বিজ্ঞাপন

জয়দেবপুর-এলেঙ্গা প্রকল্প সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে

April 18, 2018 | 8:36 am

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

বড় অংকের ব্যয় বাড়ছে ‘জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক-৪ লেনে উন্নীত করণ’ প্রকল্পে। তৃতীয় বারের মতো এ ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ২ হাজার ৭৮৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সেখান থেকে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩ হাজার ৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে বিশেষ সংশোধনীর মাধ্যমে আরও ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩ হাজার ৩৬৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

এখন আবার নতুন করে ২ হাজার ২২৮ কোটি ৪০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, দুই বছর বাড়ছে বাস্তবায়নের সময়কালও। চলতি বছরের মার্চে সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও এখন ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

এ জন্য প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়াকরণ শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জপথ অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) শফিকুল ইসলাম গতকাল সোমবার সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গ নতুনভাবে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

যেমন, রাস্তার একপাশে এসএমভিটি লেন, অতিরিক্ত ফ্লাইওভার, ১৩টি আন্ডারপাস ও  যাত্রী শেড নির্মাণ এবং রাজস্ব খাতে যানবাহন রেজিষ্ট্রেশন ফি, বিদ্যুৎ বিল, এনভায়রনমেন্ট ক্লিয়ারেন্স ফিসহ বিভিন্ন ফি বৃদ্ধির কারণে ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সেই সঙ্গে ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) এবং আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এডিএফডি)ও ঋণ সহায়তা দিচ্ছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ উন্নতকরণের মাধ্যমে ট্রান্সপোর্ট এবং ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়কের ৭০ কিলোমিটার সড়ক ২-লেন হতে ৪-লেনে উন্নীত করার জন্য ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল একনেকে মোট ২ হাজার ৭৮৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০১৮ সালের মার্চে বাস্তবায়নের জন্য মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদিত হয়। ভূমি অধিগ্রহণের অতিরিক্ত অর্থ সংস্থানের জন্য ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মোট ৩ হাজার ৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০১৮ সালে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদন পায়। পরবর্তীতে প্রকল্পটির বিশেষ সংশোধিত ডিপিপি ২০১৬ সালের ২২ মার্চ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মোট ৩ হাজার ৩৬৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদকাল বৃদ্ধি, বিভিন্ন অঙ্গের পরিমান ও ব্যয় বৃদ্ধিসহ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলনের  কারনে মোট ৫ হাজার ৯৯৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বিতীয় সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটি উভয়পাশে এসএমভিটি লেনসহ ছয় লেনে উন্নীতকরণ হলে দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ এই মহাসড়কাংশ ব্যবহার করে ভবিষ্যতে বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত ও নেপাল এবং বুড়িমারি দিয়ে ভারত ও ভূটানের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সড়ক সংযোগ সহজতর হবে। একই সঙ্গে জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।

সারাবাংলা/জেজে/এমএস

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন