বিজ্ঞাপন

কনক্রিটের শহরে আবারও ফিরে আসা

June 18, 2018 | 5:29 pm

॥ এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ॥

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ইট-পাথরের এই শহর ঢাকা ছেড়ে ছুটি নিয়ে এবার বাড়িতে গিয়েছিলেন অনেকেই। উদ্দেশ্য পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঈদের আনন্দময় মুহূর্তগুলো কাটানো। হয়ত পরিবার-পরিজনদের নিয়ে কাটানো আনন্দময় মুহূর্তগুলো আরও দীর্ঘ হতে পারত। কিন্তু সে উপায় নেই। কারণ ফেরার তাড়া আছে, জীবিকার তাগিদ আছে। তাই তো কোনোমতে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি শেষে সোমবার (১৮ জুন) থেকে রাজধানী শহরে ফিরতে শুরু করেছেন গ্রাম ছেড়ে আসা মানুষেরা।

রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও মহাখালী বাস টার্মিনালে সোমবার সকাল থেকে ঢাকামুখি মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

স্ত্রীকে নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি খুলনায় গিয়েছিলেন অপসোনিন ফার্মার কর্মকর্তা জুয়েল। তাকে আগামীকাল (১৯ জুন) থেকে অফিস করতে হবে। তাই তো দুপুরেই তিনি ফিরে এসেছেন ঢাকায়।

বিজ্ঞাপন

গাবতলীতে ঈগল পরিবহনের বাস থেকে নামার পর জুয়েল সারাবাংলাকে বলেন,’ঈদের দুই দিন আগে বাড়ি গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ চলে আসতে হয়েছে। আগামীকাল সকাল থেকে অফিস।’

বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করে ভালোভাবে ঢাকায় ফিরতে পেরে তিনি খুব খুশি। যশোর থেকে আসা মাহবুব নামের আরেক যাত্রীও এই খুশির কথা জানালেন।

সোমবার গাবতলী ও মহাখালী বাসস্ট্যাড ঘুরে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা-শ্রেণী পেশার মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। যেন ফিরে আসার ঢল নেমেছে।

বিজ্ঞাপন

এসব যাত্রীদের কারো কারো কণ্ঠে উঠে এসেছে চালকদের বেপারোয়া যানচলাচলের কথা। মহাসড়কে বেপারোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণে কোনো কোনো যাত্রী নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছিলেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। আর বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তো সেই আগের মতোই।

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির এলএলবির শিক্ষার্থী নিশাদ জাহিন। ঈদের ছুটিতে চার মাস পর গ্রামের বাড়ি বরিশাল গিয়েছিলেন। গোল্ডেন লাইনে করে গাবতলীতে ফেরা এ যাত্রী সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামে বাবা-মা ও কাজিনদের সঙ্গে ঈদ করেছি। এবার ঈদে খুব মজা হয়েছে। আনন্দে কেটেছে পুরোটা সময়।’

 এই তরুণী যখন ঢাকায় ফিরছিলেন তখন তার হাতে ছিল পাখির খাঁচা। জানালেন, পাখিকে ভালোবাসেন খুব।

বিজ্ঞাপন

একই বাসে করা ফেরা তন্ময় সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফেরিঘাটে জ্যাম ছিল না। গ্রামে ঈদ কাটিয়ে ভালোভাবেই ফিরে এসেছি। তবে কার আগে কে যাবে এই প্রতিযোগিতায় ছিল ঈগল আর গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাস। খুব ভয় পেয়েছি। তবে ভাগ্য ভালো কোনো বিপদ হয়নি।’

মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ময়মনসিংহ থেকে ফিরে আসা বেসরকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আসার পথে রাস্তায় তেমন জ্যাম ছিল না। তবে অন্য সময়ের চেয়ে ভাড়া বেশি। চালাকেরাও বেপারোয়াভাবে ড্রাইভ করছিলেন।’

কিশোরগঞ্জ থেকে আসা নাবিদ বলেন, ‘আগামীকাল সকালে অফিস। তাই দুপুরেই চলে এসেছি।’

ঢাকা থেকে যশোর রোডে চলাচল করে আল ফালাইন পরিবহন। ঈদ ফেরত যাত্রীদের ঢাকায় নিয়ে আসা এ পরিবহনের চালক ফাহিম বলেন, ‘ঈদ করে যাত্রীদের ঢাকায় আসা শুরু হয়ে গেছে। অসংখ্য যাত্রী আসছে। বিকেলের দিকে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়বে।’

জানতে চাইলে গাবতলীর হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার ম্যানেজার জাকির মল্লিক বলেন, ‘কর্মজীবীদের অনেকেই ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন। যারা গ্রামে গিয়েছেন তারা যাতে ভালোভাবে ঢাকায় ফেরত আসতে পারে, সে জন্য আমরা পর্যাপ্ত বাস রেখেছি।’ তবে বেশি ভাড়া রাখার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

একই রকম তথ্য জানিয়েছেন শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার আলমগীর কবিরও। তিনি বলেন, ‘ঈদে যে রকম ভাড়া নেওয়া হয় সে রকমই নিচ্ছি। আমরা বেশি ভাড়া নিচ্ছি না।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন