বিজ্ঞাপন

কৃষিকাজ ছেড়ে মালয়েশিয়ায় পিএইচডি

January 7, 2018 | 4:41 pm

শামছুজ্জামান নাঈম (মালয়েশিয়া)

বিজ্ঞাপন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছেলে আব্দুল বাশির। ১৯৯৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করলেও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। পরিবারের হাল ধরতে পড়াশুনা ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করেন। তবে নানা বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে ২০০৬ সালে কৃতীত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করেন। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ চুকিয়ে ২০১৪ সাল থেকে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি পুত্রা’তে পিএইচডি শুরু করেন। মালয়েশিয়ার শিক্ষাঙ্গনে বাশির এখন এক জনপ্রিয় নাম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মালয়েশিয়ার যাওয়ার শুরুর গল্পটা নিজেই বললেন বাশির। তিনি জানান, ‘একদিন মাঠের কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে মায়ের সঙ্গে প্রতিবেশীর আলাপ হচ্ছিল। প্রতিবেশী মাকে বলছিলেন আমার ছেলেরা তো পড়াশুনা করছে। কৃষিকাজ করে তোমার ছেলের ভবিষ্যৎ কি? কথাটি কানে যেতেই মনে ঝড় বয়ে গেল। এভাবে আর চলা যায় না, যেকোন ভাবেই হোক পড়াশুনা আবারও শুরু করতে হবে। এরপর থেকেই বদলে যায় জীবন।’

আব্দুল বাশির ১৯৮৩ সালে শিবগঞ্জ থানার কাগমারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মোহাম্মাদ একরামুল হক ও মোসাম্মাৎ আকতারা বেগমের ছোট ছেলে।

বিজ্ঞাপন

১৯৯৮ সালে এসএসসি পাসের পর পারিবারিক জমিতে কৃষি কাজ শুরু করেন। পরে দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৬ সালে কৃতীত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করেন। ২০১০ সালে ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ এবং ২০১১ সালে এমবিএ শেষ করেন।

বাশির মালয়েশিয়ায় বর্তমানে গবেষণা করছেন ‘ডেভেলপিং ইন ইন্টারগ্রেটিভ কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশন মডেল বেইসড অন কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স ইন ই-ব্যাংকিং সার্ভিসেস অফ বাংলাদেশ’  নিয়ে।’

মালয়েশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশিদের যেকোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন মানেই বাশিরের নামটি সবার আগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, পহেলা বৈশাখ, ঈদ পুনর্মিলনী, বার্ষিক শিক্ষা সফর, নবীন বরণ, বিদায় সংবর্ধনা ইত্যাদি আয়োজন করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

তার হাত ধরেই ইউপিএম এর ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল ফ্যাস্টিভ্যালে বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।

বাশির ২০১৫- ১৬ সেশনে বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ইউপিএম’র (বিএসএইউপিএম) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পরে ২০১৬-১৭ সেশনে ইউপিএম এ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ইউপিএম’র (ইউপিএমআইএসএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এছাড়াও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মালয়েশিয়া’র (বিএসইউএম) ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

অন্যদিকে ২০০৮ সালে ঢাকায় পড়াশুনার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টুডেন্ট ফোরাম ঢাকা নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া নিজ উপজেলার পিছিয়ে পড়া যুব সমাজকে এগিয়ে নিতে গঠন করেন শিবগঞ্জ ইয়ুথ সোসাইটি।

বাশির জানান, তার এ পর্যায়ে আসার পেছনে মেজো ভাই প্রয়াত আব্দুল মকিম ও মোহাম্মদ মাসিরের অবদান সবচেয়ে বেশি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএস/

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন