বিজ্ঞাপন

নিমেষেই আইএমইআই বদলে চোরাই সেট হয়ে যাচ্ছে নতুন সেট

October 23, 2018 | 10:06 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মানুষের চুরি হওয়া মোবাইল হ্যান্ডসেটের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) নম্বর বদলে ফেলা হচ্ছে পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যেই। একটিমাত্র ডিভাইসের মাধ্যমেই নিমেষে বদলে যাচ্ছে এমন শত শত চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর। আর সেগুলোই নতুন সেট হিসেবে চলে আসছে বাজারে। এমনকি, ওইসব চোরাই হ্যান্ডসেটের ক্যাচিংসহ অন্যান্য বাহ্যিক যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করে সরবরাহ করা হয়ে থাকে বড় বড় দোকানগুলোতেও।

জানা গেছে, এসব মোবাইল কিনে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়া এসব মোবাইল দিয়েই জঙ্গি তৎপরতা, চাঁদাবাজি, হুমকি, সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করা হচ্ছে। এমনকি অনেক সময় শনাক্ত করা গেলেও পরিবর্তিত আইএমইআই নম্বরের কারণে প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

মোবাইলের আইএমইআই নম্বর বদলে প্রতারণাকারী এমন একটি চক্রের ১৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩-এর সিও (কমান্ডিং অফিসার) লে. কর্নেল এমরানুল হাসান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাবের সিও বলেন, কিছুদিন আগে একজন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করার পর জানা যায়, তার মোবাইলের কাগজপত্রের সঙ্গে প্রকৃত আইএমইআই নম্বরের কোনো মিল নেই। এরপরই জানা যায়, গুলিস্তান এলাকায় একটি চক্র মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিভিন্ন অপরাধীদের কাছে সরবরাহ করে থাকে। অনেক সাধারণ মানুষও না বুঝেই এসব সেট কিনে থাকে।

সিও বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গুলিস্তান এলাকার মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে সোমবার (২২ অক্টোবর) আলী স্পোর্টস, সিমলা ইলেকট্রনিক্স, সাকিব ইলেকট্রনিক্স, আজমেরি ইলেকট্রনিক্স, আবির ইলেকট্রনিক্স, সুমাইয়া টেলিকম, ইলেকট্রনিক্স কর্নার, আল আমিন ইলেকট্রনিক্স, রহমত ইলেকট্রনিক্স ও সিটি ইলেকট্রনিক্স দোকানে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৫৩১টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ১৫ জন হলেন— মোতালেব (২৬), রিপন (৩৭), মান্নান (৩৯), রাশেদ খান (২৪), আনিস মোল্লা (২৮), জাহিদুল ইসলাম (২১), পলক (১৯), রাশেদুল ইসলাম (২১), নাঈম সর্দার (১৮), স্বপন (২৬), রানা হামিদ (২২), মাসুদ রানা (২৪), নাজিম (২৬) ও কামাল হোসেন (১৭)। এদের মধ্যে মোতালেব, মান্নান ও রিপন দোকানের মালিক, বাকিরা সবাই বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী।

র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক এমরানুল হাসান বলেন, রাজধানীতে চুরি হওয়া ফোনগুলো প্রথম একটি মাধ্যমে চলে আসে। সেখান থেকে ওইসব ফোন এই চক্রের হাতে চলে আসে। সেখানে ক্যাচিংসহ পরিবর্তন করার পাশাপাশি ফ্যালকন, সিগমা, জেথ থ্রি, জেকেএফ নামের বিদেশি ফ্ল্যাশার ডিভাইস ব্যবহার করে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে নতুন করে তোলা হয়।

তিনি বলেন, বদলে ফেলার পর দেখলে সহজে কেউ বুঝতেই পারবে না যে এগুলো পুরনো ফোন। তারা একটি ডিভাইসের মাধ্যমে ফোনগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে। এরপর অন্য আরেকটি মাধ্যমে ফোনগুলো বিক্রি করা হয়। এমনকি অনেক বড় বড় মার্কেটেও এসব ফোন বিক্রি হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে এমরানুল হাসান বলেন, এই ১৫ জনের সঙ্গে আরও কারা জড়িত, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অপরাধীদের সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

বিজ্ঞাপন

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিও বলেন, সামনে নির্বাচন। তাই এসব মোবাইল ফোন দিয়ে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করতে পারে। সেদিকেও নজরদারি করা হচ্ছে, যেন কেউ এসব মোবাইল ফোন সেট দিয়ে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে। এমনকি যেখানে যেখানে এসব মোবাইল সেট সরবরাহ করা হয়েছে, সেখান থেকেও ওইসব সেট উদ্ধার করার চেষ্টা করা হবে। এখন পর্যন্ত এই চক্রটি আইফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতে পারেনি বলে র‌্যাবকে জানিয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন