বিজ্ঞাপন

জলবায়ু পরিবর্তন: ‘ফান্ড’ শেকলে বাঁধা আবেদনকারীদের আশা

December 7, 2017 | 10:17 am

সারাবাংলা ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে যখন বিশ্ব নেতারা মেক্সিকোর কানকুন শহরে জড়ো হয়েছিলেন, তখন ভুক্তভোগী দেশগুলোতে আশা জেগেছিল- এক নতুন পৃথিবীর।

ঢাক-ঢোল পিটিয়ে যখন আলোচনায় বসলেন নেতারা তখন অন্তত তেমনটাই বোঝা গিয়েছিল। জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত আনুমানিক পাঁচ হাজার চার শ’ প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক সংকট সমাধানে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং উষ্ণায়নে সাগরের পানির স্তর উঠে আসার ঝুঁকি মোকাবেলা করতে উন্নত রাষ্ট্রগুলো প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে- এমন সিদ্ধান্তই এসেছিল দৃশ্যমান ওই আলোচনা সভায়।

উষ্ণায়নে সাগরের পানির স্তর উঠে আসায় প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মঙ্গোলিয়া, তাজাকিস্তান এবং কিরিবাসের মতো দ্বীপরাষ্ট্র- যেগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের সহয়তা দেওয়া হবে। ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড’ প্রকল্প কেবলমাত্র ক্ষুদ্র এসব দেশগুলোর অর্থনৈতিতেই সহায়ক হবে না, বরং পুরো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ মোকাবেলা করবে।
প্রায় এক যুগ পরে তহবিল গঠনে কাজ করা সংস্থা প্রশ্ন করতে শুরু করেছে কোথায় এই প্রকল্প কাজ করবে। সমালোচকরা বলছেন, এর অর্থ কী এমন দাঁড়ায় না যে দেশগুলো অর্থ বিনিয়োগ করছে না? ইতোমধ্যে ৮০০ কোটি টাকার বেশি বণ্টন করা হলেও কিরিবাসের মতো দ্বীপরাষ্ট্র এখনও সে অর্থ চোখে দেখেনি।

বিজ্ঞাপন

অথচ গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, কিরিবাস এবং এর অনেক প্রতিবেশী দেশ ইতোমধ্যে তহবিল গঠনে দাতাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষকরা বলছেন, কিরিবাস বিপদসীমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে অর্থ বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছেন তহবিল সংগ্রাহক সংস্থাগুলো। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হচ্ছে না।

গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড নিয়ে সমালোচনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৫ সালে দাতারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় অসংখ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়। অর্থ সংগ্রহ করতেই সংস্থাগুলোর ওই বছর অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগে। এমন কী যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুত অর্থের চেয়ে ১৬৬৫৫৯০০০০০০ টাকা (দুই বিলিয়ন ডলার) কম দেয়।

অন্যদিকে জার্মান ক্লাইমেট ফাইন্যান্স (জিসিএফ) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, মূলত জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক জিসিএফ-তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। অনুমোদিত সবগুলো প্রকল্পের মধ্যে শতকরা ৮৩ ভাগ বাস্তবায়ন করবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের মতে, এ ধরনের জটিল প্রকল্প পরিচালনার ক্ষেত্রে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে তখনও অলাভজনক সংস্থাগুলো বারবার অভিযোগ তোলে ব্যাংকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে।

বিজ্ঞাপন

পূর্ব আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়ার লিভিংস্টোনে অনুষ্ঠিত জিসিএফ’র বোর্ড মিটিংয়ে ‘সিভিল সোসাইটি গ্রুপ’ তাদের মতামত তুলে ধরেন এভাবে- কয়লা শিল্পে অর্থদাতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে জিসিএফ’র ফান্ড তুলে দেওয়া উচিৎ হবে না।
ইতোমধ্যে, কিরিবাস নিজেদের রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সাগরের পানির স্তর উঠা আসা রোধে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণে।

প্রশ্ন ওঠে, ক্ষুদ্র এই দ্বীপ রক্ষায় এসব কর্মসূচি কতটুকু কার্যকর হবে? সেটা কেউ বলতে পারে না। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে, ভ্রমণের জন্য পৃথিবীতে ‘টুকরো টুকরো স্বর্গ’ দ্বীপ রাষ্ট্র কিরিবাস এবং টোঙ্গার মতো ছোট রাষ্ট্রগুলো মূল নেতৃত্বের কাজ করছে, বড় রাষ্ট্রগুলোর মতো প্রতিশ্রুতিতে আটকে থাকছে না।

এটি/

বিজ্ঞাপন

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন