বিজ্ঞাপন

ঢামেক হাসপাতালে বাক্সেই ‘বন্দি’ অভিযোগ

November 11, 2018 | 9:31 am

।। সৈয়দ সোহেল রানা,  স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অভিযোগের অন্ত নেই। হাসপাতালের ভেতরে ঢুকলে এই অভিযোগ, সেই অভিযোগ। কারও মোবাইল চুরি হয়েছে। কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে গেছে। ট্রলি পাওয়া যায় না, পাওয়া গেলেও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। সেসব অভিযোগ আর কোনো পরামর্শ থাকলে তা জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জায়গায় বসিয়েছিল ‘অভিযোগ-পরামর্শ’ বাক্স। কিন্তু সেই বাক্সের তালা আর খোলা হয়নি।

সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগ, নতুন ভবন, জরুরি বিভগ ও বার্ন ইউনিটে মোট চারটি অভিযোগ বক্স রয়েছে। কিন্তু গত এক বছরের মধ্যে সেগুলো খুলে দেখা হয়েছে কিনা কেউ বলতে পারে না।

বর্হিবিভাগে কর্তব্যরত কয়েকজন কর্মচারী বলেন, ‘আমাদের চোখে কোনদিন খুলতে দেখি নাই। কাউকে তো কখন অভিযোগ বক্সেও কিছু ফেলতে দেখিনি। অনেকে বোঝেও না এটা আসলে কিসের বক্স।’

বিজ্ঞাপন


নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেন বলেন, ‘লোকজনের অভিযোগ তো অনেক শোনা যায়। কিন্তু কয়জন আর লিখিত অভিযোগ বক্সে ফেলে? এটা হাসপাতাল প্রশাসনের দায়িত্ব।’

জরুরি বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, ‘চাকরির বয়সতো অনেকদিন হয়ে গেল। কোনোদিন কোনো অভিযোগকারীকে এসব বাক্সে কিছু ফেলতে দেখিনি। হাসপাতালের পক্ষ থেকেও কোনদিন ওইসব বাক্স খুলতে দেখিনি।’

বার্ন ইউনিটের গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায়, একটি অভিযোগ বক্স খুলে নিচে রাখা। ঢাকনা খুলে দেখা গেল তাতে একটা রেজিস্ট্রি খাতা রাখা। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন আনসার সদস্য সাইফুল ইসলাম। খাতা রাখার বিষয়ে তার কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ তো অভিযোগ করে কিছু ফেলে না। তাই ওটা অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়।’

বিজ্ঞাপন

ঢামেক হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত সিনিয়র সাংবাদিক হালিম মোহাম্মদ বলেন, ‘হাসপাতালে তো রোগীদের অনেক অভিযোগ। পদে পদে অভিযোগ। অভিযোগ বক্সের কথা কেউ জানে, কেউ জানে না। কিন্তু হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোনদিন অভিযোগ বক্স নিয়ে কোনো কার্যক্রম আদৌ চোখে পড়েনি।’

জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমানকে অভিযোগ বক্সের কথা বলতেই তিনি হেসে ফেলেন। বলেন, ‘আর কিছু পেলেন না। অভিযোগ বক্স নিয়ে লিখতে হবে। এটা নিয়ে আমার জানা নাই, এটা প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।’

ঢাকার পোস্তগোলা থেকে রোগীর স্বজন আখতার হোসেন বলেন, ‘অনেকদিন ধরে তার ভাই আলমগীর হোসেন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। সোমবার তার ছুটি হয়। ভর্তির আগে গেট পাশের জন্য ২০০টাকা দেওয়া হয়েছিল যেটা ফেরতযোগ্য। ছুটির পর সেখান থেকে ২০টাকা রেখে ১৮০টাকা ফেরত দেওয়া হয়। জানতে চাইলে বলে চা খাওয়ার জন্য রাখা হয়েছে। রোগী নিয়ে বাসায় যাব, না অভিযোগ দিয়ে বেড়াব। আর অভিযোগ দিয়ে কোন কাজ হবে কিনা আবার সেটাও দেখার বিষয়।’

বিজ্ঞাপন


অভিযোগ বক্সের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন আগে একবার খোলা হয়েছিল। অনেক সময় সরাসরি লিখিত অভিযোগ পাই। তখন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অনেক সময় ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় খোলা হয়না। মনে করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। শিগগিরই আবার এর কার্যক্রম শুরু করবো।’

সারাবাংলা/এসএসআর/এমও

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন