May 21, 2018 | 8:29 pm
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকার মানুষের ভয়াবহ দুর্বিষহ জীবনযাপনের প্রতিবাদ জানাতে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছেন ফিলিস্তিনি তরুণ ফাথি হার্ব। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২০ বছর বয়সী ফাথি হার্ব নিজের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় হামাসের অমঙ্গল কামনা করে গালিগালাজ করছিলেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ পত্রিকা ইন্ডিপেনডেন্ট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাথি হার্বের গায়ে আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গত শনিবার (১৯ মে) রাতের ওই ঘটনায় দেখা যায়, আগুনে হার্বের চারপাশে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। কয়েকজন লোক পাত্র নিয়ে তার গায়ে পানি ঢালার চেষ্টা করছেন এবং বস্তা ও চাটাই দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
ফাথি হার্বের পরিবার জানিয়েছে, স্থানীয় অর্থনৈতিক সমস্যা ও দারিদ্র্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে হামাসের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার পর চরম দারিদ্র্যর মধ্য পড়েন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
ওই তরুণের মা বার্তা সংস্থা এপি’কে জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী কর্মসংস্থান খুঁজছিলেন তার ছেলে। অন্তঃসত্তা স্ত্রী ও পরিবারকে সহায়তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এজন্য তার ছেলে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করবেন, বিষয়টি তার চিন্তার মধ্যেও আসেনি।
‘স্ত্রী যখন সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, তখন স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার খরচ ও খাবার যদি কোনো পুরুষ জোগাড় করতে না পারে, তখন তার আর কী করার থাকতে পারে?’— প্রশ্ন করেন ফাথি হার্বের মা।
এক দশকের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ও মিসরের অবরোধের মুখে পড়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা। তার ওপর ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ফাতাহ ও জাতিমুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাসের দ্বন্দ্বের কারণে অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পাশাপাশি গাজায় পণ্য আমদানি-রফতানির সুড়ঙ্গ পথ বন্ধ করে দেওয়ায় পর গাজার অর্থনীতি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আর এতে ২০ লাখ অধিবাসীর ভূখণ্ড গাজায় দেখা দিয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়।
গাজায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে শুধু সরকারি কর্মচারীই নয়, শ্রমিক-ব্যবসায়ীসহ প্রায় সব পেশার মানুষই চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। ফিলিস্তিনের এই উপত্যকার সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দোকানদারের বাকি শোধ করতে না পেরে অনেককে কারাগারে যেতে হয়েছে। এমনকি অভাবের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটছে ব্যাপক হারে। এদিকে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞ চলছেই।
সারাবাংলা/এমআইএস/