July 22, 2018 | 6:50 pm
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছেন চেম্বার আদালত।
রোববার (২২ জুলাই) হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে বাস মালিক কর্তৃপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য আগামী ৮ অক্টোবর দিন ঠিক করে আপিলের বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন আদালত।
এই আদেশের ফলে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রোববার আদালতে বাস মালিক পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। নিহত তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথেরিন মাসুদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন। রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর রায় দেন বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ের কপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।
এর মধ্যে বাসের (চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স) তিন মালিক দেবেন ৪ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৪শ ৫২ টাকা, বাস চালক জমির উদ্দিন দেবেন ৩০ লাখ টাকা এবং রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানী দেবেন ৮০ হাজার টাকা।
তিন মালিক সমান হারে টাকা দেবেন। এ টাকা ক্যাথরিন মাসুদ, নিহতের ছেলে নিষাদ মাসুদ ও বৃদ্ধা মা নুরুন নাহার পাবেন বলে রায়ে বলা হয়েছে।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মনির। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরসহ মাইক্রোবাসের পাঁচ আরোহী নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জজেলা জজ আদালতে মোটরযান অরডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাস মালিক,চালক এবং ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে পৃথক দুটিমামলা করেন। পরবর্তীতে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দুটি হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন বাদীরা।
নিম্ন আদালতথেকে মামলা দুটি স্থানান্তরে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্টেওই আবেদন দুটি করা হয়। তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথেরিন মাসুদ এবং মিশুক মনিরের স্ত্রী কানিজ এফ কাজী ও তাঁদের ছেলে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর হাইকোর্টে ওই দুটি আবেদন করেন। যার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল দেন। এরপর হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বছর তিন ডিসেম্বর রায় দেন।
সারাবাংলা/এজেডকে/জেডএফ