বিজ্ঞাপন

ক্ষুব্ধ মেয়র আইভী

January 16, 2018 | 8:37 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ শহরে হকার বসানো ও উচ্ছেদ নিয়ে মঙ্গলবার ১৬ জানুয়ারি বিকেলে সংঘর্ষের পর মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী অভিযোগ করে বলেছেন, শামীম ওসমান রাইফেলস ক্লাবে বসে থেকে সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালিয়েছেন।
যখন ঝড়ের বেগে ইট পাটকেল ও গুলি হলো তখন কোথায় ছিল প্রশাসন? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও এক হাত নিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের এই জনপ্রিয় মেয়র।

তিনি বলেন, ডিসি-এসপি প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন মানেন না। প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রণালয় থেকে সার্কুলার আছে সিটি করপোরেশনের মিটিংয়ে ডিসি ও এসপিসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে হবে। উনারা একটা মিটিংয়ে উপস্থিত হননি। অথচ পত্রিকায় দেখলাম উইসডমে গিয়ে মিটিং করেন।
সরকারের নির্দেশ মানতে তাদের লজ্জা লাগে। সিটি করপোরেশনের মিটিংয়ে যেতে তাদের লজ্জা লাগে, বলেন আইভী।

প্রশাসনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের অধিকারে কথা বলতে তাদের লজ্জা লাগে তাহলে তারা কি সরকারের কর্মচারী নাকি ওসমান পরিবারের প্রভুভক্ত।

বিজ্ঞাপন

বিকেলে সংঘর্ষের পর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে অবস্থান নেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। তখন তিনি সাংবাদিকদের সামনে এসব অভিযোগ করেন।

আইভী বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরের মধ্যে এভাবে ঝড়ের বেগে এর আগে কোন দিন আক্রমন হয়নি। তাহলে শামীম ওসমান কিসের বলে কোন প্রশাসনের ইঙ্গিতে কার ইঙ্গিতে এ সাধারণ মানুষ এবং আমার উপর আক্রমণ করলেন। আমি তো আজকে একটা কথাও বলিনি। আমরা আজকে এসেছিলাম আপনাদের সাথে কথা বলার জন্য এবং জানাতে যে কি নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আছে, কি নির্দেশ মন্ত্রণালয়ের আছে এবং আমরা কি করতে চাচ্ছি শহরের মানুষের জন্য হকারের জন্য এবং আমি কি কি সমস্যা সমাধান করেছি। এগুলো বলার কি অধিকার আমার নাই?’
আজকে উনি আমার উপরে আক্রমণ করেছেন মানে নারায়ণগঞ্জের জনগণের উপর আক্রমণ করেছেন, বলেন এই জনপ্রিয় মেয়র।

বিজ্ঞাপন

শামীম ওসমানের প্রতি ইঙ্গিত করে- উনি কোন আক্রোশে আক্রমণ করেছেন? ২০১১ তে ভরাডুবি হয়েছে একারণে? শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর আক্রমনের কারণ কি? উনি শান্তিপূর্ণ শহরকে কেন অশান্ত করতে চাচ্ছেন? এমন সব প্রশ্ন করতে থাকেন সেলিনা হায়াৎ।
তিনি বলেন, আমিতো হকার নিয়ে প্রথমে কোন কথা বলিনি। উনিই কাউন্সিলরদের একটা কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়ে হকার নিয়ে বলছেন, ১০ হাজার হকারের পেটে লাথি মারা যাবেনা। কিন্তু উনিতো কোটি কোটি টাকা মালয়েশিয়া, দুবাইতে পাচার করছেন। সেই টাকা দিয়ে হকার মার্কেট করে দিক। কেন নারায়ণগঞ্জে মানুষের হাটার অধিকার কেড়ে নেবেন।

