বিজ্ঞাপন

জাবিতে পাখি দেখতে টিকিট লাগবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

October 23, 2018 | 3:40 pm

।।স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: ‘এখন থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতকালে অতিথি পাখি দেখতে গেলে দর্শনার্থীদের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করতে হবে। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়বে। সেই সঙ্গে সেখানকার সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক এর বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা জানিয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি প্রকল্প সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার রেকর্ড সংখ্যক ২১ টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে একনেকে। একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেন।

এদিকে, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের রাস্তা ও ব্রিজসহ যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হচ্ছে। এজন্য ‘দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন’ নামের একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিব) ঋণ থেকে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। প্রকল্পের আওতায় ২৫৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ১৫৩ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ১ হাজার ৭২২ মিটার ব্রীজ বা কালভার্ট নির্মাণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়িত হবে ঢাকা বিভাগের সাভার এবং সাভার পৌরসভা, ধামরাই পৌরসভা, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, কালিয়াকৈর পৌরসভা, নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঞ্চন,তারাব, সোনারগাঁও পৌরসভা এবং রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলা, মানিকগঞ্জের মানিকগঞ্জ ও সিংগাইর পৌরসভা এবং নরসিংদী পৌরসভা। এছাড়া খুলনা বিভাগের খুলনা সিটি করপোরেশন, চালনা পৌরসভা, যশোর জেলার যশোর, নওয়াপাড়া ও ঝিকরগাছা পৌরসভা এবং বাগের হাট জেলার মোংলা পৌরসভায়।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, গত কয়েকবছর ধরে দেশে দ্রুত নগরায়ণ বাড়লেও এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় নগর অবকাঠামো উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। সে প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিকাশ, পরিবেশগত উন্নয়ন সাধন ও শহর অঞ্চলের অপরিকল্পিত বিস্তার রোধে এডিবির আর্থিক সহায়তায় ‘নগর অঞ্চল উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্পটি ২০১১ সালের জুলাই থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এটি চলবে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এই পর্যায়ে ঢাকা ও খুলনা বিভাগের নগর ও নগর সন্নিহিত এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় এডিবির সহায়তায় দ্বিতীয় নগর উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকার ড্রেনেজ ও রাস্তা নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত সেবা সুবিধা বাড়বে। সেই সঙ্গে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রস্তাব ঘটবে। এছাড়া প্রকল্পটি জলাবদ্ধতা নিরসন, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধণে পরিবেশগত অবনতিরোধেও অবদান রাখবে।

এক প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক জেলখানায় একটি করে কোর্ট রুম স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার পুন: নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যাতে আসামীদের স্বশরীরে কোর্টে হাজির হতে না হয় সেজন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোর্ট রুম থেকে কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া দ্বিতীয় নগর উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত নগর গুলোর জন্য একটি করে মাস্টারপ্ল্যান তৈরীরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, নগরগুলোতে যাতে প্রকল্পের দ্বৈততা সৃষ্টি না হয় । সেজন্য মাস্টার প্ল্যান প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ,কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার পুন:নির্মাণ,এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৬২৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ৩৫টি ড্রেজার ও সহায়ক জলযান সংগ্রহসহ আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, খরচ ৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পুনর্বাসনসহ নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন, খরচ ৭৭৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। বরিশাল শহরের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজিত নগর উন্নয়ন প্রোগ্রাম, খরচ ১৩০ কোটি টাকা। সৌর বেস স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে দূর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিটক নেটওয়ার্ক কভারেজ শক্তিশালীকরণ, খরচ ৪০৬ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা(কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশ্বে সার্ভিস লেন নির্মাণ, খরচ ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। কেরানীহাট-বান্দরবান জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, খরচ ২৩৫ কোটি টাকা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন,খরচ ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের ৭টি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, খরচ ১২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ ও আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম, খরচ ১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংযোগ সড়ক ও আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ, খরচ ২৫০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এস্টাবলিস্টমেন্ট অব থ্রি হ্যান্ডলুম সার্ভিস সেন্টারস ইন ডিফারেন্ট লুম ইনটেনসিভ এরিয়া প্রকল্প, খরচ ৮৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নরসিংদী এর আধুনিকায়ন ও অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ, খরচ ৬০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অবকাঠামো উন্নয়ন, খরচ ৬৯০ কোটি টাকা। গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ, খরচ ৫৯১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের চর-বাগাদী পাম্প হাউজ ও হাজিমারা রেগুলেটর পুনর্বাসন, খরচ ১১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, খরচ ৩২১ কোটি ২২ লাখ টাকা। মহিষ উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়), খরচ ১৬২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কার্যক্রম জরুরী সহায়তা, খরচ ৫৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১ হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

সারাবাংলা/জেজে/জেএএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন