August 26, 2018 | 6:14 pm
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রির এ সময়ের তরুণ জনপ্রিয় অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত। চার বছর হলো তিনি রূপালী পর্দায় পথচলা শুরু করেছেন। প্রথম ছবি দিয়েই বাজিমাৎ করেন। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার অভিনীত সবশেষ দু’টি ছবি হিটের তকমা পেয়েছে। বনি সেনগুপ্ত কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশেও পরিচিত হয়ে উঠেছেন। সেই জনপ্রিয়তার সূত্র ধরে তিনি প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের ছবিতে। ওয়াজেদ আলি সুমন পরিচালিত ছবিটির নাম ‘মনে রেখো’। এতে তার সঙ্গে জুটি হয়েছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি। ঈদুল আজহায় ৭০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি।
ঈদ উৎসবে নিজের ছবি মুক্তি পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত বনি। এই ছবিসহ তিনি তার ক্যারিয়ার, মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে।
বাংলাদেশের ঈদ উৎসবে আমার ছবি মুক্তি পেয়েছে। এটা ভালোলাগার একটি বিষয়। এটি বাংলাদেশের লোকাল প্রোডাকশনের ছবি। সেজন্য কাজটি শুরু করার পর থেকেই বাড়তি ভালোলাগা ছিল।
বাংলাদেশে এতোটা ভালো কাজ হয় আমি ভাবিনি। কলকাতার অনেকে বলেন, বাংলাদেশে কাজ অনেক ধীর গতির। কিন্তু আমি কাজ করতে গিয়ে বুঝতে পারলাম বাংলাদেশের কাজ মোটেই ধীরগতির নয়। কলকাতা আর বাংলাদেশের কাজের মান একই।
আরও পড়ুন : বিক্রি হচ্ছে ৭৮ বছরের আরকে স্টুডিও
অনেক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। ছবি দেখে অনেকে তো পোস্টারসহ সেলফি তুলে পাঠাচ্ছেন। এটি একটি মৌলিক গল্পের ছবি। মানুষ রিমেক ছবি দেখতে দেখতে ক্লান্ত। আমার মনে হয় গল্পের কারণেই সবাই ছবিটি দেখছেন।
বিজ্ঞাপন
মাহি আমার আগে থেকে অভিনয় করছেন। আমার থেকে তার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। সেটে তিনি কখনও সিনিয়র ভাব দেখাননি। খুব বন্ধুসুলভ। অভিনয় করতে গিয়ে ভালো বন্ধুত্ব তৈরী হয়ে গিয়েছিলো। এই বন্ধুত্বের কারণে রোমন্টিক দৃশ্যে অভিনয় করা সহজ হয়েছে।
অভিনেত্রী হিসেবে অবশ্যই কৌশানিকে বেশি নম্বর দেবো। কৌশানি খুব ভালো অভিনয় করেন। এরপর যথাক্রমে মাহি এবং ঋত্বিকা।
বিজ্ঞাপন
(হাসি) ব্যাপারটি আসলে এরকম না। আমি যদি উত্তর দেয়া বেলায় কৌশল অবলম্বন করতাম তাহলে মাহিকে বেশি নম্বর দিতাম। আমি তিনজনের সঙ্গেই অভিনয় করেছি। আমার সবচেয়ে কৌশানির সঙ্গে অভিনয় করতে ভালো লেগেছে।
আরও পড়ুন : গল্প পরিবর্তন হওয়ায় প্রচার হচ্ছে না টেলিছবি
খুব একটা পার্থক্য চোখে পড়েনি। তবে টেকনিক্যাল কিছু সমস্যা রয়েছে। কলকাতায় সেসব থাকলেও বাংলাদেশে এখনও পৌঁছায়নি। এজন্য কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা তৈরী হয়। আমি কোন ডামি ব্যবহার করিনা। নিজেরটা নিজে করি। ফাইট দৃশ্য করার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। শট দেয়ার সময় মাঝে মাঝে শারিরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। পরিকল্পনা মতো শট নেয়া যায়নি।
বিশেষ কোন কারণ নেই। গল্পটি আমার ভালো লেগেছিল। আগেও আমার কাছে বাংলাদেশ থেকে ছবি করার প্রস্তাব এসেছে। গল্প ভালো না লাগার কারণে অভিনয় করা হয়নি। তাছাড়া ছবির পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমন আমার মায়ের (পিয়া সেনগুপ্ত) সঙ্গে কাজ করেছেন কলকাতায়। মা বলেছেন তিনি খুব ভালো নির্মাতা। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটিও নির্ভরযোগ্য। সবমিলিয়ে মনে হলো একটি একটি ভালো কাজ হবে। সেকারণে রাজি হয়ে গেলাম।
বিজ্ঞাপন
আমার সব ছবির গল্প আলাদা। আমি কমার্শিয়াল ছবি করি। প্যারালাল ছবিতে এখনই অভিনয় করতে চাইনা। এরকম ছবি করে অভিনয়ে আরও পোক্ত হতে চাই। আমার যথেষ্ট বয়স রয়েছে। চাইলে যেকোন চরিত্রে অভিনয় করতে পারব। সামনে আরও ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ আছে। আমাকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া চরিত্রে চালিয়ে দেয়া যায়। আমাদের দর্শকরা একটা জিনিসে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। যদি নতুন কোন চরিত্রে এক্সপেরিমেন্ট করি তাহলে সেটা ঠিকঠাক গ্রহণ করতে চান না।
আরও পড়ুন : দুই গুণী পাচ্ছেন আলতাফ মাহমুদ পদক
বাংলাদেশের আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করার কথা চলছে। সেসব কথা প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। কলকাতায় সেপ্টেম্বেরে ‘গার্লফ্রেন্ড’ নামে একটি ছবি মুক্তি পাবে। আমার সঙ্গে এই ছবিতে কৌশানি আছেন। রাজিব কুমারের একটি ছবিতে অভিনয় করছি। সেটিতে ঋত্বিকা আছেন আমার বিপরীতে। ঠিক সময়ে কাজ শেষে হলে হয়তো ডিসেম্বরে মুক্তি পাবে। এই ছবিতে আমাকে আলাদা একটি চরিত্রে দেখা যাবে। এছাড়া আরও একটি ছবিতে অভিনয় করার কথা চলছে। সেটিতে নতুন একটি মেয়ে থাকবে।
এটা সব দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ নতুন কাউকে গ্রহণ করতে পছন্দ করেন না। এমন লোকও আছেন যারা নতুনদের সাহায্য করেন। দু’রকম লোক থাকে সবখানে। আমার মনে হয় এসব পলিটিক্স মাথায় না নিয়ে নিজের কাজটা করে যাওয়া উচিত। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত। মানুষ আমার সঙ্গে যতোই পলিটিক্স করুক না কেনো আমি যেনো সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারি। কোনরকম অ্যাটিটিউড না দেখাই। তাহলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন : শুরু হচ্ছে ঢাকা ডকল্যাবের দ্বিতীয় অাসর
যারা ছবি দেখে সেলফি পাঠাচ্ছেন, প্রশংসা করছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আবার যারা ছবিটি দেখেছেন কিন্তু ভালো লাগেনি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। অন্তত তারা দেখে তারপর বলেছে যে ভালো লাগেনি। যারা এখনও ছবিটি দেখেননি তারা তাড়াতাড়ি দেখে নিন।
ফেসবুক লাইভে আমি আসব। বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আরও আগে আসতাম। আমি এখন অন্য একটি ছবির নতুন লুকে আছি। ওটা প্রকাশ করতে চাইছিনা বলেই ফেসবুক লাইভে আসা সম্ভব হয়নি। তবে শতভাগ চেষ্টা করছি একটু অন্যরকমভাবে ম্যানেজ করে ফেসবুক লাইভে আসতে।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ/পিএম