March 20, 2019 | 9:28 am
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: দেশ যত এগিয়ে যাবে চক্রান্ত তত প্রবল হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, দেশ যত এগিয়ে যাবে শত্রুরা আরও তত বেশি আঘাত হানার চেষ্টা করবে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১৪ দল আয়োজিত আলোচনায় এসব কথা বলেন আমু।
বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র বাঁধা বিএনপি-জামায়াত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ এই বিষফোঁড়া যতদিন থাকেব ততদিন পর্যন্ত উন্নয়ন-অগ্রগতির ক্ষেত্রে বারবার বাধা আসবে। তাই এই বিষফোঁড়াকে বাংলার মাটি থেকে কেটে ফেলে দিতে হবে।’
আমির হোসেন আমু বলেন, গুটিকয়েক রাজাকার, আলবদর ছাড়া সমগ্র জাতি সাড়ে সাত কোটি মানুষ সেদিন মুক্তিযোদ্ধা ছিল। মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার জন্য, এই দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে খাটো করার জন্য একটা প্রচার চালানো হয় যে, এক কোটি লোক যারা বিদেশে গেছে শুধু তারা মুক্তিযোদ্ধা আর কেউ না। এটা সঠিক নয়।
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল দাবি করে আমু আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড কোনো ব্যক্তি হত্যাকাণ্ড ছিল না। বঙ্গবন্ধু ছিল এই দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূলনায়ক। তার নির্দেশে জাতীয় চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন, তাদেরকেও কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হল। তারপর যে জাতীয় চারনীতির উপর সংবিধান হয়েছিল, সেই চার মূলনীতি ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হল। ২১বছর এবং খালেদা জিয়া ১০ বছর এমনিভাবে দেশটা পরিচালিত হয়েছে।
দেরিতে হলেও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ১৪ দলের নেতারা। তারা বলেণ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠছে। মানুষের দিন দিন মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামে কোন অভাব নেই। বঙ্গবন্ধু দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন, সেই হাসি ফুটছে। সবকিছুতেই এই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং দেশ যত এগিয়ে যাবে চক্রান্ত তত প্রবল হবে।
১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘চক্রান্ত আবারও চলছে। কারণ যে দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করে নাই, বঙ্গবন্ধুর শোক দিবসে ভূয়া জন্মদিন পালন করেছিল তাদের বিষদাঁত এখনো শেষ হয়ে যায় নাই। তাদের চক্রান্ত এখনো শেষ হয় নাই।’
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সুস্পষ্ট ঘোষণা ছিল, এই দেশে দুর্নীতি আমি হতে দেব না। চোরের দেশ হতে দেব না। কিন্তু সেই সময়ে নতুন ধনী হয়েছিল, যারা টাকার পাহাড় বানিয়ে এই বাংলাদেশকে তাদের স্বর্গরাজ্য পরিণত করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আঘাত ছিল নব্য ধনিকদের প্রতি। কিন্তু আজকের বাংলাদেশেও সেই সমতা নেই। আমি উন্নয়নের পথে, আমি সামনে বাড়ছি।’
স্বাধীনতা পরবর্তীতে দেওয়া জাতির পিতার বক্তব্যগুলো সংকলিত করে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আছেন, বঙ্গবন্ধু থাকবেন। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে তার কথাকে জানতে হবে, উপলব্ধি করতে হবে। তাকেই অনুসরণ করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট, পাকিস্তানের দ্বারা পরিচালিত হয়ে পাকিস্তানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, এরা গণতন্ত্রের কাছে ক্যান্সারের মতো একটা ক্ষত ও অশুভ বিষফোঁড়া। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই বিষফোঁড়ার জন্ম দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এই বিষফোঁড়া বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বারবার বিভক্তি সৃষ্টি করেছে এবং উন্নয়ন অগ্রগতি ব্যহত করেছেন।’
১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-একাংশ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার, জাসদ( একাংশ) সভাপতি নাজমুল হক প্রধান, জেপি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, বাসদের রেজাউর রশিদ খানসহ অনেকে। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর ১৪ দলের আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।
সারাবাংলা/এনআর/আরএফ /এসএমএন