সেলিনা হায়াৎ আরও বলেন, উনি যদি হকারদের বসাতে চান তাহলে মার্কেট করে দিন।

আইভী বলেন, উনি কি কারণে আমার উপর আক্রমণ করলেন, উনি কি মারতে চান।

ত্বকীকে হত্যা করেছে আজমীর ওসমান, ত্বকীকে মেরেছে শামীম ওসমান এমন মন্তব্য করে আইভী আরও বলেন, এই শহরের আশিককে মেরেছে, চঞ্চলকেও মেরেছে তারা। এশহরের অগনিতকে খুন করেছে তারা, আজকে তারা আমাকে মেরে ফেলতো।

বিজ্ঞাপন

আবার বলেন, মারলে মারতো আমিতো বুঝলাম না আমার কর্মীরা কেন আমাকে ব্যারিকেড দিয়ে সরিয়ে আনল। আমি একাই যেতাম মারতে চাইলে আমকে মারতো।’

আইভী বলেন, উনি কি জানেন না নারায়ণগঞ্জের মানুষ উনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। উনাকে বিতারিত করছে একবার নয় কয়েকবার বিতারিত করছে। উনি কি পিস্তল দিয়ে আর পুলিশ ব্যবহার করে আমাকে থামিয়ে রাখবেন? প্রশ্ন তার।

দল যখন ক্ষমতায় থাকে উনি শহর ছেড়ে চলে যান তাহলে উনি কিসের নেতা, বলেন আইভী।

প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরীহ মানুষের উপর হামলা হয়েছে এমন উক্তি করে ডিসি এসপিকে প্রত্যাহার করা উচিত বলেও মত দেন নগর মেয়র।
তিনি বলেন, যারা হকারের সমস্যা সমাধান করতে পারেনা তাদের প্রয়োজন নেই।

আইভী বলেন, এই ডিসি শুধু বসে বসে চাটুকারিতা করেন একটা কাজও করেননা। উনি শুধু ফোন করে বলেন, আমি আপনাকে সহযোগিতা করব। কি সহযোগিতা করেছেন?

‘আজকে সকালে ফোন দিয়েছিলেন। আমি বলেছি আমি শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলব। গতকাল এসপিকে বললাম একজন এমপি এইরকম একটা নির্দেশ দেয় আপনারা কি করছেন। উনি বলেন, দলীয় এমপি এমন নির্দেশ দিলে আমরা কি করবো। আমি তখন বললাম, আমি কি দলের বাইরে নাকি?’
তিনি বলেন, এই যদি হয় নারায়ণগঞ্জের এসপির কথা তাহলে উনার থাকার অধিকার নাই।

আমরা কী জনগণকে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দিব না। হকার্স মার্কেট করে দিয়েছি লাগলে আরো করবো, বলেন আইভী।
এই হামলার জন্য শামীম ওসমানকে জনতার আদালতে জবাব দিতে হবে, বলেন সেলিনা হায়াৎ।

তিনি আরও বলেন, সেলিম ওসমান মুখে বলেন একটা আর কাজ করেন আরেকটা। উনি বলে গেলেন চিঠি দিয়ে এই চারটা জায়গায় বসার জন্য। আমি বললাম এই চারটা নয় ওই চারটা জায়গায় বসার জন্য। এরপর উনি দুবাই চলে গেলেন আর উনার ভাই হকারদের নিয়ে সমাবেশ করে ফুটপাতে বসার নির্দেশ দিলেন।

প্রতিবছর খুন না করলে বোধ হয় উনার মাথা ঠিক থাকেনা, শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে বলেন মেয়র। তিনি বলেন, আজকে নিয়াজুল উনার ক্যাডার পিস্তল উঁচিয়ে আমাদেরকে গুলি করলো। কাউকে না কাউকে মারতে হবে কাউকে না কাউকে আঘাত করতে হবে। এবং সাথের ক্যাডারদের দেখাতে হবে।

আমার দিকে অসংখ্য গুলি ছোঁড়া হয়েছে। তাহলে উপর থেকে নিশ্চয়ই অর্ডার পেয়েছে মেয়রকে মেরে ফেলা হোক! তা না হলে কেন পুলিশ এগিয়ে আসলো না! বলেন আইভী।

তিনি বলেন, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ তাহলে উপরের নির্দেশ আর শামীম ওসমানের নির্দেশই পালন করুক।

সারাবাংলা/এমএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন