বিজ্ঞাপন

গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ঢাকা ব্যাংক কর্মকর্তা

March 18, 2019 | 9:21 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ফেনী: ঢাকা ব্যাংক ফেনী শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার গোলাম সাঈদ রাশেবের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা টাকার জন্য ব্যাংকে ভিড় করছেন।

বিজ্ঞাপন

টানা তিন দিন ব্যাংক বন্ধ থাকার পর বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার (১৮ মার্চ) ব্যাংকে ভিড় করেন গ্রহকরা।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা রাশেবের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার মৌটবী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে।

ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মনে করছেন সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছেন রাশেব।

বিজ্ঞাপন

তবে ব্যাংকটির ফেনী শাখার ম্যানেজার মো. আকতার হোসাইন সরকার বলেন, অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের মাধ্যমে দুই থেকে তিন কোটি টাকার মতো হয়ত আত্মসাৎ করা হয়েছে। তবে অনেকের সঙ্গে রাশেবের ব্যক্তিগত লেনদেনও ছিল। রাশেব দীর্ঘদিন ধরে ফেনী শাখার গ্রাহকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলছিল। সে সম্পর্কের সুবাদে অনেক গ্রাহকের চেক বই, পিন নম্বরও তার কাছে থাকতো। গ্রাহকের টাকা লেনদেন করতে করতে গ্রাহকের এই আস্থা অর্জন করেছিলেন তিনি। আর এরপরেই হাতিয়ে নেন বিপুল টাকা।

গ্রাহকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক এবং বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে গোলাম সাঈদ রাশেব অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণ সমন্বয়ের কথা বলে চেকের খালি পাতা সংগ্রহ করেন। তার গতিবিধি সন্দেহজন মনে হওয়ায় গত ১২ মার্চ ব্যাংকের শাখা ম্যানেজার উর্ধ্বতনদের লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। পরদিন ১৩ মার্চ অফিসে এসে সকাল সাড়ে ১০টার পর বাইরে গিয়ে উধাও হয়ে যান ওই কর্মকর্তা। টাকা তোলা হয়েছে মোবাইলে এমন বার্তা পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দু’একজন গ্রাহক ব্যাংকে অভিযোগ করলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

বিজ্ঞাপন

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর গ্রামের মাহবুবুল হক রিপনের অ্যাকাউন্ট থেকে হাওয়া হয়ে যায় ৩৪ লাখ টাকা। তিনি অভিযোগ করেন, তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরাধনা এন্টারপ্রাইজের নামে ব্যাংকের এ শাখায় পাঁচ কোটি টাকার ঋণ চলমান রয়েছে। ঋণ সমন্বয়ের কথা বলে দুটি ব্ল্যাংক চেক নেন গোলাম সাঈদ রাশেব। পরে অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখা যায় এ দুটো চেক ব্যবহার করে ওই ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়।

একই প্রক্রিয়ায় ফজলুল হক পলাশ নামে আরেকজনের মুনতাসির এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪২ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

এছাড়া ফেনী শহরের ভিতরের বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী অজয় কুমার বণিকের ৭০ লাখ টাকা, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাচ্চুটি গ্রামের মোশাররফ হোসেন মজুমদারের ৮ লাখ টাকাও তুলে নেওয়া হয়।

ফেনী শাখার ম্যানেজার মো. আকতার হোসাইন সরকার বলেন, ১৩ মার্চ রাশেব ব্যাংক থেকে গা ঢাকা দেওয়ায় গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ব্যাপারটি নজরে আসে। রাশেব মানুষদের সাথে তিনভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে, ব্যক্তিগতভাবে হাওলাতের মাধ্যমে এবং গ্রাহকদের অনুমতি নিয়ে। ঠিক কতটি অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা উত্তোলন হয়েছে এটি বলা মুশকিল। গ্রাহকরা মৌখিক ও লিখিতভাবে জানাচ্ছেন। ঢাকা থেকে আইটি এক্সপার্ট আসবেন। তাদের মাধ্যমে বিষয়টি চিহ্নিত করা যাবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক কথা বলে বিষয়টি দ্রুত নিস্পত্তি করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান ম্যানেজার। তিনি আরও জানান, কোনো গ্রাহকের টাকা বেহাত হবেনা। তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এসএমএন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন