বিজ্ঞাপন

ঘর বাঁধার আগেই স্বামী খুন, বিচার চাইতে রাজপথে স্ত্রী

June 20, 2018 | 9:17 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রায় এক বছর আগে রীমা আক্তার অরিনের সঙ্গে বাগদান হয়েছিল চট্টগ্রাম নগরীর ব্যাটারি গলির বাসিন্দা এম আর অনিকের। দুই মাসের মধ্যে ঘটা করে স্ত্রী ঘরে তুলে নেওয়ার কথা ছিল অনিকের। কিন্তু স্ত্রীকে দেওয়া কথা রাখতে পারেননি অনিক। সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে জীবন দিতে হয়েছে তাকে। ঘর বাঁধার আগেই অরিনের গায়ে এখন বিধবার বেশ। সংসার শুরুর আগেই সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে তার স্বামীকে।

স্বামী হত্যার বিচার চাইতে বুধবার (২০ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়ান অরিন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বামী হারানোর কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

অরিন বলেন, আমরা খুব সাদামাটা একটি জীবন চেয়েছিলাম। আমরা কোনোদিন কারো ক্ষতি করিনি। কেন আমার স্বামীকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হলো- প্রশ্ন রাখেন তিনি। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিকের মা আখতার বেগম। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

অনিকের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিনের সামনেই তার ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। সেই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে নাসির বলেন, আমার ছোট ছেলে রনিকের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল। যাদের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল অনিক তাদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করেছিল। তাদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছিল।

‘এরপর আমার ছেলেকে (অনিক) যখন মারধর করা হচ্ছিল সেখানে আমিও ছিলাম। মহিউদ্দিন তুষার (যুবলীগ নেতা) গুলি করতে করতে আসছিল। আমি গিয়ে হাত চেপে ধরি। আমি বলি- তুমি গুলি করছ কেন, এটা তো সমাধান করার চেষ্টা করছি। তখন তুষার আমাকে বলে- সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। আমার পেছনে ছিল অনিক। তুষার আরেক হাত দিয়ে তার বুকে ছুরি মারে। আরো দু’জন এসে তার পেটে ছুরি মারে। তুষার পড়ে যায়। আমি তুষারকে বুকে জড়িয়ে ধরলে সে প্রশ্ন করে- বাবা আমাকে কি ছুরি মেরেছে। আমি কিছু বলতে পারিনি। দেখি অনিকের বুক-পেট রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমার শরীর আমার ছেলের রক্তে ভেসে যাচ্ছে।’ বলেন নাসির উদ্দিন। হত্যার পুরো বিবরণ দেওয়ার আগেই কান্নায় ভেঙে পড়েন চট্টগ্রাম নগরীর ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন।

কোতয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান মনসুরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুনীল সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রয়াত রাজনীতিক এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন, শ্রমিক লীগ নেতা সফর আলী, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ নাসির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হাবিবুর রহমান তারেক এবং মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি।

বিজ্ঞাপন

হাসান মনসুর সারাবাংলাকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। অথচ পুলিশ একজন আসামিকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামিরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী, তাই আদৌ তারা গ্রেফতার হবে কি না সেটা নিয়ে এখন আমরা শঙ্কিত। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও আমরা সন্দিহান।

বাইক শো-ডাউন নিয়ে বিবাদ, চট্টগ্রামে যুবক খুন

সারাবাংলা/আরডি/এটি

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন