বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বন্দরের ৫ লাইটার জেটি চালুতে ‘আইনের বাধা’

May 21, 2018 | 11:24 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আইনি জটিলতায় আটকে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন পাঁচটি লাইটার জেটির শুরুর কার্যক্রম। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন। নিজস্ব উদ্যোগে জেটিগুলো পরিচালনার কোনো প্রস্তুতিও চট্টগ্রাম বন্দরের নেই। এই অবস্থায় আপাতত লাইটারেজ জেটিগুলো আর চালু হচ্ছে না।

সোমবার (২১ মে) হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কথা উল্লেখ করে রিটকারীদের পক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর আগে রোববার (২০ মে) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দেন।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ওয়ার্কিং রেগুলেশন (কার্গো অ্যান্ড কন্টেইনার) ২০০১, সংশোধিত ২০০৭ ভঙ্গ করায় পাঁচটি লাইটার জেটির দরপত্র কার্যক্রমে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। একই আদেশে আদালত দরপত্র আহ্বানকারী চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক পরিবহন গোলাম সরওয়ারকে কারণ দর্শানোর রুল জারি করেছেন।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (পরিকল্পনা ও প্রশাসন) জাফর আলম সারাবাংলাকে বলেন, পাঁচটি জেটিরই টেন্ডার আদালত স্থগিত করেছেন বলে শুনেছি। দু’জন রিট আবেদনকারীর পক্ষে উকিল নোটিশ পেয়েছি। বাকি তিনটি সম্ভবত কাল (মঙ্গলবার) আসবে।

বাল্ক কার্গোতে (খোলা জাহাজে আসা পণ্য) খালাসের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পাঁচটি লাইটার জেটি নির্মাণ করে। এর মধ্যে ২, ৩ ও ৪ নম্বর জেটি ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল, ১ নম্বর জেটি খাদ্যপণ্য এবং ৫ নম্বর জেটি সিমেন্ট ক্লিংকার খালাসের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়।

চলতি বছরের মার্চের শেষে পাঁচটি জেটি টেন্ডারের ভিত্তিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনার জন্য দেওয়ার উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে দরপত্র জমা দেওয়া আগে অভিযোগ উঠেছিল, ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল খালাসের তিনটি জেটির দরপত্রের শর্তাবলী এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যেন কবির স্টিল অ্যান্ড রিরোলিং মিলস লিমিটেড (কেএসআরএম) ছাড়া আর কেউ যোগ্য বিবেচিত না হয়।

বিজ্ঞাপন

গত ৮ মে ছিল এই তিনটি জেটির শিডিউল জমা দেওয়ার শেষদিন। কিন্তু সেদিন আকস্মিকভাবে টেন্ডার বক্স উধাও হয়ে যাওয়ায় কেউ টেন্ডার জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠে।

সর্বশেষ পাঁচটি জেটির মধ্যে দুটি (৩ ও ৪ নম্বর) জেটির সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে কেএসআরএম সেগুলো পরিচালনার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে অভিযোগকারীদের বক্তব্য সঠিক বলে আলোচনা তৈরি হয়।

জেটি দু’টি কেএসআরএমকে বুঝিয়ে দেওয়ার তোড়জোড়ের মধ্যে আদালতের পাঁচটি জেটির জন্য পৃথক পাঁচটি রিট আবেদন করে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এক নম্বর জেটির দরপত্রের বিরুদ্ধে সী এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড, ২ নম্বর জেটির জন্য মেসার্স এমএ নাছির অ্যান্ড ব্রাদার্স, ৩ নম্বর জেটির জন্য সি কোস্ট, ৪ নম্বর জেটির জন্য ইউনি ফ্রেন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড এবং ৫ নম্বর জেটির দরপত্রের বিরুদ্ধে সী এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড রিট আবেদন করে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (পরিকল্পনা ও প্রশাসন) জাফর আলম সারাবাংলাকে বলেন, টেন্ডার নিয়ে আপত্তি থাকলে সেটা আদালতের বাইরে আলোচনা করা যেত। আদালতে যাওয়ার কারণে টেন্ডার প্রক্রিয়া ঝুলে গেল। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা একটা বাধা। আমরা টেন্ডারে খুব ভালো দাম পেয়েছিলাম, উৎসাহ বোধ করছিলাম। আরও ১০-১২টি জেটি নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এভাবে বন্দরের কাজে বাধা দেওয়া অনভিপ্রেত।

বিজ্ঞাপন

বন্দরের নিজস্ব উদ্যোগে জেটিগুলো চালুর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেরকম প্রস্তুতি বা সিদ্ধান্ত নেই। টেন্ডারের মাধ্যমে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকেই আমরা দেবো। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল হবে। আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে জেটিগুলো চালুর চেষ্টা করব।’

সারাবাংলা/আরডি/এমআইএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন