বিজ্ঞাপন

কন্যা সন্তানের নিরাপত্তায় ‘হোক প্রতিরোধ’ নিয়ে একজন চিকিৎসক

April 5, 2018 | 6:48 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘প্রিয় মা, আপনার ছেলেকে আপনার হ্যারাসমেন্টের গল্পটি বলুন। কোনো মেয়েকে হ্যারাস করার আগে তার বুক কাঁপবে। হ্যাশট্যাগ দিয়ে এরপর লেখা হোক প্রতিরোধ।’ এমনই একটি প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক ইমরান কায়েস।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি বুধবার (৪ এপ্রিল) রাতে এই ছবিটিও পোস্ট করেন। ছবিটি শেয়ারের আগে ওই পোস্টে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেখা হয়েছে, হোক প্রতিরোধ, স্ট্যান্ড অ্যাগেইনেস্ট রেইপ, হোক প্রতিরোধ। রাতে পোস্ট করা ছবিটি এরইমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। পোস্টটি শেয়ার করেছেন ৩ হাজার ৪৬০ বার। এতে লাইক দিয়েছেন ফেসবুকের ২৬০০ গ্রাহক। কমেন্টেও হোক প্রতিরোধের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন অনেকে।

ডা. ইমরান কায়েসের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার এ প্রতিবেদকের। ‘কোন সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এ ধরনের প্রতিবাদ’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব শীঘ্রই আমি একটি কন্যা সন্তানের বাবা হবো। পৃথিবীতে এখনও না আসা আমার কন্যা সন্তানটির জন্য একটি নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তোলার প্রচেষ্টা থেকেই এ প্রতিবাদের ভাবনাটি মাথায় আসে। সেখান থেকেই এ প্রতিবাদের সূচনা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘গত অনেকদিন ধরেই ধর্ষণের ঘটনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। গত তিন মাসে ১৭৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে যেখানে গত বছরে এই সংখ্যা ছিল ১৪৫। তার মানে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অথচ কেবল প্রতিবাদ বা হাউকাউ করে লাভ হচ্ছে না।’

‘একজন মানুষ ধর্ষক কেন হচ্ছে, তার মানসিক সমস্যার জায়গাটায় আমরা যেতে পারছি না। রাষ্ট্রও হয়ত ততটা সেনসিটিভ না, কোনো একটা কারণে কোথাও আমাদের সমস্যা রয়েছে। এসব কারণে সমমনা কিছু মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এ প্রতিবাদ’- বলেন এ চিকিৎসক।

‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসা বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে কেন এ প্রতিবাদ’ জানতে চাইলে ডা. ইমরান কায়েস বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, জাতিগতভাবেই আমাদের কোথাও মানসিক সমস্যা হচ্ছিল। আমাদের মধ্যে সংবেদনশীলতা কমে গেছে, কেউ কারও জন্য ফিল করি না। আদর্শ থেকে আমরা অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি, উন্নয়ন বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে কিন্তু শিক্ষা আর নৈতিকতা বাড়েনি, বরং দিনকে দিন কমে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

‘ধর্ষণের মতো একটা ঘটনা কেন বাড়ছে তার জন্য মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ খুব জরুরি হয়ে পড়েছে, কোথায় ঘাটতি রয়েছে সেটা বের করার জন্য কাজ করা দরকার।’

চিকিৎসক ইমরান বলেন, “প্ল্যাকার্ড ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছি, যেন ছোটবেলা থেকেই পুরুষরা সেটা নিয়ে ভাবতে শেখে। দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী এটা দেখে যেন মাথার ভেতরে কিছু গেঁথে যায়। আমরা কয়েকজন একসঙ্গে হয়েছি। আমাদের সঙ্গে আরও রয়েছেন কয়েকদিন আগে উত্তরাতে প্ল্যাকার্ড হাতে একা দাঁড়ানো আফসানা কিশোয়ার লোচন। ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরাও রয়েছেন, রয়েছেন অন্যান্য সেক্টরের বেশকিছু সমমনা মানুষ। ‘হোক প্রতিরোধ-স্ট্যান্ড অ্যাগেইনস্ট রেইপ’ নামে একটি গ্রুপ করা হয়েছে, এই গ্রুপ থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে। তবে সরকারকে আমাদের পাশে চাই বলেন” ডা. ইমরান কায়েস।

সারাবাংলা/জেএ/একে

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন