বিজ্ঞাপন

তৈরি হচ্ছে ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক নেটওয়ার্ক

November 18, 2018 | 8:21 am

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক নেটওয়ার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ‘গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারা বাজার সড়কে বিদ্যমান ৯টি সরু ও জরাজীর্ণ সেতুর স্থানে ৯টি আরসিসি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ’নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কে দীর্ঘদিন আগে নির্মিত ছয়টি সরু এবং ক্ষতিগ্রস্ত কংক্রিটের সেতু পুন:নির্মাণ এবং অস্থায়ীভাবে নির্মিত তিনটি সরু ও ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি সেতুর স্থলে স্থায়ী কংক্রিটের টেকসই ও নিরাপদ সেতু নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রস্তাব পাওয়ার পর অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ১ জুলাই প্রকল্পটি ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদনের সুপারিশ দেওয়া হয়। এখন কার্যক্রম বিভাগের একনেক অনুবিভাগে প্রকল্পটি প্রস্তুত রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পর এটি অনুমোদন পেতে পারে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা মহাসড়ক। সড়কটি সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২২তম কিলোমিটারে গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট থেকে আরম্ভ হয়ে ছাতক উপজেলা, দোয়ারাবাজার উপজেলার কাছে সুরমা নদী অতিক্রম করে লাফার্জ সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ২৭ কিলোমিটার। সড়কটি দোয়ারা বাজার উপজেলার সঙ্গে সিলেট ও সারাদেশের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।

সড়কটিতে সব মিলিয়ে ১৩টি সেতু রয়েছে। তার মধ্যে সুরমা নদীর ছাতক প্রান্তে ১০টি এবং দোয়ারাবাজার প্রান্তে রয়েছে ৩টি সেতু। ছাতক প্রান্তের ১০টি সেতুর মধ্যে ৬টি কংক্রিটের এবং সেতুগুলো পুরনো ও ক্ষতিগ্রস্ত। অপর প্রান্তের ৩টি বেইলি সেতু ঝুঁকির মুখে। বাকি সেতুগুলো ১০ থেকে ১২ বছর আগে নির্মিত হয়েছে তাই এখনো মজবুত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবিত ৯টি সেতুর মধ্যে ছাতক শহরের উপকণ্ঠে পেপারমিল এলাকায় একটি এবং রহমতবাগ এলাকায় একটি সেতু ৪ লেনে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকি সেতুগুলো দুই লেনে নির্মাণ করা হবে।

এই ৯টি সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে ১০৩ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর চলতি বছরের ১ জুলাই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই পিইসি সভার সিদ্ধান্তে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। পুনর্গঠিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, এক লাখ ঘন মিটার মাটির কাজ, ২ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ, ৯৮০ মিটার ডাইভারশন সড়ক নির্মাণ, ২৭৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দুই লেন বিশিষ্ট ৭টি সেতু নির্মাণ, চার লেন বিশিষ্ট ১২৭ দশমিক ৫৮ মিটার সেতু নির্মাণ, ৩৩ হাজার বর্গ মিটার সিসি ব্লকসহ জিও টেক্সটাইল, ২ হাজার ৬২০ মিটার ব্রিক টো-ওয়াল, ৫৪০ মিটার আরসিসি টো-ওয়াল, জেনারেল অ্যান্ড সাইট ফ্যাসিলিটিজ, সাইন-সিগনাল, গাইড পোস্ট এবং রোড মার্কিংসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করা হবে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে একনেকের জন্য তৈরি সার-সংক্ষেপে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলাসহ ঢাকার নিরাপদ ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন