বিজ্ঞাপন

ঢাকায় কর্মব্যস্ত মানুষের চাপ বাড়ছে

June 20, 2018 | 4:40 pm

।। এমদাদুল হক তুহিন ও হাবিবুর রহমান।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: গ্রামে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি শেষে ঈদের পঞ্চম দিনে ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষেরা। বুধবার (২০ জুন) মহাখালী ও গাবতলী টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ করে নগরীতে ফিরছেন সব শ্রেণি পেশার মানুষই। বিভিন্ন বাসে করে বাস টার্মিনালগুলোতে এসে নামছেন শত শত মানুষ।

ঢাকামুখি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকায় আসার পথে এবার রাস্তায় যানজট নেই। ফেরিঘাটেও অপেক্ষার পালা নেই। তবে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

ঈদের ছুটি কাটিয়ে ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন জহুরুল হক। এনা পরিবহনের বাস থেকে মহাখালীতে নামার পর সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় যানজট নেই। তবে অন্য সময়ের চেয়ে বাসের ভাড়া বেশি।’

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী থেকে ঈদের ছুটি কাটিয়ে এসেছেন স্কয়ার ফার্মার কর্মকর্তা শায়ন রহমান। এ কে ট্রাভেলসের বাসে করে গাবতলীতে এসে নেমেছেন বুধবার দুপুরে।

সারাবাংলাকে শায়ন বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার সময় রাস্তায় যানজট থাকলেও আসার পথে রাস্তায় কোনো যানজট পাইনি। তবে বাসে ৩০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা রাখা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

ছুটি কেমন কাটল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি কাটাতে পাঁচ মাস পর গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। অনেকদিন পর বন্ধুদের একসঙ্গে পেয়েছিলাম। এই চারদিনের অধিকাংশ সময় আড্ডা দিয়ে কাটিয়েছি। এছাড়া পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ তো অন্য রকম। সবমিলিয়ে ঈদের মুহূর্তগুলো খুব ভালো কেটেছে।’

গাবতলীতে কথা হলে বগুড়া থেকে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিবা আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘লেখাপড়ার চাপে অনেকদিন গ্রামে যাওয়া হয়নি। গ্রামে এক কাজিনের বিয়ে ছিল। ঈদের ছুটিতে সেই বিয়েতে অংশ নিই। বাবা-মা বন্ধু বান্ধবী ও গ্রাম; সবমিলিয়ে এবারের ঈদ অনেক আনন্দে কেটেছে।’

হানিফ এন্টারপ্রাইজের গাবতলী কাউন্টারের ম্যানেজার জাকির মল্লিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকার বাইরে থেকে যাত্রী আসার চাপ তৈরি হয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত যাত্রীদের এই চাপ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘এবার রাস্তায় যানজট নেই। বাসগুলো ঠিক সময়েই ঢাকা এসে পৌঁছাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়াই রাখা হচ্ছে।’

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যাল পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা এখনো রয়েছে ফাঁকা। সিগন্যালে যানজট নেই। কোথাও কোথাও গাড়ির ছোট ঝটলা সৃষ্টি হলেও অপেক্ষা করতে হচ্ছে না দীর্ঘক্ষণ। তবে গত কয়েকদিনের চেয়ে ঢাকায় কর্মজীবী মানুষের চাপ বেড়েছে।’

ঢাকামুখি মানুষের চাপ সদরঘাটে: পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে রাজধানীর সদরঘাটে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে অন্তত ৬০টি লঞ্চ ঘাটে ভিড়েছে। প্রতিটি লঞ্চই ছিল যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ। মানুষের ভিড়ে সদরঘাটের পন্টুনে যেন তিল ধরার জায়গা নেই।

এদিকে ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপে লঞ্চ টার্মিনালের আশেপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে সড়কে সিএনজির জটে দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ নদীপথে যাতায়াত করেন। আর নদীপথে রাজধানীতে প্রবেশের অন্যতম পথ সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে আসা প্রতিটি লঞ্চ ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। পন্টুন থেকে বৃদ্ধ ও শিশুদের বেশ ঝুঁকি নিয়ে নামতে দেখা গেছে।

চাঁদপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন সাদিয়া জাহান। একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন তিনি। সাদিয়া বলেন, ‘প্রতি ঈদের আগে-পরে এমন ভিড় হয়ে থাকে। তবে আজকের ভিড় যেন একেবারেই অন্যরকম। লঞ্চে ওঠার সময়-ই ভয় পেয়েছিলাম। ঠিকমত আসতে পেরেছি, এটিই শুকরিয়া।’

আরেক যাত্রী আসাদ রহমান বলেন, ‘জীবনের আনন্দ খুঁজতে হলে ঝুঁকি একটু থাকবেই। অনেক কষ্টে বাড়ি গিয়েছিলাম বটে, কিন্তু প্রিয়জনদের কাছে পেয়ে সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা আর কাজের টানে ঢাকায় ফেরা দুটোই জীবনঘনিষ্ঠ। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে নদী পারাপারে সরকার জনগণ উভয়কেই সতর্ক হওয়া উচিত।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন