বিজ্ঞাপন

নাট্যকার গাজী রাকায়েতকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

March 21, 2018 | 10:11 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ফেসবুক স্ক্রিনশট প্রকাশ করায় নারী মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারায় নাট্যকার ও পরিচালক গাজী রাকায়েতের মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২১ মার্চ) বিকালে শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ ব্যানারে মামলা প্রত্যাহার ও গাজী রাকায়েতের বিচার দাবি করে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শাহবাগ আন্দোলনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানবাধিকারকর্মীরা। বক্তারা আইসিটি আইনে করা এই মামলা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। নয়তো গাজী রাকায়েত এই শাহবাগে ক্ষমা চেয়েও পার পাবে না বলে উল্লেখ করেন তারা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না করলে আগামী ৩১ মার্চ শাহবাগে প্রতিবাদকারীরা সমাবেশ করবেন বলে জানানো হয়।

ব্লগার ও একটিভিস্ট আরিফ জেবতিক বলেন, ঘটনা ঘটার পর রাকায়েত বলেছিলেন তার মোবাইল হ্যাক করা হয়েছে। আবার কখনও বলেছেন তার স্টুডেন্টরা এটি করেছে। সেটাই যদি হয় তাহলে কেন আপনার স্টুডেন্টকে হাজির করছেন না। উল্টো ভিকটিমের বিরুদ্ধে মামলা করে রাকায়েতের আসল চরিত্র ফুটে উঠেছে যে, তিনিই সেই কাজটি করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেন, যদি আপনার স্টুডেন্টরা কাজটি করে থাকে তাহলে ভিকটিম সঙ্গীতার বিরুদ্ধে মামলা কেন?

বিজ্ঞাপন

মিডিয়ায় কাজ করে যারা নারীকে প্রচীনকালের ভোগ্যপণ্য হিসেবে মনে করে, তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা এরকম কাজ করে যাচ্ছে, সমাজে তাদেরকে বয়কট করতে হবে। গাজী রাকায়েতের বিভিন্ন নাটক ও ছবি বয়কট করার আহ্বান জানান বক্তারা।

ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড.সামিনা লুৎফা  বলেন, বলেন,‘ গাজী রাকায়েতের মতো এ ধরনের লোকের জায়গা সংস্কৃতি অঙ্গনে নেই ৷ এটা তো স্পষ্ট যে,গাজী রাকায়েত যদি অপরাধী না হতেন, তাহলে তিনি কেন ৫৭ ধারা মামলা করেছেন? এতে প্রমাণিত হয় যে তিনি এ ধরনের কাজ করেছেন ৷ একজন সংস্কৃতিবান লোক কখনও এ ধরনের অপকর্ম করতে পারে না ৷”

লেখক সাদিয়া নাসরিন বলেন,” গাজী রাকায়েত বলেছেন তার ফেসবুক আইডি না কি হ্যাক হয়ে গেছে ৷ কিন্তু হ্যাক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে তার এতো লেইট হলো কেন? আপনাদের মতো মানুষেরা নারীকে অপমান করে হ্যাক হিসেবে চালিয়ে দিবেন, এটা কেউ মানবে না ৷

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে মানবাধিকার কর্মী জাকিয়া শিশির বলেন,’ ৫৭ ধারা একটি কালো আইন ৷ কিন্তু গাজী রাকায়েতের মতো একজন ব্যক্তি এ আইনটি ব্যবহার করেছেন, এটা ভাবতে কষ্ট হয় ৷ তিনি যদি এ অপকর্মের জন্য দায়ি না থাকেন, তাহলে কেন তিনি এ আইনটির সাহায্য নিলেন?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক সংহতি জানিয়ে বলেন,” ৫৭ ধারা একটি কালো আইন ৷ ৫৭ ধারা ব্যবহার করে মামলা করে তিনি একই সাথে দুটি অপরাধ করেছেন”

গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক আসাদুজ্জামান মাসুমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন রবিন আহসান (প্রকাশক), বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আদনান রিয়াদ, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বাম নেত্রী লাকি আক্তার,সাংবাদিক অঞ্জন রায়, জাকিয়া শিশির, ইশরাত জাহান উর্মি, তরুণ নির্মাতা সংগঠনের পরিচালক সাহাদাত রাসেল, অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক কামাল পাশাসহ অন্যান্যরা ৷

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন মিডিয়া কর্মী, গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তি এই সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি এক তরুণী ফেসবুক মেসেঞ্জারে গাজী রাকায়েতের সঙ্গে কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশট প্রকাশ করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। গাজী রাকায়েত দাবি করেন, তার ফেসবুক আইডি পরিচিত আরও কয়েকজন ব্যবহার করেন, তাদেরই কেউ এই কাজ করে থাকতে পারেন।

আদাবর থানায় যোগাযোগ করে জানা গেছে গাজী রাকায়েতের করা মামলার নম্বর ১৮। আর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) মাইকেল বনিক সারাবাংলা ডটনেটকে বলেন, ‘১৬ তারিখ রাতে নাট্যকার গাজী রাকায়েত ৫৭ (২) ধারায় একটি ফেসবুক লিংকের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখছি আমরা।’

সারাবাংলা/ এসবি/এমএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন