বিজ্ঞাপন

গুলশান কার্যালয়ের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অভিযোগ বিএনপির

November 19, 2018 | 9:56 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চলমান দলীয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি দলীয় কার্যালয়টির ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বলে অভিযোগ দলটির।

সোমবার (১৯ নভেম্বর) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসউইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার এ অভিযোগ করেন। তবে বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

শামসুদ্দিন দিদার সারাবাংলাকে বলেন, দুপুরের পর থেকেই বিটিআরসি আমাদের গুলশান কার্যালয়ের সব ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এতে আমাদের নির্বাচনি কার্যক্রম থমকে গেছে। কারণ নির্বাচনের অনেক কার্যক্রমই আমরা অনলাইনে সম্পন্ন করছিলাম। সেগুলো আর করতে পারছি না।

বিজ্ঞাপন

বিটিআরসি’র দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে শামসুদ্দিন দিদার বলেন, বিএনপি যেন নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, সে কারণে বিটিআরসি ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক সারাবাংলাকে বলেন, বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে এরকম কিছু করা হয়নি। যদি সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতো, তাহলে আমি জানতাম।

এদিকে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীও একই অভিযোগ করেছেন। সোমবার রাতে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক সব যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপিও বন্ধ করে দিয়েছে বিটিআরসি। এর মাধ্যমে সরকার এক ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন সাহেব বলেছেন, বিএনপি’র মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তার এই বক্তব্যের পরপরই সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি স্কাইপি বন্ধ দিয়ে প্রমাণ করেছে, নির্বাচনের মাঠ আওয়ামী জোটের একচেটিয়া দখলে থাকবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নমিনেশন প্রত্যাশীদের সাথে স্কাইপিতে কথা বলা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন নয়। কমিশন সচিব এ বিষয়টি নিশ্চিত করার পরও তড়িঘড়ি করে বিটিআরসিকে দিয়ে স্কাইপি বন্ধ করে দেওয়া সরকারের নিম্নরুচির পরিচায়ক। সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনকে নিজেদের অনুকুলে নেয়ার জন্য ক্লান্তিহীনভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। বিএনপি’র নির্বাচনি তৎপরতাকে বাধা দিতে সরকার সবধরনের শক্তি প্রয়োগ করছে।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে বিএনপি। ১২ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রি শেষে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু হয় গতকাল রোববার (১৮ নভেম্বর) থেকে। আজ সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ কার্যক্রম চলে।

এদিকে, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার বোর্ডে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি লন্ডন থেকে স্কাইপিতে যোগ দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববারের পর সোমবারও দ্বিতীয় দিনের মতো স্কাইপিতে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি।

ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে তারেক রহমানের এভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ নিয়ে রোববারই প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই দিনই নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম জানান, তারেক রহমান বিদেশ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিছু করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে আইন স্পষ্ট নয়। কেউ সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দিলে বিষয়টি ইসি খতিয়ে দেখবে।

বিজ্ঞাপন

পরে রোববার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানিয়ে ইসিতে চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ। এ অভিযোগ নিয়ে সোমবার কমিশন সভায় আলোচনা করে ইসি। পরে জানানো এ বিষয়ে ইসির কোনো করণীয় নেই

ওই সভার পর ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারেক রহমানের সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া ও দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে না। ফলে ইসি এ বিষয়ে কিছু করতে পারে না।

সারাবাংলা/এজেড/ইএইচটি/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন