বিজ্ঞাপন

ছয় সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় থমকে আছে এসপিএম প্রকল্প

January 19, 2018 | 9:23 am

হাসান আজাদ, স্পেশাল করসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: গভীর সমুদ্র থেকে দ্রুত সময়ে ও কম খরচে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাসের জন্য নির্মিতব্য পাইপলাইন প্রকল্প ৬ বিষয়ে সিদ্ধান্তের কারণে থমকে আছে। দ্রুত এই ৬ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া না গেলে প্রকল্প কাজ পিছিয়ে যেতে পারে।

২০১৪ সালে নেওয়া সরকারের ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন’ প্রকল্প সম্পর্কে জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

ওই কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পের কাজ তরান্বিত করতে যে ৬টি সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া প্রয়োজন সেগুলো হল— মহেশখালীতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কাটা, চট্টগ্রামে অবস্থিত কোরিয়ান ইপিজেডের ভেতর দিয়ে পাইপলাইন স্থাপন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলায় ভূমি অধিগ্রহণ, প্রকল্পের জন্য নির্দিষ্ট নৌ-চ্যানেল ও পাইপলাইনের নিরাপত্তা এলাকা নির্দিষ্টকরণ, সম্পূরক চুক্তি চূড়ান্তকরণ এবং চীনের পেট্রেলিয়াম পাইপলাইন ব্যুরোর (সিপিপি) সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৩৬ মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ আরম্ভ করার বাধ্যবাধকতা।

বিজ্ঞাপন

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বার্ষিক ইন্নয়ন কর্মসুচি (এডিপি) তে অন্তর্ভূক্ত এই প্রকল্পের কাজ তরান্বিত করতে চলতি মাসের শুরুতে জ্বালানি সচিবকে চিঠি দিয়েছেন ইর্স্টান রিফাইনারি (ইআরএল)-এর ডিজিএম (ইনস্টলেশন) এবং এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত।

জ্বালানি সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এসপিএম প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে যে সকল বিষয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন তা আমরা নিচ্ছি। কোনো কারণে প্রকল্প কাজ দেরি হবে না।’

জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক গত ৪ জানুয়ারি প্রকল্পের বিস্তারিত জানিয়ে জ্বালানি সচিবকে চিঠি দেওয়া ওই চিঠিতে প্রকল্পের কাজ তরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পের পাম্পিং স্টেশন ও ট্যাংক ফার্ম নিমার্ণের জন্য মহেশখালীর পাহাড় মৌজায় সংরক্ষিত বনভূমির প্রস্তাবিত স্থানের প্রাকৃতিক গাছ কাটার জন্য মন্ত্রিপরিষদের অনুমতি প্রয়োজন। শিগগির প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হবে বিধায় গাছ কাটার বিষয়ে দ্রুত অনুমতি প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডের এলাকার মধ্যদিয়ে প্রকল্পের প্রস্তাবিত পাইপলাইন স্থাপনে অপরাগতা জানায়। কেইপিজেডের সেফটি হ্যার্জাড ও সিকিউরিটির বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কারিগরি কমিটি। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গত ৮ জানুয়ারি থেকে প্রস্তাবিত পাইপলাইন রুট বরাবর কেইপিজেড এলাকার সভেতর জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্পের অধীনে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলায় ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শিগগির শুরু করা প্রয়োজন বলে চিঠিতে বলা হয়।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পের জন্য নির্দিষ্ট নৌ চ্যানেল ও পাইপলাইনের জন্য নিরাপদ এলাকা নির্দিষ্টকরণ করা প্রয়োজন। এ জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে নৌ মন্ত্রণালয়কে চিঠি হয়েছে। কাজটি দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পূরক চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষর করে ঋণচুক্তি এবং কর্মাশিয়াল কন্ট্রাক্ট করে দ্রুত প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সিপিপির সঙ্গে কর্মাশিয়াল কন্ট্রাক অনুযায়ী কাজ শুরু করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, সিপিপির অফশোর সার্ভে কাজের জন্য সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফোগরো ভেসেল এম ভি মেরিনারের মাধ্যমে এসপিএম স্থান ও অফশোর পাইপলাইন বরাবর জিওটেকনিক্যাল সার্ভে ৯২ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কেইপিজেড এলাকা শুরু বাকি। এর আগে ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের জন্য সিপিপি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)-এর মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বালিজ্যিক চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণের আবেদন করা হয়েছে। ঋণের বিষয়ে গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের প্রতিনিধি, চীনের  এক্মিম ব্যাংক ও সিপিপির প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়। এরপর একই বছরের ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে প্রকল্পের ঋণ বিষয়ে ফেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট এবং ৩ নভেম্বর ইআরডি ও চীনের এক্মিম ব্যাংকের মধ্যে ঋণ চুক্তি হয়।

সারাবাংলা/এইচএ/আইজেকে

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন