বিজ্ঞাপন

নানা-মায়ের কবরের পাশে ঠাঁই পেলেন রাজীব

April 18, 2018 | 1:58 pm

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

পটুয়াখালী: গ্রামে নানা ও মায়ের কবরের পাশে ঠাঁই পেলেন রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় হাত হারানোর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রাজীব।  বুধবার (১৮ এপ্রিল) সাড়ে নয়টার দিকে জানাজা শেষে তার দাফন কাজ সম্পন্ন হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল)  রাত পৌনে ২টার দিকে রাজীবের মরদেহ পটুয়াখালীর বাউফলের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।

মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে প্রথম নামাজের জানাজা শেষে বিকালে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে রাজীবের লাশবাহী গাড়ী। গ্রামে লাশ পৌঁছার পরই চলছে শোকের মাতম।

বিজ্ঞাপন

বাউফল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বুধবার সকাল সোয়া ৯টায় বাউফলের পাবলিক মাঠে শেষ নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। চীফ হুইপ আসম ফিরোজ এমপি, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ড, মাছুমুর রহমান, পুলিশ সুপার মইনুল হাসান, রাজীবের ছোট দুই ভাই মেহেদী ও আব্দুল্লাহ সহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেয়।

পরে সাড়ে ৯টায় উপজেলা সদরের দাসপাড়া গ্রামের নানা হাচন চৌকিদার বাড়ীতে তৃতীয় জানাজা শেষে নানা ও মায়ের কবরের পাশে রাজীবের লাশ দাফন করা হয়।

৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন (২১)। হাতটি বেরিয়ে ছিল সামান্য বাইরে। হঠাৎ করেই পেছন থেকে একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে পেরিয়ে যাওয়ার বা ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে পড়ে। দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দু-তিনজন পথচারী দ্রুত তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান।

বিজ্ঞাপন

পরে শমরিতা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন সে হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি।

তার ডান হাত হারিয়ে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ দেখা দিলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া হয়। তবুও বাচাঁনো যায়নি রাজীবকে। দীর্ঘ ১৪ দিন পর ডাক্তারদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ১৬ এপ্রিল রাতে ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজীব সব মায়া ত্যাগ করে চলে যান না ফেরার দেশে।

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় রাজীব মা আকলিমা খানমকে হারান। বাবা শোকে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েন। ছিলেন নিরুদ্দেশ। রাজীব ও তার ছোট দুই ভাই পটুয়াখালীর বাউফলে নানার বাড়িতে ছিলেন। পরে ঢাকায় এসে পোস্ট অফিস হাইস্কুলে ভর্তি হন। খালার বাড়ি থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর রাজীব যাত্রাবাড়ীর মেসে গিয়ে ওঠেন। জীবিকার তাগিদে রাজীব কম্পিউটার কম্পোজ ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখেছিলেন।

সারাবাংলা/টিএম/এমএস

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

রাজীবকে বাঁচানো গেল না

রাজিবকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয় : হাইকোর্ট
রাজিবের দুর্ঘটনায় দুই বাসের চালক গ্রেফতার
রাজীবকে ডিএমসিএইচে নেওয়া হয়েছে
রাজীব জানে না তার হাত নেই!
রাজীবের চিকিৎসায় ৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড
রাজীবের হাতের ক্ষত অনেকটাই শুকিয়েছে
রাজীবের হাত কাটা পড়ার ঘটনায় দুই বাস চালক রিমান্ডে
রাজীবের হাত কাটা পড়ার ঘটনায় দুই বাস চালক কারাগারে

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন