বিজ্ঞাপন

নতুন রেলপথ নির্মাণ: ৩০ কোটি টাকা পরামর্শক ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন

November 30, 2017 | 10:32 am

জোসনা জামান, সারাবাংলা

বিজ্ঞাপন

পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল সংযোগ স্থাপনের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য মাগুরা জেলার মধুখালী হতে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত নতুন  ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৩৪ কোটি ৮ লাখ টাকা।

তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত ‘পরামর্শক ব্যয়’ ৩০ কোটি ৬৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্মপ্রধান মো. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পরামর্শক খাতের ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হবে। আমরা বলছি পরামর্শক ব্যয় কিছুটা বেশি হয়েছে। যদিও এটি মোট প্রকল্প ব্যয়ের ১০ শতাংশের অনেক নিচে। তারপরও রেল মন্ত্রণালয় আমাদেরকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে পারলে আমরা বরাদ্দ দেব।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘সম্ভাব্যতা যাচাই, ডিজাইন প্রণয়ন ও সুপারিভিশনের কাজের জন্য পরামর্শক প্রয়োজন রয়েছে। আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় পিইসি সভায় যেসব বিষয় তুলে ধরা হবে সেগুলো মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এনজিও-কে সাব কন্সালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ করে এসএমপি ও আরপি বাস্তবায়ন ও নবায়ন করা হবে বলে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এখানে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাবও করা হয়েছে। কিন্তু এর প্রয়োজনীয়তা ও এনজিও নিয়োগ পদ্ধতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। তা ছাড়া প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের পরিধি ও ব্যয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ১৮৬২ সালে দর্শনা হতে জগতি পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মধ্যদিয়ে এ অঞ্চলে রেলওয়ের যাত্রা শরু হয়। এরপর ১৮৭০ সালে গড়াই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি তা গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের বাঁশ, বেত, পাট বহনের গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৩২ সালের ১ জানুয়ারি কালুখালী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করা হয়। একই সময়ে আরও একটি শাখা লাইন মধুখালী থেকে কামারখালী ঘাট পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়। এ সময় লাইনটি এলাকার মানুষের কাছে লাইফ কোড হিসেবে চিহ্নিত ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই শাখাটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি জেলাকে রেলনেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার যে পরিকল্পনা নিয়েছে,সে লক্ষ্য পূরণে মাগুরা জেলাকে নতুন করে রেল সংযোগের আওতায় পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মাগুরা জেলাকে বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতুর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেও সম্প্রসারণ ঘটবে। এসব বিবেচনায় ২০১৮ সালের জুন থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নে জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পা কমিশনে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ১৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ২৩ দশমিক ৯০ কিলোমিটার ট্র্যাক ওয়ার্ক, ৭২২ মিটার ব্রিজ ওয়ার্কস, তিনটি স্টেশনে সিগন্যালিং ওয়ার্কস এবং আনুষাঙ্গিক অন্যান্য পূর্ত কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রসঙ্গত,সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প প্রস্তাব পাওয়ার পর তা অনুমোদনের প্রক্রিয়া হিসেবে পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় যেসব সুপারিশ দেওয়া হবে সেগুলো প্রতিপালন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে পুনরায় পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে হয়। তারপরই সব ঠিকঠাক থাকলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয় পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে।

সারাবাংলা/জেজে/আইজেকে/২৯ নভেম্বর/২০১৭

বিজ্ঞাপন

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন