বিজ্ঞাপন

কূটনীতিকদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক আমলে নিচ্ছে না আ.লীগ

October 18, 2018 | 9:48 pm

।। হাসান আজাদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ৩০ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠককে আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তৎপরতাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। দলের নেতারা বলছেন, জনগণের ওপর আস্থা না থাকার কারণেই তারা বিভিন্ন স্থানে লবিং চালাচ্ছে। কারণ তাদের দাবিগুলো সংবিধানবিরোধী। আর এই লবিংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এরই মধ্যে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিকদের জানানো হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে কূটনৈতিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজনটি করে আওয়ামী লীগের আর্ন্তজাতিক সর্ম্পক উপকমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানের একটি হোটেলে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এই বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সারাবাংলাকে বলেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয় গেছে। তারা এখন ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে গিয়েছে। আর এই ঐক্যফ্রন্টকে মিডিয়া টিকিয়ে রেখেছে। আমরা এই মুহূর্তে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবছি না এবং এ নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, জানতে চান কূটনীতিকরা

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, এ ধরনের বৈঠকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, তারা জনগণের প্রতি আস্থাশীল না। আমরা বলছি, তারা একটা কন্সরিরেসি (ষড়যন্ত্র) করছে। তারা যে দণ্ডিত আসামিকে মুক্ত করার জন্য দাবি জানিয়েছে, এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়— তারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় না।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান তারা মানছে না। দেশের রীতি-নীতি মানছে না এবং এটাকে চ্যালেঞ্জ করার মধ্য দিয়ে তারা প্রকারান্তরে রাষ্ট্রকে অস্বীকার করছে। এটা তো কন্সপিরেসিই (ষড়যন্ত্র)। যেহেতু জনগণ এটাকে সমর্থন করেনি, সেজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের লবিংয়ের চেষ্টা করছে। যেসব কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা নিশ্চয় বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এ ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো রাজনীতি বাংলার মানুষ গ্রহণ করেনি, আশা করি, করবেও না।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কুটনৈতিক তৎপরতায় সরকার এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপির সঙ্গেও যোগাযোগ বেড়েছে। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল বিজেপির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভারত সফর করেছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এর আগে, আওয়ামী লীগের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভারতের কংগ্রেসের জাতীয় সম্মেলনে অংশ নেয়। ওই সময় কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও দেখা করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

দলের নেতারা আরও জানান, শুধু ভারত নয়, এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি চীন এবং দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গেও আওয়ামী লীগের সুসম্পর্ক রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীন সফরে যায়। এরপর শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের তিন সদস্যের একটি দল বেইজিং সফর করে।

দলের নেতারা বলছেন, ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে দেখে আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ আগের যেকোনো সরকারের সময়ের চেয়ে অনেকগুণ বেড়েছে। বিএনপির সঙ্গে চীনের সখ্য বেশি— বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন কথা শোনা গেলেও আওয়ামী লীগ আমলে বিনিয়োগের কারণে এখন হিসাবটা পাল্টে গেছে। এছাড়া ইউরোপসহ পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

ক্ষমতাসীন দলটির সিনিয়র এক নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখনও মাঠে নামেনি। আগামী ২০ অক্টোবর তারা মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা এখন এই জোটটির কর্মকাণ্ডের ওপর সর্তক নজরদারি রাখছি। কারণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে মাঠে নামবে মূলত বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা। এই দু’টি দল ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের ভেতর থাকা অন্যদলগুলোর উল্লেখ করার মতো কোনো কর্মীই নেই।

সারাবাংলা/এইচএ/টিআর

বিজ্ঞাপন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন