বিজ্ঞাপন

‘খেলায় খেলায় চারটি বছর’ শুধু উৎসব নয়, নস্টালজিয়াও!

February 17, 2018 | 5:52 pm

বিশেষ প্রতিনিধি

বিজ্ঞাপন

সিঙ্গারার দোকানে প্রায় দোমড়ানো একটা কাগজ, তাতে গুটি গুটি হরফে লেখা বেশ কিছু লাইন। চোখটা হঠাৎ আটকে এলো শিরোনামের ওপর, ‘ক্রিকেট ক্লাসে স্টিভ ওয়াহ’। সেই কাগজটা নিয়ে এলেন ক্রীড়া সাংবাদিক সাইফুল্লাহ বিন আনোয়ার, মনে পড়ে গেল এই শিরোনামেই তো স্টেডিয়ামে একটা লেখা পড়েছিলেন! সেই লেখা আট বছর পর ঠাঁই পেল দৃক গ্যালারির একটা প্রদর্শনীতে।

কী অদ্ভুত, লেখক জালাল আহমেদ চৌধুরীও এলেন সেখানে। তাকে সেটা দেখানোর পর ভেসে গেলেন স্মৃতিকাতরতায়, বিশিষ্ট এই ক্রিকেট লেখক-সাংবাদিক-কোচ স্মৃতির ঝাঁপি থেকে তুলে নিয়ে এলেন অনেক কিছু। প্যাভিলিয়নের ‘খেলায় খেলায় চার বছর’ অনুষ্ঠানে অতীত খুঁড়ে উঠে এলো খেলার এমন আরও অনেক কিছুই।

দেখতে দেখতে চার বছরে পা দিয়েছে প্যাভিলিয়ন (pavilion.com.bd), ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে গত ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি হয়ে গেল দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের। অনেকটা আড্ডার আদলেই সেখানে জড়ো হয়েছিলেন সাবেক খেলোয়াড়, ক্রীড়া সাংবাদিক, সংগঠকসহ অনেকেই। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্কর হাজরা ফিতা কেটে উদ্বোধন করেছিলেন অনুষ্ঠানের। আগরতলা দিয়ে সীমান্ত পার হওয়া, কৃষ্ণনগরের সেই ম্যাচ, বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর কথা বলতে বলতে তিনিও ফিরে গিয়েছিলেন ৪৬ বছর আগের ওই সময়ে।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের প্রথম দিন মূলত ছিল দর্শকদের জন্য বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার। ক্রীড়া বিষয়ক ছবি, স্কেচ, গ্রাফিক্যাল আর্টস ও পেপার কাটিং শুরু থেকেই উন্মুক্ত ছিল সবার জন্য। দর্শকেরা এসে সেসব দেখেছেন নিবিষ্টচিত্তে।

শুক্রবার ছিল উৎসবের দ্বিতীয় ও শেষ দিন। শুরুটা হয়েছিল অনলাইনকেন্দ্রিক খেলা বিষয়ক গ্রুপগুলোর সঙ্গে মত বিনিময়ের মধ্য দিয়ে। ফেসবুক-টুইটারভিত্তিক এই প্রজন্ম খেলাটা কতটুকু ভেতর থেকে ধারণ করতে পারছে, তাদের দায়িত্ববোধই বা কতটুকু- এসব বেশ কিছু বিষয় নিয়ে হয়েছে প্রাণবন্ত এক আড্ডা। এর পর হয়েছে কুইজার্ডস আয়োজিত ক্রীড়া বিষয়ক কুইজের শেষ রাউন্ড। প্রতিযোগীরা সেখানে নিজেদের ক্রীড়া-মেধায় শাণ দিয়েছেন ভালোমতোই, বেশ কয়েক জন দর্শকও উপভোগ করেছেন এই আগ্রহ জাগানিয়া কুইজ। এর মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থল ঘুরে গেছেন গাজী গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এম সালাহউদ্দিন চৌধুরী।

তবে অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল এরপর। ক্রীড়া সাংবাদিকতা ও সাহিত্য নিয়ে দারুণ এক আড্ডা হয়ে যায় সেখানে। কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক মোস্তফা মামুন, বিডিনিউজ২৪ ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আরিফুল ইসলাম রনি ও ইএসপিএনক্রিকইনফোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইসাম আলোচনা করেছেন ক্রীড়া সাংবাদিকতা ও সাহিত্যের একাল-সেকাল নিয়ে। ক্রীড়া সাংবাদিকতা কেন একটু ব্যতিক্রম, এই যুগে প্রথাগত সাংবাদিকতার বাইরে কীভাবে চিন্তা করা উচিত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবটা কেমন হওয়া উচিত, খেলার সাথে সাহিত্যের যোগটাই বা কেমন- এমন নানা বিষয় উঠে এসেছে এই আড্ডায়। জালাল আহমেদ চৌধুরীও সমাপনী বক্তব্যে সেই ক্যানভাসে দিয়েছেন তুলির শেষ টান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সারাবাংলার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রফিকউল্লাহ রোমেলও। জমজমাট আড্ডায় পেরিয়ে যায় ঘণ্টাদেড়েক সময়।

বিজ্ঞাপন

এই আয়োজনের মধ্য দিয়েই শেষ হয়ে গেছে মূল অনুষ্ঠান। দর্শনার্থীরা এরপর ঘুরে দেখেছেন ছবি, স্কেচ। অনেকেই কিনেছেন খেলা বিষয়ক বই ও পোস্টারও। খেলায় বুঁদ হয়ে থাকার সেই সুখস্মৃতিতেই শেষ হয়েছে ‘খেলায় খেলায় চার বছর’।

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন