বিজ্ঞাপন

গাবতলীর হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি

August 17, 2018 | 9:58 pm

।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে শুরু করেছে গরু, মহিষ, ছাগল-ভেড়াসহ কোরবানির বিভিন্ন পশু। তবে পশু এলেও এখনও জমে ওঠেনি হাট। নানান জাতের পশু দেখতে হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই এখন বেশি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) এই হাটে দু’দিন আগ থেকে পশু উঠানো শুরু হয়। তবে আজ সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ট্রাক ভর্তি গরু আসা শুরু হয়েছে। এতে আগের তুলনায় বেড়েছে ব্যস্ততাও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাট এখনও পুরোদমে জমে উঠেনি। তারা জানান, আগামীকাল থেকে আরও পশু আসবে এবং রবিরার থেকে পুরোদমে হাট জমে উঠবে। শহরে পশু রাখার অসুবিধার কারণে মূলত ঈদের দু-তিনদিন আগেই জমে উঠে হাট। এখন ক্রেতাদের তুলনায় দর্শনার্থীদের বেশি ভিড় দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গাবতলী হাট ঘুরে দেখা যায়, পশু দেখতে ছোট-বড়, শিশু-কিশোর ও তরুণরা দলে দলে ভিড় করছে হাটে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও হাটের আশপাশ থেকে ছুটে এসেছেন তারা।

হাট ঘুরে দেখা যায়, এবার দেশি গরুর সংখ্যাই বেশি। তবে অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরুর সংখ্যা উঠেছে চোখে পড়ার মত। তবে সেগুলোর চেয়ে ক্রেতাদের চাহিদা দেশি গরুর প্রতিই বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘প্রত্যাশিত ক্রেতাদের ভিড় এখনও দেখা যায়নি। দু’একজন ক্রেতা এলেও দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন। তারা হয়তো আরো কয়েকদিন পর কিনবে। কারণ পশু রাখার অসুবিধার কারণে এমনটা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

যশোর থেকে গরু বিক্রি করতে এসেছেন তৌহিদ সরদার। তিনি এবার হাটে গরু এনেছেন ১৩টি। সেগুলোর প্রতিটি আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা করে বিক্রি হবে বলে আশাবাদী তিনি। এজন্য তিনি ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে হাটের জায়গা নিয়েছেন ইজারাদার থেকে।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৩টা গরু এনেছি সকালে। এখনও বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কোনো কাস্টমারকে দর করতে দেখলাম না। সবাই শুধু গরু দেখতে ভিড় করে। কেউ কেউ এসে ছবি তোলে, চলে যায়। এই যে হাটে এতো মানুষের ভিড় দেখতেছেন এখানে ৫ জনও কাস্টমার নাই। সবাই দেখতে এসেছেন। তবে কাল অথবা রবিবার থেকে ভালো বিক্রি হবে।’

অপর এক বিক্রেতা রশিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকালে আমরা দুই ভাই মিলে নিজেদের পালন করা ৪টা দেশি গরু এনেছি। দুইটা বিক্রি করে ফেলেছি বিকেলে। ১টা দেড় লাখ আরেকটা সাড়ে ৯৫ হাজার টাকা।’ তবে এ দামে বিক্রি করায় তিনি কিছুটা অখুশি, খুব বেশি লাভ হয়নি বলে দাবি তার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত হাটে ৫ শতাধিক গরু ও দেড় শতাধিক ছাগল বিক্রি হয়েছে। তবে হাট পুরোপুরি জমলে প্রতিদিন ৫ থেকে ১৫ হাজার গরু বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, গাবতলী হাটের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন ইজারাদার লুৎফর রহমান। হাটে মোট ৯টি হাসিল ঘর বানানো হয়েছে। এবার হাসিল মূল্য সরকার নির্ধারিত সাড়ে তিন টাকার সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে দেড় টাকা বেশি করে দিতে হবে। প্রতি হাজারে হাসিল ধরা হয়েছে ৫০ টাকা।

হাটের নিরাপত্তায় রয়েছে ১১টি ওয়াচ টাওয়ার। সেগুলো থেকে পুরো হাটের সার্বিক নিরাপত্তা দায়িত্বে রয়েছে র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। সেই সঙ্গে প্রতিটি রাস্তায় পশু আনা নেয়া থেকে শুরু করে বিক্রয় পর্যন্ত তদারকির দায়িত্বে রয়েছে ৫ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সদস্য। হাটে প্রতারণা রোধে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে জাল টাকা শনাক্ত করতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বুথ।

গাবতলী হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ঈদের তিন দিন আগ থেকে আমাদের ঈদের হাট শুরু হবে। কিন্তু যেহেতু এটা স্থায়ী হাট তাই এখানে সবসময় পশু কেনা-বেচা হয়। এজন্য গরু ব্যবসায়ীরা এক দুদিন আগে থেকে পশু আনতে শুরু করেছে। আগামী শনি এবং রবিবার থেকে হাট পুরোপুরি জমবে। এরইমধ্যে অর্ধেকের মত পশু হাটে উঠে গেছে।’

সারাবাংলা/এসএইচ/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন