নিতে হয়েছে। হুসেইন মোহম্মদ এরশাদ ছিলেন— বিদায় নিতে হয়েছে।’

‘তাই বলছি নির্বাচন কীসের? নির্বাচন তখনই হবে, যখন এই দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। নির্বাচন তখনই হবে, যখন এখানে বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে আসবেন এবং আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। নিনর্বাচন তখনই হবে, যখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমাকে আপনি কোনো কিছুই করতে দেবেন না, হাত-পা বেঁধে রাখবেন, বলবেন সাঁতার দাও— তাতো হবে না। সুতরাং শুভ বুদ্ধির উদয় হোক আপনাদের মধ্যে। অন্তত দেশনেত্রীকে অবিলম্বে মুক্তি দিন, যেন তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। তিনি নিজে যেভাবে চাইবেন সেভাবে তার চিকিৎসা হবে। একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করুন—তাহলেই এ দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে’— বলেন ফখরুল।

জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি মহসিন সরকারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) টি আই এম ফজলে রাব্বি, মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবীব লিংকন।
সারাবাংলা/এজেড/এমএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন