বিজ্ঞাপন

নওগাঁ-৬: নৌকার অবস্থান ভালো, ধানের শীষে নানা দ্বন্দ্ব

December 12, 2018 | 1:51 pm

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, আব্দুর রউফ পাভেল।।

বিজ্ঞাপন

নওগাঁ: দেশের উত্তর জনপদের সীমান্ত ঘেষা জেলা নওগাঁ। জেলায় আত্রাই ও রাণীনগর এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ আসন। আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মাঠ পর্যায়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির জন্য সাধারণ মানুষের সাথে গণসংযোগ করছেন দলের নেতা কর্মীরা।

বিএনপি থেকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত প্রার্থী চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর দীর্ঘ ১২বছর পর আবারো রাজনীতির মাঠে ফিরে এসেছেন। হঠাৎ রাজনীতিতে তার ফিরে আসা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নতুন হিসাব-নিকাশ। দুই ভাই সমর্থিত গ্রুপের মধ্যে কোনো মিল না হওয়ায় সেই দ্বন্দ্ব দিন দিন চরমের দিকে যাচ্ছে। তাই, এই আসনে নৌকার অবস্থান ভালো হলেও নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে ধানের শীষের অবস্থা খুবই নাজুক।

নওগাঁর আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলা এক সময় সর্বহারা ও বহুল আলোচিত বাংলাভাইয়ের (জেএমবি) অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর। জোট সরকারের শেষের দিকে এখানে উত্থান হয় বহুল আলোচিত বাংলা ভাই নামক সন্ত্রাসী বাহিনীর। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবীর এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন। তখন এই আসনের ধানের শীষের হাল ধরেন তারই ছোট ভাই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু। তিনি প্রায় এক যুগ ধরে এই দুই উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিভাবক হিসেবে ছিলেন। তিনি গত ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার কাছে পরাজিত হলেও দলের নেতাকর্মীদের সুখ-দু:খের সময় পাশে এসে দাড়িয়েছেন সবসময়। তাকেই মনোনয়ন দেওয়ার দাবি ছিলো এই আসনের বিএনপির নেতা-কর্মীর। কিন্তু হঠাৎ করেই তার বড় ভাই আলমগীর কবীর বিএনপিতে ফিরে আসায় দল তাকে চূড়ান্ত ভাবে মনোনয়ন দেয়। এতে দুই উপজেলার বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, হতাশা, চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অপরদিকে গত ২২ নভেম্বরে নওগাঁ-৬ আসনের বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতারা আলমগীর কবীরকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে।

বিজ্ঞাপন

রাণীনগর থানা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএস আল ফারুক জেমস বলেন, এই অঞ্চলের বিএনপির সংকটময় সময়ের একমাত্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন আনোয়ার হোসেন বুলু। অথচ এই একনিষ্ঠ কর্মীকে মনোনয়ন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে এই এলাকার বিএনপি সমর্থিত মানুষরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

এলাকার সাধারণ মানুষের বক্তব্য,‘আমরা আগেও বুলু ভাইয়ের ছিলাম, এখনো আছি। আমরা বুলু ভাইয়ের নির্দেশের দিকে চেয়ে আছি। বুলু ভাই আমাদেরকে যে নির্দেশ দেবেন সেই অনুযায়ী দুই উপজেলার বিএনপির নেতা ও কর্মীরা কাজ করবে।’

রাণীনগর উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল বারী মোল্লা বলেন, নৌকা প্রতিক উন্নয়নের প্রতিক তা এই অঞ্চলের তৃণমূল থেকে শুরু করে সবারই জানা। আমাদের মাঝে কোন দ্বিধা বা দ্বন্দ্ব নেই। এখন আমরা হাতে হাত আর কাঁধে কাঁধ রেখে নৌকার পক্ষে কাজ করছি। কোন পরাশক্তিই আমাদের বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না। কারণ এই জনপদের মানুষ আর সর্বহারা ও বাংলা ভাইয়ের তান্ডব দেখতে চায় না। তারা শান্তি আর সুখে বসবাস করতে চায়। এই জনপদে গত ১০ বছর যাবৎ শান্তির যে সুবাতাস বইছে তা ধরে রাখতে নৌকার কোনো বিকল্প নেই। তাই, আমি আশাবাদি আগামী নির্বাচনেও সবাই ভোট দিয়ে নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন