বিজ্ঞাপন

খাদ্যপণ্যের রাসায়নিক পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে প্রকল্প

January 20, 2018 | 7:48 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : রপ্তানির অশুল্ক বাধা কাটাতে সুবিধা বাড়ছে কেমিক্যাল মেট্রোলজির অবকাঠামোর। ফলে খাদ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের রাসায়নিক পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়বে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পরীক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা সম্ভব হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে যেকোনো পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিল্প ও গবেষণা পরিষদের দেওয়া পরীক্ষা সনদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। এজন্য ‘কেমিক্যাল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধ করণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা।

ত্রিদেশীয় সিরিজ লাইভ দেখুন সারাবাংলায়

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ডিআরআইসিএমের কেমিক্যাল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, পণ্য উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবা, শিল্প, পরিবেশ, বাণিজ্য, গবেষণা, জলবায়ু পরিবর্তন সহ রপ্তানির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর করা সম্ভব হবে। ফলে বাংলাদেশি পণ্যের বিদেশি বাজারের প্রবেশের পথ সুগম করা এবং উন্মুক্ত বাজার প্রতিযোগিতায় দেশীয় পণ্যের টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করা হবে। এছাড়া একই বিষয়ে বিভিন্ন পরীক্ষণাগারের পরীক্ষণের ফলাফলের ভিন্নতা দূর করে দেশের পরীক্ষণাগারগুলোর পরীক্ষণের মান আন্তর্জাতিকমানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা হবে। বিদেশি পরীক্ষণাগারের ওপর নির্ভরতা কমে যাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য এরইমধ্যে কার্যপত্র তৈরি করা হয়েছে। আগামী বৈঠকে অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর স্থায়ীত্ব আনয়ন এবং দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রপ্তানীমুখী শিল্পের প্রসারের জন্য গুণগত মান প্রধান ভূমিকা রাখে। বিশ্ব বাণিজ্য ক্ষেত্রে সক্ষম অংশীদার হতে বাংলাদেশের জন্য রাসায়নিক পরিমাপবিদ্যায় কারিগরি পারদর্শিতা প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নশীল প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন সময়ের দাবি। বর্তমান উন্মুক্ত বিশ্ববাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন ও রপ্তানী বহুমুখীকরণে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবার মান উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণে কেমিক্যাল মেট্রোলজি সংক্রান্ত নিবিড় বৈজ্ঞানিক সেবার অপরিহার্যতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশের পরীক্ষণাগারে পণ্যের গুণমান তথা সাদৃশ্য নির্ধারণ নিরূপণে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ জরুরি। দেশের সব রাসায়নিক পরিমাপ সংশ্লিষ্ট গবেষণাগার (এনালাইটিক্যাল ক্লিনিক্যাল) গুলোর পরীক্ষণ সেবার মান উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল মেট্রোলজি অবকাঠামো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প পরিষদের আওতায় ৩টি সমাপ্ত প্রকল্প যেমন, ডেভেলপমেন্ট অব আইএসও ১ হাজার ৭০৫ অ্যাক্রিডেটেড ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন সার্ভিস ল্যাবরেটরি ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্ট, সাপোর্ট টু বিসিএসআইআর ইন্সট্রুমেন্ট অ্যান্ড কলাবরেশন সার্ভিস ল্যাবরেটরি আইসিএসএল ফর কেমিক্যাল মেট্রোলজি বেটার কোয়ালিটি ইনফ্রাকট্রাচার বেস্ট প্রোগ্রাম এবং এস্টাবলিশমেন্ট অব ডেজিগনেটেড রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস এর মাধ্যমে কেমিক্যাল মেট্রোলজি তথা রাসায়নিক পরিমাপ বিজ্ঞান সংক্রান্ত রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ডেজিগনেটেড রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (ডিআরআইসিএম) এর মৌলিক অবকাঠামো সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু এ উদ্যোগটি পরিপূর্ণ করা প্রয়োজন।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ডিআরআইসিএম কেমিক্যাল মেট্রোলজি সংক্রান্ত বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও একমাত্র ইনস্টিটিউট। বর্তমানে কেমিক্যাল মেট্রোলজি সংশ্লিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণ, ইনস্টিটিউটের গবেষণা ও পরীক্ষণের মান আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার জন্য কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধি, কেলিব্রেশন ও প্রোফিসিয়েন্সি টেস্টিং সেবার মান বৃদ্ধি, সার্টিফায়েড রেফারেন্স ম্যাটেরিয়াল উৎপাদন, সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সমৃদ্ধকরণের জন্য এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, নির্মাণ ও পূর্ত কাজ, ৭ তলা ভবন নির্মাণ, সাব-স্টেশন ও বহিঃরাঙ্গনে বিদ্যুতায়ন, জেনারেটর ও ইন্টারনাল কানেকশন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৯২ সেট যন্ত্রপাতি, ৬০৬ সেট ফার্নিচার সংগ্রহ, ২১১টি অফিস সরঞ্জাম, ২টি যানবাহন এবং ১৪ জন জনবল নিয়োগ দেওয়াসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

সারাবাংলা/জেজে/একে

 

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন