বিজ্ঞাপন

ঐক্যফ্রন্টের বিজয় র‌্যালি: খালেদার মুক্তি, ধানের শীষে ভোট

December 16, 2018 | 1:53 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত ‘বিজয় র‌্যালি’ থেকে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা আর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি উচ্চারিত হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হাজার দেড়েক লোকের অংশগ্রহণের অনুষ্ঠিত ‘বিজয় র‌্যালি’ শেষ পর্যন্ত নির্বাচনি মিছিলে পরিণত হয়।

র‌্যালি থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই’, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘আমার নেত্রী আমার মা, জেলে থাকতে দেব না’, ‘৩০ ডিসেম্বরের মার্কা কী?— ধানের শীষ’, ‘১৬ ডিসেম্বরের মার্কা কী?—ধানের শীষ’, ‘সারাদেশের মার্কা কী?— ধানের শীষ’, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও লও লও সালাম’ ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই বিজয় র‌্যালি শুরু হয়। র‌্যালিটি কাকরাইল মোড় হয়ে শান্তিনগর ঘুরে নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়।

পূর্ব নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর র‌্যালি শুরু হলেও সর্বসাকুল্যে হাজার দেড়েক লোক অংশ নেয় র‌্যালিতে। অবশ্য র‌্যালির আগে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের এ কর্মসূচি সারাদেশে এক যোগে পালন করা হচ্ছে। তাই খুব বেশি লোক এ র‌্যালিতে হবে না।’

বিজ্ঞাপন

বেলা সাড়ে ১১টার সময় একটা খোলা পিকআপ ভ্যানে চড়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুব্রত বড়ুয়া, ঢাকা-১৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুস সালাম, ঢাকা-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার আবু আসফাক র‌্যালিতে অংশ নেন। এদের মধ্যে সুব্রত চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্নার হাতে ছিল ধানে গাছে ছড়া।

পেছনে আরেকটি খোলা ট্রাকে ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস মহিলা দলের নেতাকর্মী, সমর্থকদের নিয়ে র‌্যালিতে অংশ নেন। পুরো র‌্যালিতে দুই হাতে ধান গাছের ছড়া প্রদর্শন করেন আফরোজা আব্বাস।

র‌্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৪৮তম বিজয় দিবসটি হওয়ার কথা ছিল আনন্দের, উৎসবের। কিন্তু আমরা আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত, আমরা আজকে আতঙ্কিত, উৎকণ্ঠিত— এই দেশে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কী, থাকবে না!’

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে সব রকম পক্ষপাতিত্ব শুরু করেছে সরকার। নজিরবিহীনভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মী- এমনকি প্রার্থীদেরকেও তারা গ্রেফতার করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং তাদেরকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে।’

‘আজকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচনকে প্রহসনের পরিণত করবেন না। এইভাবে হামলা, মামলা, গ্রেফতার করে নির্বাচন থেকে জনগণকে বিরত রাখতে পারবেন না’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে নির্ধারণ হবে, বাংলাদেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্রে থাকবে, নাকি গণতন্ত্রে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতার ফল ভোগ করবে, কী করবে না, বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতিত হয়ে একটা স্বৈরাতন্ত্রের মধ্যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে যাবে, নাকি বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের দিকে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল মির্জা আব্বাসের ওপর নজিরবিহীন হামলা হয়েছে, মাহবুব উদ্দিন খোকনকে গুলি করা হয়েছে, সুব্রবত চৌধুরীর ওপরে হামলা হয়েছে। আজকে আমাদের র‌্যালিও বাধাগ্রস্থ হয়েছে। গতকাল আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিদিন গ্রেফতার করা হচ্ছে।’

‘আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, গ্রেফতার বন্ধ করুন। অন্যথায় এর দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার দায়িত্ব নিতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমাদের র‌্যালি ছিল ২টায়। সেটা পরিবর্তন করে সকাল ১০টায় নিয়ে আসা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব ছিল।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এ দেশে যত নির্বাচন হয়েছে, সমস্ত নির্বাচন ক্ষমতাসীনরা ছিনতাই করেছে। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। প্রার্থীদের ওপর অত্যাচার করেছে, নির্যান্ত করেছে, গ্রেফতার করেছে। দেখতে দেখতে পাঁচ বছর হয়েছে। সরকার মনে করেছিল যে, এই নির্বাচনটাও বোধ হয় ২০১৪ সালের মতো ওয়াকওভার পাবে।’

‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার ওয়াকওভার দেব না। আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি, প্রার্থী দিয়েছি এবং তখন সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সরকার এখন একের পর এক নির্যান্ত করছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়ি বহরে হামলা করা হয়েছে। সারাদেশে অসংখ্য জায়াগা ধানের শীষ প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছ’— বলেন মান্না।

তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি আমরা প্রথম আজ আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি। এই যে র‌্যালি আমরা শুরু করব, সেটা বিজয় র‌্যালি। এই র‌্যালি ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করে, বিজয়কে স্মরণ করে র‌্যালি করছি এবং সামনে যে বিজয়, সেটা অর্জন করার জন্য করছি।’

সারাবাংলা/এজেড/এসএমএন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন